প্রশ্ন:
From: মোঃ মাহমুদুল হাসান
Subject: Islamic dol ar boisisto
Country : Dhaka
Mobile : 01738146764
Message Body:
আমরা জানি যে কিয়ামতের পূর্বে আমাদের ধর্মে 73টি দলের আবির্ভাব হবে। তার মধ্যে একটি দল জান্নাতি হবে। কোন বৈশিষ্ট দেখে আমরা জান্নাতি দল বেছে নিতে পারব।
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
عن عبد الله بن عمرو قال : قال رسول الله صلى الله عليه و سلم ليأتين على أمتي ما أتى على بني إسرائيل حذو النعل بالنعل حتى إن كان منهم من أتى أمه علانية لكان في أمتي من يصنع ذلك وإن بني إسرائيل تفرقت على ثنتين وسبعين ملة وتفترق أمتي على ثلاث وسبعين ملة كلهم في النار إلا ملة واحدة قالوا ومن هي يا رسول الله قال ما أنا عليه وأصحابي (سنن الترمذى-كتاب الايمان، باب ما جاء في افتراق الأمة، رقم الحديث-2641
অর্থ-হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-আমার উম্মত তা’ই করবে যা করেছে বনী ইসরাঈলের লোকেরা। এক জুতা অপর জুতার সমান হওয়ার মত। এমনকি যদি ওদের মাঝে কেউ মায়ের সাথে প্রকাশ্যে জিনা করে থাকে, তাহলে এই উম্মতের মাঝেও এরকম ব্যক্তি হবে যে একাজটি করবে। আর নিশ্চয় বনী ইসরাঈল ছিল ৭২ দলে বিভক্ত। আর আমার উম্মত হবে ৭৩ দলে বিভক্ত। এই সব দলই হবে জাহান্নামী একটি দল ছাড়া। সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞেস করলেন-সেই দলটি কারা? নবীজী সাঃ বললেন-যারা আমার ও আমার সাহাবাদের মত ও পথ অনুসরণ করবে। {সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-২৬৪১, আল মু’জামুল কাবীর, হাদীস নং-৭৬৫৯, আল মু’জামুল আওসাত, হাদীস নং-৪৮৮৯, কানযুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল আফআল, হাদীস নং-১০৬০}
বনী ইসরাঈলের মাঝে ছিল ৭২ ফিরক্বা। এর মাঝে ১টি ফিরক্বা ছিল জান্নাতী। আর ৭১ টি ফিরক্বা ছিল জাহান্নামী।
আর এই উম্মতের মাঝে হবে ৭৩টি ফিরক্বা। এর মাঝে ১টি ফিরক্বা হবে জান্নাতী আর ৭২টি ফিরক্বা হল জাহান্নামী।
নবী কারীম সাঃ ইরশাদ করেছেন-পূর্বের উম্মত যাই করেছে এই উম্মতও তাই করবে নাফরমানীর দিক থেকে। তথা ওরা যত পদ্ধতিতে নাফরমানী করেছে এই উম্মতও সেই পদ্ধতীতে নাফরমানী করবে। সুতরাং আল্লাহ তায়ালার নাফরমানী করার ৭১টি পদ্ধতিওয়ালা বাতিল ফিরক্বা পূর্ব উম্মত থেকে গ্রহণ করবে এই উম্মত। তথা ৭১টি বাতিল ফিরক্বার মত ও পথ পূর্ব উম্মতের মত এই উম্মতেও থাকবে।
আর জান্নাতী ছিল পূর্ব উম্মতের ৭২ ফিরক্বার মাঝে একটি ফিরক্বা। সেটিও এই উম্মতে পূর্ব পদ্ধতি অনুযায়ী থাকবে। শুধু বাড়বে একটি বাতিল ফিরক্বা এই উম্মতে। যেই বাতিল ফিরক্বার কোন নজীর পূর্ব উম্মতের মাঝে ছিল না। সেই বর্ধিত বাতিল ফিরক্বাটি কারা? আল্লামা কুরতুবী রহঃ তার প্রণীত তাফসীরে কুরতুবীতে লিখেন-
