আল্লামা মনজূর নোমানী রহঃ
আমাদের এবং সমগ্র বিশ্বজগতের মহান কোনো সৃষ্টিকর্তা আছেন এবং তিনিই আপন কুদরতে সবকিছু পরিচালনা করছেন এ-বিশ্বাসটুকুর উপর সকল দ্বীন ও ধর্মের মূল ভিত্তি। যদি কেউ এটুকু মানতে প্রস্তুত না হয়, তাহলে দ্বীন-ধর্মের সব কথাই তার কাছে পাগলের প্রলাপ কিংবা সেকেলে মানুষের অলীক কল্পনা বলে মনে হবে।
যাইহোক আল্লাহর অস্তিত্ব ও বিদ্যমানতা প্রত্যেক ধর্মের মৌলিকতম বিষয়। কোনো ধর্মের প্রতি তাকেই আহ্বান করা যায় যে প্রথমে এ মৌলিক কথাটুকু মেনে নেয়। আর বাস্তবতা হলো, আল্লাহর বিদ্যমানতার অনুভব ও জ্ঞান মানুষের স্বভাব-নিহিত। এজন্য মানুষ নিজের অস্তিত্বের মতোই আল্লাহর অস্তিত্বকে বিশ্বাস করে। দলিল প্রমাণের অপেক্ষা করে না। আর তাই মহাকালের সব মানুষ আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাসী ছিলো। এমনকি নাস্তিকতা ও প্রকৃতিবাদের এ যুগেও ব্যতিক্রম ছাড়া পৃথিবীর প্রায় সব মানুষই আল্লাহর বিদ্যমানতায় বিশ্বাস করে।
বিষয়টি খুব স্পষ্ট হওয়ার কারণে এ নিয়ে কোরআন মাজীদে সরাসরি আলোচনা কম করা হয়েছে। তবে বিভিন্ন জায়গায় ইশারা ইঙ্গিতে যতটুকু দলিল প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে, তাও একজন সাধারণ মানের আকলমন্দের জন্য যথেষ্ট।
তবে হ্যাঁ, কোরআন দলিল উপস্থাপনের ক্ষেত্রে দার্শনিক যুক্তিতর্কের অবতারণা করেনি। কারণ এর মাধ্যমে শ্রোতাকে লা-জবাব করা যায় কিন্তু তার অন্তরে বিশ্বাসের সুবাতাস প্রবাহিত করা যায় না। তাই দলিল উপস্থাপনের কোরআনী রীতি হলো, মানুষের সুস্থ স্বভাব এবং শুদ্ধ প্রকৃতিকে সম্বোধন করা, বিশ্ব চরাচরের এ বিশাল আয়োজন-আলোড়ন, যার একটি অংশ তুমি নিজে, অনেক কিছু তোমারও চোখের সামনে, এ নিয়ে যদি তুমি ভাবো, তাহলে তুমি নিজেই সেই অন্তর্নিহিত সত্যের সন্ধান পেয়ে যাবে। নিজেই প্রত্যক্ষ করতে পারবে স্পষ্ট অনেক নিদর্শন। তোমার চিন্তা-ফিকির এবং তোমার অনুধ্যানই স্রষ্টার অস্তিত্বের বিষয়ে তোমার অন্তরকে প্রশান্ত করে দিবে। এ আয়াতখানি তেলাওয়াত করো,
إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَالْفُلْكِ الَّتِي تَجْرِي فِي الْبَحْرِ بِمَا يَنْفَعُ النَّاسَ وَمَا أَنْزَلَ اللَّهُ مِنَ السَّمَاءِ مِنْ مَاءٍ فَأَحْيَا بِهِ الْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا وَبَثَّ فِيهَا مِنْ كُلِّ دَابَّةٍ وَتَصْرِيفِ الرِّيَاحِ وَالسَّحَابِ الْمُسَخَّرِ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ لَآيَاتٍ لِقَوْمٍ يَعْقِلُونَ
