প্রশ্ন
From: ইবনে কবির
বিষয়ঃ আপন বিবির ছবি দেখা প্রসঙ্গে
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته
জনাব আশা করি ভাল আছেন,
সর্বপ্রথম ঐ আল্লাহ্ পাকের শুকরিয়া আদায় করছি যিনি আমাদেরকে দ্বীনের উপর চলার তৌফিক দান করেছেন।
এই ভেজাল ও ফেতনার যুগে দ্বীনের জন্য খেদমতের প্রচেষ্টায় এগিয়ে যাচ্ছেন এজন্য আরো দোয়া করি আল্লাহ্ পাক যেন আপনাদেরকে জান্নাতের উচ্ছস্থান দান করুক।
এবং আরো বেশী বেশী সহীহ্ দ্বীনের খেদমত করার তাওফিক দান করুক। আমীন।।।
যে কথা বলতে যাচ্ছি,
(১) স্বামী প্রবাসী আর স্ত্রী দেশে থাকে। এমতবস্থায় স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মন চায় একে অপরের সহিত মেলামেশা করতে কিন্তু সময়, দুরত্বের কারণে, আর্থিকতার কারণে যথাসময়ে উভয়ের সাক্ষাতে মিলিত হওয়া কষ্ট হওয়ার কারণে স্বামী/স্ত্রীর ইচ্ছা করে উভয়ের একটি উলঙ্গ ফটো উঠিয়ে দেখা কিংবা স্ত্রীর গোপন অঙ্গের ছবি বা ভিডিওর মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে (সেটা যদি বস্ত্রবীহীন বা বস্ত্রসহ) দেখা যাবে কিনা।
(২) আর অনেক সময় দেখা যায় উভয়ের মাধ্যে রসিকতা, সহবাস মূলক কথা-বার্তা, রোমান্টিক রোমান্টিক কথা হয়। এক্ষেত্রে দেখা যায় উভয়ের মজি বাহির হয়। অনেক সময় উত্তেজিত হয়ে সেক্স পর্যন্ত বাহির হয়।
(৩) দুনিয়ার কামানোর উদ্দ্যশে বা রুজি রোজগারের উদ্দ্যশে কত দিন পর্যন্ত স্বামী-স্ত্রী পরষ্পর দূরে থাকতে পারে। এতে শরীয়তের কোন বিধিবিধান আছে কি?
জনাব এই প্রশ্নগুলি প্রায় সবারই অন্তরে অন্তরে কিন্তু কেউ লজ্জার কারণে কিংবা ভয়ের কারনে সঠিক সমাধান আমরা জানতে পারি না। আশা করি ইসলামের আলোকে আমাদেরকে বিষয়টা জানিয়ে অবহিত করবেন।
আল্লাহ্ পাক আপনাদেরকে দুনিয়া আখেরাতের উত্তম সাফল্য দান করুন।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
৪টি মাসআলা আলাদাভাবে প্রথমে বুঝে নিনঃ
১
স্বামী এবং স্ত্রী পরস্পরের পুরো শরীর দেখা জায়েজ আছে।
২
সুস্থ্য সবল থাকা অবস্থায় স্বামী তার স্ত্রী থেকে চার মাসের মাঝে একবার হলেও শারীরিক সম্পর্কে জড়ানো ওয়াজিব। আর যদি স্বামীর অবর্তমানে স্ত্রীর গোনাহে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে চার দিনের মাঝে একবার স্ত্রীর হক আদায় করা আবশ্যক।
৩
জিনার গোনাহে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা না থাকলে হস্তমৈথুন করা জায়েজ নয়। গোনাহের কাজ।
৪
শরীয়ত সমর্থিত তীব্র প্রয়োজন ছাড়া ছবি তোলা জায়েজ নয়।
উপরোক্ত ৪টি মাসআলা বুঝার পর আপনার কাঙ্খীত প্রশ্নগুলোর উত্তরগুলো বুঝা আশা করি সহজ হয়ে গেছে।
স্বামী বা স্ত্রীর গোনাহে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকলে কিছুতেই চার মাসের বেশি সময় স্ত্রী থেকে দূরে থাকার অনুমতি ইসলাম প্রদান করে না।
আর মোবাইলে অশ্লীল ছবি দেখা কোন সমাধান নয়। বরং এর দ্বারা অন্তর কলুষিত হয়। অন্তর মরে যায়।
স্ত্রীর সর্বাঙ্গ সরাসরি দেখা জায়েজ আছে। যদিও গোপনাঙ্গের দিকে সরাসরি তাকানো উচিত নয়। এতে স্মৃতিশক্তি কমে যায়।
অপ্রয়োজনে ছবি তুলা যেহেতু হারাম। আর উলঙ্গ ছবি সেতো আরো মারাত্মক গোনাহের কাজ।
তাই এহেন দৃষ্টিকটূ ও অপছন্দনীয় কাজগুলো পরিত্যাগ করতে হবে।