. وقد قال بعض العلماء العارفين : هذه الفرقة التي زادت في فرق أمة محمد صلى الله عليه وسلم هم قوم يعادون العلماء ويبغضون الفقهاء ، ولم يكن ذلك قط في الأمم السالفة.( الجامع لأحكام القرآن
المؤلف : أبو عبد الله محمد بن أحمد بن أبي بكر بن فرح الأنصاري الخزرجي شمس الدين القرطبي (المتوفى : 671)
যেই ফিরক্বাটি উম্মতে মুহাম্মদীদে বাড়বে তারা হল-ওলামাদের সাথে শত্রুতা করবে, আর ফুক্বাহাদের প্রতি রাখবে বিদ্বেষ। এই গ্রপটি পূর্ব উম্মতের মাঝে ছিল না। {তাফসীরে কুরতুবী, তাফসীর সূরাতুল আনআম}
এই উম্মতের মাঝে বর্ধিত বাতিল ফিরক্বাটি হল ফিক্বহ ও ফুক্বাহাদের দুশমন, তথা ইজতিহাদ ও মুজতাহিদদের দুশমন দল। কারণ পূর্ব উম্মতের মাঝে কেবল নবীর আনীত দ্বীনের উপর আমল করতে হত, নতুন করে নীতিমালার আলোকে কোন উদ্ভাবন করার কোন সুযোগ ছিল না। যেহেতু ইজতিহাদই ছিল না, তাই ইজতিহাদ ও মুজতাহিদ তথা ফিক্বহ ও ফক্বীহ অস্বিকারকারী কোন বাতিল ফিরক্বাও ছিল না। আর এই উম্মতে যেহেতু ফিক্বহ ও ফক্বীহ আছে, তথা ইজতিহাদ ও মুজতাহিদ আছে, তাই এর দুশমন ও আছে। এই উম্মতের বর্ধিত সেই বাতিল ফিরক্বাটি হল ফিক্বহ ও ফক্বীহদের সমালোচনাকারী, ইজতিহাদ ও মুজতাহিদীনদের দুশমন দল। ফিক্বহে হানাফী, ফিক্বহে শাফেয়ী, ফিক্বহে মালেকী, ফিক্বহে হাম্বলী অস্বিকারকারী দল হল এই উম্মতের বর্ধিত বাতিল ফিরক্বা।
মুরজিয়া, কাদরিয়া, জাবরিয়া, শিয়া, কাদিয়ানী, বেদআতি ইত্যাদী বাতিল ফিরক্বা এই উম্মতের বর্ধিত বাতিল ফিরক্বা নয়। পূর্ব থেকেই এই সব দলের নজীর আছে। কিন্তু ফক্বীহদের দুশমন বাতিল ফিরক্বার নজীর পূর্ব থেকে নেই। যেহেতু পূর্বে ফিক্বহ ও ফক্বীহই ছিল না।
নাজাতপ্রাপ্ত দল কারা?
নাজাতপ্রাপ্ত দল কারা? হাদীসে রাসূল সাঃ স্পষ্টতই সেই নাজাতপ্রাপ্ত দলের পরিচয় দিয়ে দিয়েছেন। নাজাতপ্রাপ্ত হল সেই দল-যারা নবীজী সাঃ এর সুন্নাত ও সাহাবায়ে কিরামের জামাতের মত ও পথের অনুসারী। এক কথায় যারা সুন্নাতধারী, সেই সাথে সাহাবাদের মত ও পথের অনুসারী। যাকে আমরা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত বলে থাকি।
নাজাতপ্রাপ্ত দল আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত কোন রেজিষ্ট্রিকৃত দলের নাম নয়, এটি একটি আদর্শের নাম। যারা নবীজী সাঃ এর সু্ন্নাত আঁকড়ে থাকবে, সেই সাথে সাহাবাদের মত ও পথের অনুসারী হবে তারাই হবে জান্নাতী দল আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত।
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
বিষয়টি অত্যান্ত জুরুরী এবং বর্তমান যুগ উপযুগি, বিষয়টি পড়ে অনেক উপকৃত হলাম ধন্যবাদ আপনাকে এমন ইসলামিক পোষ্ট করার জন্য,,