প্রচ্ছদ / প্রশ্নোত্তর / স্বামী বা স্ত্রী মারা গেলে তাদের দুই কন্যা কতটুকু সম্পদ পাবে?

স্বামী বা স্ত্রী মারা গেলে তাদের দুই কন্যা কতটুকু সম্পদ পাবে?

প্রশ্ন

আস্ সালামো আলাইকুম,

আমি ভীষণ সংকটের মধ্যে আছি।
আমার 2 কন্যা,
আব্বা মা ইন্তেকাল করেছেন,
১-বোন বিবাহিতা,
ভাই নেই,
(অবশ্য চাচাতো ভাই 8জন,বোন৭ জন আছে)
—– এ অবস্হায় আমার বা আমার স্ত্রীর ইন্তেকাল হলে আমাদের উভয়ের সম্পদের মীরাছ বন্টন কিভাবে হবে??

স্ত্রীর দিক থেকেঃ- ৪ ভাই, ২ বোন।

আমার আত্মীয়রা কিন্তু আমার কন্যাদের দায়িত্ব নেবে না কারণ তাদের সাথে আমাদের উভয়ের সম্পর্ক ভালো নয়।
পৈতৃক সম্পত্তি কিছু নেই, সবই আমার বা স্ত্রীর নিজস্ব) ।
দুজনের যে কেউ আগে মারা গেলে মীরাছ বন্টন কিভাবে হবে?
আমরা দুজনে ইচ্ছা করলে কি আমাদের উভয়ের সম্পদ ২ মেয়ের নামে উইল করে দিতে পারি? কারণ তাদের দেখভাল করতে আত্মীয়রা কিন্তু আসবে না ।
তাড়াতাড়ি দুভাবে উত্তর পেলে খুবই উপকৃত হব।
আমি আপনার জন্য দোওয়া করছি।
প্লীজ ই -মেইলে উত্তর দেবেন।
সাহাবুদ্দিন।
কোলকাতা ।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

আপনারা স্বামী এবং স্ত্রী উভয়ে জীবদ্দশায় সুস্থ্য থাকা অবস্থায় আপনাদের যাবতীয় সম্পদ আপনাদের দুই কন্যার নামে লিখে যেতে পারেন।

এতে শরয়ী বা রাষ্ট্রীয় কোন বিধিনিষেধ নেই।

وفى الهندية- ولو وهب رجل شيئا لأولاده في الصحة وأراد تفضيل البعض على البعض في ذلك لا رواية لهذا في الأصل عن أصحابنا، وروي عن أبي حنيفة – رحمه الله تعالى – أنه لا بأس به إذا كان التفضيل لزيادة فضل له في الدين، وإن كانا سواء يكره وروى المعلى عن أبي يوسف – رحمه الله تعالى – أنه لا بأس به إذا لم يقصد به الإضرار، وإن قصد به الإضرار سوى بينهم يعطي الابنة مثل ما يعطي للابن وعليه الفتوى هكذا في فتاوى قاضي خان وهو المختار، – (الفتاوى الهندية، كتاب الهبة، الباب السادس في الهبة للصغير ٤/٣۹۱، رد المحتار-12/608)

فى البيضاوى- والمالك هو المتصرف فى الأعيان  المملوكة كيف شاء الخ (تفسير بيضاوى، سورة الفاتحة- 1/7)

বস্তুর মালিক বস্তুতে যেভাবে ইচ্ছে হস্তক্ষেপ করেতে পারে। {তাফসীরে বায়যাবী-১/৭}

আর যদি দুই কন্যার নামে সমুদয় সম্পদ লিখে না যান। তাহলে যার মৃত্যু হবে, তার মৃত্যুর সময় যারা জীবিত থাকবে, তাদের শরয়ী বন্টন নীতি অনুপাতে সম্পদ দেয়া হবে।

ক)

আপনার স্ত্রী যদি আগে মৃত্যুবরণ করে। আর জীবিত থাকেন আপনি, আপনার দুই কন্যা, স্ত্রীর ৪ ভাই এবং দুই বোন।