وَيَسْقُطُ حَقُّهَا بِمَرَّةٍ وَيَجِبُ دِيَانَةً أَحْيَانًا وَلَا يَبْلُغُ الْإِيلَاءَ إلَّا بِرِضَاهَا، وَيُؤْمَرُ الْمُتَعَبِّدُ بِصُحْبَتِهَا أَحْيَانًا، وَقَدَّرَهُ الطَّحَاوِيُّ بِيَوْمٍ وَلَيْلَةٍ مِنْ كُلِّ أَرْبَعٍ لِحُرَّةٍ وَسَبْعٍ لِأَمَةٍ
وفى رد المحتار: أَنَّ الْمُرَادَ إيلَاءُ الْحُرَّةِ، وَيُؤَيِّدُ ذَلِكَ أَنَّ عُمَرَ – رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهُ – لَمَّا سَمِعَ فِي اللَّيْلِ امْرَأَةً تَقُولُ: فَوَاَللَّهِ لَوْلَا اللَّهُ تُخْشَى عَوَاقِبُهُ لَزُحْزِحَ مِنْ هَذَا السَّرِيرِ جَوَانِبُهُ فَسَأَلَ عَنْهَا فَإِذَا زَوْجُهَا فِي الْجِهَادِ، فَسَأَلَ بِنْتَه حَفْصَةَ: كَمْ تَصْبِرُ الْمَرْأَةُ عَنْ الرَّجُلِ: فَقَالَتْ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ، فَأَمَرَ أُمَرَاءَ الْأَجْنَادِ أَنْ لَا يَتَخَلَّفَ الْمُتَزَوِّجُ عَنْ أَهْلِهِ أَكْثَرَ مِنْهَا، وَلَوْ لَمْ يَكُنْ فِي هَذِهِ الْمُدَّةِ زِيَادَةُ مُضَارَّةٍ بِهَا لَمَا شَرَعَ اللَّهُ تَعَالَى الْفِرَاقَ بِالْإِيلَاءِ فِيهَا. (رد المحتار، كتاب النكاح، باب القسم-4/380)
وَقَدْ يُجَابُ بِأَنَّهُ أَغْلَبِيٌّ (إلَى فَرْجِهَا) بِشَهْوَةٍ وَغَيْرِهَا وَالْأَوْلَى تَرْكُهُ لِأَنَّهُ يُورِثُ النِّسْيَانَ
وقال ابن عابديرن رح- (قَوْلُهُ وَالْأَوْلَى تَرْكُهُ) قَالَ فِي الْهِدَايَةِ: الْأَوْلَى أَنْ لَا يَنْظُرَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا إلَى عَوْرَةِ صَاحِبِهِ لِقَوْلِهِ – عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ – «إذَا أَتَى أَحَدُكُمْ أَهْلَهُ فَلْيَسْتَتِرْ مَا اسْتَطَاعَ وَلَا يَتَجَرَّدَانِ تَجَرُّدَ الْعِيرِ» وَلِأَنَّ ذَلِكَ يُورِثُ لِأَنَّهُ يُورِثُ النِّسْيَانَ لنِّسْيَانَ لِوُرُودِ الْأَثَرِ، ( رد المحتار، كتاب الحظر والإباحة، فصل فى النظر والمس-6/366، سعيد)
وفي سنن الترمذي (2769) عن مُعَاوِيَة بْن حَيْدَةَ قَالَ : قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ عَوْرَاتُنَا مَا نَأْتِي مِنْهَا وَمَا نَذَرُ .
قَالَ : ( احْفَظْ عَوْرَتَكَ ، إِلَّا مِنْ زَوْجَتِكَ ، أَوْ مَا مَلَكَتْ يَمِينُكَ )
فى كنز العمال فى سنن الأقوال والأفعال– ألا لعنة الله والملائكة والناس أجمعين على من انتقص شيئا من حقي، ………. وعلى ناكح يده، (كنز العمال فى سنن الأقوال والأفعال– تابع كتاب المواعظ والحكم، باب الترهيب الأحادي من الإكمال، فصل– الترهيب العشاري فصاعدا من الإكمال، رقم الحديث-44057)
وأما ما رواه عبد الرزاق في “المصنف” (7/ 391/ 13590) ، وابن أبي شيبة (4/ 379) عن أبي يحيى
وفى رد المحتار– وكذا الاستمناء بالكف وإن كره تحريما لحديث { ناكح اليد ملعون } ولو خاف الزنى يرجى أن لا وبال عليه (رد المحتار-كتاب الصوم،باب ما يفسد الصوم وما لا يفسده، مطلب فى حكم الإستمناء بالكف-3/371
فى تفسير آيات الأحكام-فإطلاق الإباحة في التصوير الفوتوغرافي ، وأنه ليس بتصوير وإنما هو حبس للظلّ ، مما لا ينبغي أن يقال ، بل يقتصر فيه على حد الضرورة ، (تفسير آيات الأحكام-2/300
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা-জামিয়া ফারুকিয়া দক্ষিণ বনশ্রী ঢাকা।
ইমেইল– [email protected]