নিশ্চয় আসমান ও জমিনের সৃষ্টি কুশলতায়, দিন ও রাতের আবর্তনে, সামুদ্রিক জলযানে, যা মানুষে প্রয়োজনীয় জিনিস বহন করে চলে, আর আল্লাহ তাআলা উপর থেকে যে বৃষ্টি বর্ষণ করে মরে যাওয়া জমিনকে সজীব করে তোলেন এবং সতেজ ভূমিতে সব ধরনের জীবজন্তু ছড়িয়ে দেন তাতে এবং বায়ুমণ্ডলের সঞ্চালন ও সুনিয়ন্ত্রিত মেঘমালার মাঝে আকলমন্দ মানুষের জন্য (আল্লাহ পাকের অস্তিত্বের) বহু নিদর্শন বিদ্যমান। (সূরা ২ বাকারা, আয়াত ১৬৪)
এখানে আসমান-জমিনের নিপুন সৃষ্টি, দিন-রাতের নির্ধারিত গমন-আগমন-রীতি, নৌযানসমূহের বিস্ময়কর চলাচল, বৃষ্টি ও তার প্রভাবে আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং বিশেষ প্রক্রিয়ায় ভূমি ও আকাশের মধ্যে ভাসমান মেঘপুঞ্জের স্থিতি ইত্যাদির প্রতি কোরআন মাজীদ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। হে মানুষ! তুমি এগুলো নিয়ে ভাবো। তোমার বোধবুদ্ধি যদি সুস্থ থাকে, তাহলে তুমি স্বত:স্ফূর্তভাবে বলে উঠবে, এ বিশাল জগত এমনি সৃষ্টি হয়নি। কোনো এক মহীয়ান ও মহা প্রজ্ঞাবান পরাক্রমশালী সত্ত্বা আপন কুদরতে এগুলো সৃষ্টি করেছেন,
إِنَّ اللَّهَ فَالِقُ الْحَبِّ وَالنَّوَى يُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ وَمُخْرِجُ الْمَيِّتِ مِنَ الْحَيِّ ذَلِكُمُ اللَّهُ فَأَنَّى تُؤْفَكُونَ
নিশ্চয় শষ্যবীজ ও ফলের আঁটি আল্লাহই দীর্ণ করেন (এবং অংকুরোদগম করেন)। মৃত থেকে তিনিই জীবন্তকে বের করে আনেন। আর জীবন্ত থেকে মৃতকে বের করার মালিকও তিনি। ঐ কর্তাই তোমাদের আল্লাহ। তাহলে কোথায় তোমরা মাথা ঠুকে ফিরছো? (সূরা ৬ আনআম, আয়াত ৯৫)
দেখো, একটি আমের আঁটি তুমি মাটি চাপা দিয়ে রাখলে। ঐ আঁটি বা মাটির কোনো ইচ্ছাশক্তি নেই, নেই বিশেষ কোনো অনুভূতি শক্তি। দু’টোই নিষ্প্রাণ। কিন্তু আশ্চর্য! কয়েকদিন পর কী এক অদৃশ্য শক্তির উষ্ণ ছোঁয়ায় মাটির নীচে ঐ আঁটি দীর্ণ হয়ে যায়। রেশমের মতো কোমল অঙ্কুর বের হয় এবং মাটির বুক চিরে ঐ অঙ্কুর আত্মপ্রকাশ করে। একটু ভাবো ঐ নিষ্প্রাণ আটি ফাঁড়লো কে? এর ভিতর প্রাণের অঙ্কুরোদগম করলো কে? সুতার মতো নরম অঙ্কুর কার শক্তিতে মাটি ভেদ করতে সমর্থ হলো? তোমার কি মনে হয়, নিষ্প্রাণ আমের আঁটি এ-কাজগুলি নিজেই করেছে? কারো সাহায্য ব্যতীত এসব এমনিতেই হয়েছে? না, কক্ষনো না। এসব করেছেন কোনো এক মহাপরাক্রমশালী প্রজ্ঞাবান সত্ত্বা। আর তিনিই হলেন আল্লাহ।