তাহলে এক্ষেত্রে আপনার স্ত্রীর রেখে সমুদয় ত্যাজ্য সম্পদ ১২ ভাগে ভাগ করে এর মাঝের ৩ ভাগ পাবেন আপনি স্বামী হিসেবে। আর ৮ ভাগ পাবে কন্যারা।

বাকি ১ ভাগ স্ত্রীর ৪ভাই এবং ২ বোনের মাঝে দুই বোন সমান এক ভাই হিসেবে সম্পদ বন্টন করে দিতে হবে।

وَلَكُمْ نِصْفُ مَا تَرَكَ أَزْوَاجُكُمْ إِن لَّمْ يَكُن لَّهُنَّ وَلَدٌ ۚ فَإِن كَانَ لَهُنَّ وَلَدٌ فَلَكُمُ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَكْنَ ۚ [٤:١٢]

আর, তোমাদের হবে অর্ধেক সম্পত্তি, যা ছেড়ে যায় তোমাদের স্ত্রীরা যদি তাদের কোন সন্তান না থাকে। যদি তাদের সন্তান থাকে, তবে তোমাদের হবে এক-চতুর্থাংশ ঐ সম্পত্তির, [সূরা নিসা-১২]

فَإِن كُنَّ نِسَاءً فَوْقَ اثْنَتَيْنِ فَلَهُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَكَ ۖ [٤:١١]

অতঃপর যদি শুধু নারীই হয় দু’ এর অধিক, তবে তাদের জন্যে ঐ মালের তিন ভাগের দুই ভাগ যা ত্যাগ করে মরে। [সূরা নিসা-১১]

وَإِن كَانُوا إِخْوَةً رِّجَالًا وَنِسَاءً فَلِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الْأُنثَيَيْنِ  [٤:١٧٦]

পক্ষান্তরে যদি ভাই ও বোন উভয়ই থাকে, তবে একজন পুরুষের অংশ দুজন নারীর সমান। [সূরা নিসা-১৭৬]

খ)

যদি আপনি আগে মৃত্যুবরণ করেন। তাহলে আপনার সমুদয় সম্পদকে ২৪ ভাগে ভাগ করা হবে। সেখান থেকে আপনার স্ত্রী পাবে ৩ ভাগ। আপনার দুই কন্যা পাবে ১৬ ভাগ। আর বাকি ৫ ভাগ পাবে আপনার ৮ চাচাতো ভাই এবং ৭ চাচাতো বোনেরা।

وَلَهُنَّ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَكْتُمْ إِن لَّمْ يَكُن لَّكُمْ وَلَدٌ ۚ فَإِن كَانَ لَكُمْ وَلَدٌ فَلَهُنَّ الثُّمُنُ مِمَّا تَرَكْتُم ۚ [٤:١٢]

স্ত্রীদের জন্যে এক-চতুর্থাংশ হবে ঐ সম্পত্তির, যা তোমরা ছেড়ে যাও যদি তোমাদের কোন সন্তান না থাকে। আর যদি তোমাদের সন্তান থাকে, তবে তাদের জন্যে হবে ঐ সম্পত্তির আট ভাগের এক ভাগ। [সূরা নিসা-১২]

فَإِن كُنَّ نِسَاءً فَوْقَ اثْنَتَيْنِ فَلَهُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَكَ ۖ [٤:١١]

অতঃপর যদি শুধু নারীই হয় দু’ এর অধিক, তবে তাদের জন্যে ঐ মালের তিন ভাগের দুই ভাগ যা ত্যাগ করে মরে। [সূরা নিসা-১১]

وَإِن كَانُوا إِخْوَةً رِّجَالًا وَنِسَاءً فَلِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الْأُنثَيَيْنِ  [٤:١٧٦]

পক্ষান্তরে যদি ভাই ও বোন উভয়ই থাকে, তবে একজন পুরুষের অংশ দুজন নারীর সমান। [সূরা নিসা-১৭৬]

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক ও প্রধান মুফতী-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *