প্রশ্ন
নাম -প্রকাশে অনিচ্ছুক৷ ময়মনসিংহ হতে
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ
বাদ সালাম!
হযরত আমি একজন মাদরাসার মেশকাত জামাতের ছাত্রী। হঠাৎ করে একটি দুর্ঘটনার স্বীকার হয়েছি। আমার বিয়ে হয় আলিয়ার কামেল পাশ পড়ুয়া একজনের সাথে বর্তমানে সে ব্যাবসারত অবস্থায় আছেন। আমাদের ভিতরে কোন মিল নাই তার কোন কিছুই আমার পছন্দ নয়। সে শারীরিক অসুস্থ (নামরদ)।
বিয়ে হয়েছে ২৮-০৮-২০ আমি ছেলের বাড়িতে ছিলাম পনের দিন। তার সাথে ছিলাম পাঁচ দিন। এরই মধ্যে সে আমার সাথে অনেক রাগারাগি করেছে আমি তাকে কিছু বললে সে রাগারাগি করত এবং বলত বউ চলে গেলে বউ পাব কাস্টমার চলে গেলে কাস্টমার পাব না।
বিয়ের পর আমাকে কোন কাপড় কিনে দেয়নি। কাপড়ের কথা বললে বলত আমার ঘরে থাকলে পুরাতন কাপড় পরেই থাকতে হবে অর্থাৎ আমার প্রতি তার কোন খেয়াল নেই।
এবং এটাও বলেছে সে আমাকে বিয়ে করেনি জোর করে তার সাথে বিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এমন কথা ৩ দিন বলেছে। সে শরিয়তের পর্দা সম্পর্কে সচেতন নয়। আমাকে তার বোনের স্বামিদের সামনে যেতে বলেছে।
আমি না করাতে আমাকে তাদের সাথে কথা বলতে বাধ্য করেছে। আর সে একজন বেয়াদব টাইপের মানুষ। আর তার না মরদের কারনে তাকে কোন সুযোগ বা সময় দেয়নি। কারন উপরের উল্লেখিত কারনে তার সাথে ঘর করতে রাজি নই।
আমার ফ্যামেলির সবাই তাকে বলেছে আমাকে তালাক দিতে মহর দেওয়া লাগবেনা কিন্তু সে বলেছে আমি ডিবোর্স দিবনা, সরকার তোমাদের (মেয়েদেরকে) অধিকার দিয়েছে তুমি দিয়ে দাও এমন একবার নয় ৪ বার বলেছে।
এখন আমার কথা হল উপরোক্ত কারনে আমি কি তাকে (আমার স্বামিকে) তালাক দিতে পারব কি না? বা অন্য কোন উপায় আছে কি না কুরআন ও হাদিসের আলোকে শরিয়তের সঠিক বিধিবিধান জানাবেন। যাজাকাল্লাহ
বিঃ দ্রঃ কাবিন নামার ফটো এটাস করে দিলাম মেইলে।
উত্তর
وعليكم السلام رحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
আপনার কাবিননামা অনুপাতে বনিবনা না হলে বা খোরপোষ না দিলে আপনি নিজের উপর তালাক পতিত করার অধিকার স্বামী কর্তৃক প্রদান করা হয়েছে।
সেই হিসেবে আপনি নিজের উপর তালাক পতিত করে নিতে পারবেন।
তাছাড়া স্বামীর সাথে মোহর মাফ করে দেবার শর্তে খোলা তালাকও নিয়ে নিতে পারবেন।
وَإِنِ امْرَأَةٌ خَافَتْ مِن بَعْلِهَا نُشُوزًا أَوْ إِعْرَاضًا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَن يُصْلِحَا بَيْنَهُمَا صُلْحًا ۚ وَالصُّلْحُ خَيْرٌ ۗ وَأُحْضِرَتِ الْأَنفُسُ الشُّحَّ ۚ وَإِن تُحْسِنُوا وَتَتَّقُوا فَإِنَّ اللَّهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًا [٤:١٢٨]
যদি কোন নারী স্বীয় স্বামীর পক্ষ থেকে অসদাচরণ কিংবা উপেক্ষার আশংকা করে, তবে পরস্পর কোন মীমাংসা করে নিলে তাদের উভয়ের কোন গোনাহ নাই। মীমাংসা উত্তম। মনের সামনে লোভ বিদ্যমান আছে। যদি তোমরা উত্তম কাজ কর এবং খোদাভীরু হও, তবে, আল্লাহ তোমাদের সব কাজের খবর রাখেন। [সূরা নিসা-১২৭]
وفي رد المحتار- وأنواعه ثلاثة : تفويض ، وتوكيل ، ورسالة وألفاظ التفويض ثلاثة : تخيير وأمر بيد ، ومشيئة .
( قال لها اختاري أو أمرك بيدك ينوي ) تفويض ( الطلاق ) لأنها كناية فلا يعملان بلا نية ( أو طلقي نفسك فلها أن تطلق في مجلس علمها به ) مشافهة أو إخبارا ( وإن طال ) يوما أو أكثر ما لم يوقته ويمضي الوقت قبل علمها ( ما لم تقم ) لتبدل مجلسها حقيقة ( أو ) حكما بأن ( تعمل ما يقطعه ) مما يدل على الإعراض لأنه تمليك فيتوقف على قبول في المجلس لا توكيل ، فلم يصح رجوعه ، حتى لو خيرها ثم حلف أن لا يطلقها فطلقت لم يحنث في الأصح ( لا ) تطلق ( بعده ) أي المجلس ( إلا إذا زاد ) في قوله طلقي نفسك وأخواته ( متى شئت أو متى ما شئت أو إذا شئت أو إذا ما شئت ) فلا يتقيد بالمجلس ( ولم يصح رجوعه ) لما مر (رد المحتار-كتاب الطلاق، باب تفويض الطلاق-4/452
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক ও প্রধান মুফতী-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
ইমেইল– [email protected]