তাঁর এ কুদরত প্রাণহীন আঁটি-গুটি আর বীজ-বিচির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং অসংখ্য নিষ্প্রাণ জিনিস থেকে তিনি প্রাণবান জিনিস তৈরি করেন। এমনিভাবে প্রাণবান জিনিস থেকে প্রাণহীন জিনিস বের করে আনেন। প্রাণহীন ডিম থেকে বাচ্চা প্রাণী সৃষ্টি করেন। আবার প্রাণবান মুরগি থেকে নিষ্প্রাণ ডিমও তিনি বের করেন। এগুলো আল্লাহ পাকের কুদরতের স্পষ্ট নিদর্শন। তোমাদের চোখের সামনেই রয়েছে তা। এ থেকে কি আল্লাহর অস্তিত্ব অনুধাবন করা যায় না? চিন্তা করো, কোরআন মাজীদে এসেছে,
وَفِي الْأَرْضِ قِطَعٌ مُتَجَاوِرَاتٌ وَجَنَّاتٌ مِنْ أَعْنَابٍ وَزَرْعٌ وَنَخِيلٌ صِنْوَانٌ وَغَيْرُ صِنْوَانٍ يُسْقَى بِمَاءٍ وَاحِدٍ وَنُفَضِّلُ بَعْضَهَا عَلَى بَعْضٍ فِي الْأُكُلِ إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِقَوْمٍ يَعْقِلُونَ
পৃথিবীতে আছে পরস্পর সংলগ্ন ভূখণ্ডসমূহ, আঙ্গুর বাগান, শস্যের ময়দান, একই জলসিঞ্চিত জোড়া কাণ্ড এবং এক কাণ্ড বিশিষ্ট খর্জুর বীথি। আর এক ফলের চে অন্য ফলে দান করেছি অধিক স্বাদ ও খাদ্যগুণ। নিশ্চয় জ্ঞানবান লোকদের জন্য এতে (আল্লাহ তাআলার অস্তিত্বের) বহু বহু নিদর্শন রয়েছে। (সূরা ১৩ রাআদ, আয়াত ৪)
এই যে জমিন, যেখানে খাদ্য উৎপাদন হয়। কত বিচিত্র তার অবস্থা। কখনো পাশাপাশি দুটি জমিনও ভিন্ন রকম। একটিতে ফসল ভালো হয়, অন্যটিতে তেমন নয়। একটি গম চাষের উপযোগী তো অন্যটি তুলার উপযুক্ত। এক জমিনে সবজি চাষ হচ্ছে, আবার পাশের জমিনে ঝুলছে আঙ্গুর। তৃতীয় জমিনে ফলছে থোকা থোকা খেজুর! খেজুর গাছও তো সব এক রকম নয়। কোনোটা হাট্টাগাট্টা, কোনোটা ছিপছিপে। অথচ সবগুলির গোড়ায় একই পানি সিঞ্চন করা হয়। এক আলো বাতাসেই তো ওরা বেড়ে ওঠে। তাহলে একেক খেজুরের স্বাদ একেক রকম হয় কেন? এই যে ছোট-বড় উঁচু নিচু নানা পার্থক্য- এ কি কারো কুদরতের কারিশমা ছাড়াই হচ্ছে? কক্ষনো নয়। জমিনের এই যে পার্থক্য, ফসলের এই যে বৈচিত্র, বুদ্ধিমান মানুষের জন্য এতে ভাবনার খোরাক আছে। এর মাধ্যমে সে কুদরতের নিদর্শন প্রত্যক্ষ করতে পারে, পারে হাকীকত পর্যন্ত পৌঁছতে। আল্লাহ পাক বলেন,
