প্রচ্ছদ / অপরাধ ও গোনাহ / হিন্দুদের পূজা উদ্বোধন করলে ঈমান থাকে কি?

হিন্দুদের পূজা উদ্বোধন করলে ঈমান থাকে কি?

প্রশ্ন

মুফতী সাহেবের কাছে আমার প্রশ্ন হল, হিন্দুদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান যেমন শ্যামাপূজা, কালিপূজা ইত্যাদি উদ্বোধন করার জন্য কোন মুসলমানের গমণ করার হুকুম কী?

এ বিষয়ে সঠিক রাহনূমায়ী করার জন্য অনুরোধ করছি।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

বিধর্মীদের ধর্মীয় উৎসবে গমণ করা মুসলমানদের জন্য সম্পূর্ণরূপে হারাম। হাদীসে এ বিষয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে।

তবে যদি শিরকী কাজকে সঠিক ও যথার্থ মনে না করে এমনিতে সৌজন্যতা রক্ষার্থে গমণ করে থাকে, তাহলে তাকে কাফের বলা যাবে না। যদি তার অন্তর ঈমান ও ইসলামের প্রতি পূর্ণ আনুগত্বশীল থাকে।

তবে তা কুফরীর দরজায় পৌঁছে যাবার মত পাপ।

তাই এহেন জঘন্য কাজ করা থেকে নিজেকে বিরত রাখা জরুরী।

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢]

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। [সূরা মায়িদা-২]

يأمر الله تعالى عباده المؤمنين بالمعاونة على فعل الخيرات وهو البر، وترك المنكرات، وهو التقوى، وينهاهم عن التناصر على الباطل والتعاون على المآثم والمحارم (تفسير ابن كثير، سورة المائدة، آيت-2، زكريا-2/453)

عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ»

হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি যে গোষ্ঠির সাদৃশ্য গ্রহণ করে, সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত হবে। [সুনানে আবূ দাউদ, হাদীস নং-৪০৩১]

عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ زِيَادِ بْنِ أَنْعُمٍ، أَنَّ أَبَا ذَرٍّ الْغِفَارِيَّ، دُعِيَ إِلَى وَلِيمَةٍ فَلَمَّا حَضَرَ إِذَا هُوَ بِصَوْتٍ فَرَجَعَ فَقِيلَ لَهُ: أَلَا تَدْخُلُ؟ فَقَالَ: «أَسْمَعُ فِيهِ صَوْتًا، وَمَنْ كَثَّرَ سَوَادًا كَانَ مِنْ أَهْلِهِ، وَمَنْ رَضِيَ عَمَلًا كَانَ شَرِيكَ مَنْ عَمِلَهُ»

আব্দুর রহমান বিন যিয়াদ বিন আনউম থেকে থেকে বর্ণিত। আবূ যর গিফারী রাঃ কে একটি ওলীমায় দাওয়াত করা হয়। যখন তিনি সেখানে উপস্থিত হন তখন তিনি (গানবাদ্যের) আওয়াজ শুনতে পান। তখন তিনি সেখান থেকে ফেরত চলে যান। এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হল, আপনি কি প্রবেশ করবেন না? উত্তরে বললেন, আমি এখানে (গানবাদ্যের) আওয়াজ শুনেছি। আর যে ব্যক্তি কোন দলের সংখ্যা বৃদ্ধি করে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হয়। আর যে ব্যক্তি কোন কাজের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে সেও উক্ত কাজে শরীক হয়ে যায়। [আযুহদ ওয়ার রাকায়েক, ইবনে মুবারককৃত-২/১২, নসবূর রায়াহ-৪/৩৪৬-৩৪৭, শরুহুস সুন্নাহ লিলবাগাবী-৯/১৪৯

من كثر سواد قوم فهو منهم، ومن رضي عمل قوم كان شريكا في عمله”. “الديلمي عن ابن مسعود”

ইবনে মাসঈদ রাঃ থেকে বর্ণিত। যে ব্যক্তি কোন গোষ্ঠির সংখ্যা বৃদ্ধি করে সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত হবে। আর যে ব্যক্তি কোন গোষ্ঠির কর্মকে সমর্থন করে সে তাদের কাজের সাথে শরীক সাব্যস্ত হবে। [কানযুল উম্মাল-৯/২২, বর্ণনা নং-২৪৭৩৫, নসবুর রায়াহ-৪/৩৪৬]

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক ও প্রধান মুফতী-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *