প্রশ্ন
From: hasnayen
বিষয়ঃ মায়ের সাথে ঘুমানো কি গুনাহ?
প্রশ্নঃ
আমার বাবা মায়ের সম্পর্ক ভালো না। তাই তারা একসাথে ঘুমায় না। আমি আমার মায়ের সাথে ছোটবেলা থেকে একসাথে ঘুমাই। এটা কি গুনাহ। বিস্তারিত জানতে চাই।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
হাদীসের ভাষ্য অনুপাতে সন্তানের বয়স দশ বছর হলে সেই সন্তানকে পৃথক বিছানায় বা আলাদা করে শুয়ানো আবশ্যক। একসাথে থাকা যাবে না।
যদিও বাবার সাথে ছেলের এবং মায়ের সাথে মেয়ের শোয়ার অবকাশ আছে। তবে এক্ষেত্রেও আলাদা থাকার সুযোগ থাকা অবস্থায় এমনটি করা উচিত নয়।
তবে কিছু বর্ণনায় সাত বছরের কথাও এসেছে।
সেই হিসেবে সাত বছর বয়স হলেই বিছানা পৃথক করা সতর্কতা। তবে সর্বোচ্চ দশ বছর পর্যন্ত সুযোগ আছে। দশ বছর হয়ে গেলে বিছানা পৃথক করা ওয়াজিব। সামর্থ থাকার পরেও তা না করলে গোনাহ হবে।
عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مُرُوا أَوْلَادَكُمْ بِالصَّلَاةِ وَهُمْ أَبْنَاءُ سَبْعِ سِنِينَ، وَاضْرِبُوهُمْ عَلَيْهَا، وَهُمْ أَبْنَاءُ عَشْرٍ وَفَرِّقُوا بَيْنَهُمْ فِي الْمَضَاجِعِ»
‘আমর ইবনু শু‘আইব (রহঃ) থেকে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের সন্তানদের বয়স সাত বছর হলে তাদেরকে সলাতের জন্য নির্দেশ দাও। যখন তাদের বয়স দশ বছর হয়ে যাবে তখন (সলাত আদায় না করলে) এজন্য তাদেরকে মারবে এবং তাদের ঘুমের বিছানা আলাদা করে দিবে। [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪৯৫, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৬৬৮৯, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৮৮৮]
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ” لَا يَنْظُرِ الرَّجُلُ إِلَى عَوْرَةِ الرَّجُلِ، وَلَا تَنْظُرِ الْمَرْأَةُ إِلَى عَوْرَةِ الْمَرْأَةِ، وَلَا يُفْضِ الرَّجُلُ إِلَى الرَّجُلِ فِي الثَّوْبِ، وَلَا تُفْضِ الْمَرْأَةُ إِلَى الْمَرْأَةِ فِي الثَّوْبِ
হযরত আব্দুর রহমান বিন আবী সাঈদ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, এক পুরুষ অন্য পুরুষের সতরের দিকে দৃষ্টি দিবে না, এক নারী অন্য নারীর সতর দেখবে না। এক পুরুষ অন্য পুরুষের সাথে একই চাদরের নিচে শুবে না এবং এক নারী অন্য নারীর সাথে একই কাপড়ের নিচে শুবে না। [মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১১৬০১]
عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ الرَّبِيعِ بْنِ سَبْرَةَ , عَنْ أَبِيهِ , عَنْ جَدِّهِ , رَفَعَهُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا بَلَغَ أَوْلَادُكُمْ سَبْعَ سِنِينَ فَفَرِّقُوا بَيْنَ فُرُشِهِمْ
আব্দুল মালিক বিন রাবী বিন সাবরাহ পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্রে বর্ণনা করেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে, যখন সন্তানের বয়স সাত বছর হয়, তখন তার বিছানা আলাদা করে দাও। [সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৮৮৬, মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন, হাদীস নং-৭২১]
(وَلَا يَجُوزُ لِلرَّجُلِ مُضَاجَعَةُ الرَّجُلِ وَإِنْ كَانَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا فِي جَانِبٍ مِنْ الْفِرَاشِ) قَالَ – عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ – «لَا يُفْضِي الرَّجُلُ إلَى الرَّجُلِ فِي ثَوْبٍ وَاحِدٍ وَلَا تُفْضِي الْمَرْأَةُ إلَى الْمَرْأَةِ فِي الثَّوْبِ الْوَاحِدِ» وَإِذَا بَلَغَ الصَّبِيُّ أَوْ الصَّبِيَّةُ عَشْرَ سِنِينَ يَجِبُ التَّفْرِيقُ بَيْنَهُمَا بَيْنَ أَخِيهِ وَأُخْتِهِ وَأُمِّهِ وَأَبِيهِ فِي الْمَضْجَعِ لِقَوْلِهِ – عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ – «وَفَرِّقُوا بَيْنَهُمْ فِي الْمَضَاجِعِ وَهُمْ أَبْنَاءُ عَشْرٍ» (الد المختار مع رد المحتار-3/382
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক ও প্রধান মুফতী – মা’হাদুত তালীম ওয়াল বুহুসিল ইসলামিয়া ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম আমীনবাজার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ফারূকিয়া দক্ষিণ বনশ্রী ঢাকা।