أَنَّا صَبَبْنَا الْمَاءَ صَبًّا (٢٥) ثُمَّ شَقَقْنَا الْأَرْضَ شَقًّا (٢٦) فَأَنْبَتْنَا فِيهَا حَبًّا (٢٧) وَعِنَبًا وَقَضْبًا (٢٨) وَزَيْتُونًا وَنَخْلًا (٢٩) وَحَدَائِقَ غُلْبًا (٣٠) وَفَاكِهَةً وَأَبًّا (٣١) مَتَاعًا لَكُمْ وَلِأَنْعَامِكُمْ
মানুষ তার খাদ্যের প্রতি নজর করে দেখুক এবং চিন্তা করুক, আমিই তো পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের ব্যবস্থা করেছি। এরপর জমিনকে বিস্ময়করভাবে বিদীর্ণ করে তাতে খাদ্যশস্য উৎপন্ন করেছি। উৎপন্ন করেছি আঙ্গুর, শাকসবজি আর জয়তুন ও খেজুর। সৃষ্টি করেছি ঘন-নিবিড় বাগবাগিচা, নানা রকম ফলমূল আর তৃণলতা। (সূরা ৮০ আবাসা, আয়াত ২৪-৩১)।
সুতরাং আমার তৈরি খাদ্য গ্রহণকারী মানুষের ভাবা উচিৎ, এই যে রুটি, শাকসবজি আর ফলফলাদি, নানা ধরনের লতাপাতা ও পশুখাদ্য এগুলো কোথা থেকে আসে। কে এগুলোর স্রষ্টা। যে পানি থেকে এগুলোর জন্ম হয়, সে পানিই বা কে বর্ষণ করেন। কার হুকুমে মাটি চাপা দেওয়া বিচি-দানা থেকে চারা বের হয়। মাটি ভেদ করে কোমল চারার অঙ্কুুর উদগত করেন কে।
মানুষ যদি সত্যকে পেতে চায়, তাহলে সে তার খাদ্য নিয়ে ভাবলেই সত্যের দেখা পেয়ে যাবে। আল্লাহ পাক বলছেন,
وَإِنَّ لَكُمْ فِي الْأَنْعَامِ لَعِبْرَةً نُسْقِيكُمْ مِمَّا فِي بُطُونِهِ مِنْ بَيْنِ فَرْثٍ وَدَمٍ لَبَنًا خَالِصًا سَائِغًا لِلشَّارِبِينَ
নিশ্চই গবাদি পশুর ভিতর চিন্তা ভাবনার উপকরণ আছে। এর উদরস্থ মল ও শোনিতের মধ্য হতে বিশুদ্ধ দুধ আমি তোমাদেরকে পান করতে দিই। এ দুধ পান পিয়াসী দের জন্য বড় সুস্বাদু। (সূরা ১৬ নাহল, আয়াত ৬৬)
যে গবাদি পশুর দুধ তুমি পান করো, তা নিয়ে একটু ভাবো, এগুলোর পেটে রক্তনালী আছে, আছে মলমূত্র। সর্বক্ষণই আছে। তবু এর খুব কাছ থেকে গন্ধমুক্ত বিশুদ্ধ দুধ নেমে আসে। এতে না আছে রক্তের চিহ্ন না গোবরের গন্ধ। কত উত্তম আর সুস্বাদু ঐ পানীয়। এটা কার দান? কোনো মানুষ কি ওখানে দুধের মেশিন বসিয়েছে? কারো মাথার বুদ্ধি কি ঐ বিস্ময়কর নিয়ম চালু করেছে? না কক্ষনো না। এসবই আল্লাহ যুল জালালের কুদরতের নিদর্শন। তিনিই আমার আপনার এবং সমগ্র জাহানের একমাত্র সৃষ্টিকর্তা।
আল্লাহ পাক প্রশ্ন করার ঢঙ্গে নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে মর্মস্পর্শী ভাষায়, অতি সংক্ষেপে, প্রশান্তিকরভাবে বলেছেন,
أَفِي اللَّهِ شَكٌّ فَاطِرِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ
আরে! ঐ আল্লাহর অস্তিত্বের ব্যাপারে সন্দেহ, যিনি আকাশমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের স্রষ্টা? (সূরা ১৪ ইবরাহীম, আয়াত ১০)
ঐ দেখো, তোমার চোখের সামনে অনন্ত আকাশ। চন্দ্র-সূর্য আর তারকারাজি। তুমি অনুভব করো সেগুলোর আলো-তাপ। আরো দেখো, দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ আর বনবনানী। এগুলো থেকে আহরিত ফসল তুমি ভোগ করো। ফুল দেখে চোখ জুড়োও, ঘ্রাণ শুঁকে আনন্দে মাতোয়ারা হও। আরো কত জিনিস কত কাজে তুমি ব্যবহার করো। একেকটির বৈশিষ্ট্য তুমি একেক কাজে লাগাও।
আচ্ছা বলো, যার একটু আকল আছে, সেকি বলতে পারে, এগুলি নিজের ইচ্ছায় ও সিদ্ধন্তে এমন হয়েগেছে? নাকি বলবে, কোনো শিল্পী-কারিগর বা বৈজ্ঞানিক-দার্শনিক এসব বানিয়েছে? বরং যদি তার আকল ঠিক থাকে, তাহলে সে বলে উঠবে, এসবি কোনো মহীয়ান প্রজ্ঞাবান সত্তার সৃষ্টি-কুশলতার অনুপম নিদর্শন।
وَفِي أَنْفُسِكُمْ أَفَلَا تُبْصِرُونَ (٢١) وَفِي السَّمَاءِ رِزْقُكُمْ وَمَا تُوعَدُونَ
পৃথিবীতে বিশ্বাসী মানুষের জন্যে (বিশ্বাসের) বহু নিদর্শন ছড়িয়ে আছে। খোদ তোমাদের মাঝেও আছে। তবু কি তোমরা তোমাদের চিন্তাশক্তিকে কাজে লাগাবে না? (সূরা ৫১ যারিয়াত, আয়াত ২০-২১)
আল্লাহ বলছেন, আমার পরিচয় পেতে বাইরে যেতে হবে না, তুমি তোমার প্রতি একটু নজর দাও। জন্মগত বিবেচনা শক্তিটুকুই কাজে লাগাও। তুমি তোমার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং জীবন ধারণের পদ্ধতি নিয়ে ফিকির করো। প্রথম আমি কী ছিলাম? মাতৃগর্ভে আমাকে আকৃতি দান করলো কে? আমার দেহের খাচায় প্রাণ আসলে কোত্থেকে? চোখে আলো আসলো কেমন করে? কানের পর্দায় শ্রবণশক্তি নিহিত রাখলো কে? আমার নাকে ঘ্রাণশক্তি দিলো কে? আমার জিভে কে দান করলো আস্বাদনশক্তি। কে দিলো আমাকে বাকশক্তি? আমার প্রতি এ দয়া কি আমার মা করেছেন? কোনো ডাক্তার করেছে? না আমি নিজেই করেছি? এরা কেউ করেনি। আরও বড় ভুল হবে, যদি ভাবো, এগুলি নিজে নিজেই হয়েছে, প্রাকৃতিকভাবে কারো ইচ্ছা ছাড়াই হয়েছে। (কারণ কোনো অবোধ জিনিস এমন সুসৃংখল নিয়ম তৈরি করতে পারে না।) আসল বাস্তবতা হলো, এক মহা পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাবান সত্তা আমাকে সৃষ্টি করেছেন। তিনিই আমার প্রতি এই অনুগ্রহগুলো করেছেন। অন্য কেউ নয়। নিজে নিজেও নয়।
فَتَبَارَكَ اللَّهُ أَحْسَنُ الْخَالِقِينَ
অতএব আল্লাহ বড় মহিমাময়, সর্বোত্তম স্রষ্টা তিনি। (সূরা ২৩ মুমিনূন, আয়াত ১৪)