প্রশ্ন
আসসালামু আলাইকুম।
তিন ভাই প্রবাসী ছিলেন। দুইজনের ফেমেলী বাংলাদেশে এবং একজনের ফেমিলী লন্ডনে ছিলেন। একত্রেই সব এখনও আছেন। মিরাস এখনও বন্টন হয় নাই। তিনজনের সম্মিলিত রোজগারে কিছু সম্পত্তি অর্জিত হয়েছে। দুই নাম্বার ভাই চলে যাওয়ার পরও আর কিছু সম্পদ হয়েছে। তিনি নগদ অর্থ দেন নাই। তবে দেশ থেকে মেধা ও শ্রম দিয়েছেন। এক পর্যায়ে তিনি তিন মেয়ে রেখে মারা যান। এক নাম্বার ভাইও দেশে চলে গেছেন। কিন্তু একত্রেই আছেন। এখন ছোট ভাই লন্ডন প্রবাসী। আয় করতেছেন। এক নাম্বার ভাই দেশে যাবার সময় পারিবারিক কর্জ রেখে গেছেন।
এখন প্রশ্ন বন্টনের সময়।
বড় ভাই বলতেছেন সম্পত্তি তিন অংশ করে বন্টন করার। ছোট ভাই বলতেছেন তিন অংশ হতে পারে না। কারণ তিন অংশ হলে আমার অতিরিক্ত আয়ের কারণে আমার অর্থের কী হবে? সাথে সাথে কর্জের টাকা কে পরিশোধ করবে?
এখানে উল্লেখ্য, লন্ডন প্রবাসী ভাই বলতেছেন আমি আমার সন্তানের যে সরকারী ভাতা পাইছি সেটা কর্জ মনে করে ব্যয়ে করছি। সুতরাং এই পয়সাও কর্জের মধ্যে যোগ হবে। কিন্তু বড় ভাই বলতেছেন এরকম কোন চুক্তি বা কথাবার্তা আগে হয় নাই। আমরা পারিবারিকভাবে রীতি অনুযায়ী একসাথে করছি। কারোও বেশি লাগছে আর কারো কম।
এখন প্রশ্ন হল,
১
যেই দিন বড় ভাই দেশে গেছেন সেইদিনের হিসাব অনুযায়ী কর্জ ধরা হবে? না যেই দিন বন্টন হবে সেই দিন কর্জ যত হবে সেটি ধরা হবে?
২
লন্ডন প্রবাসী যে ভাই অতিরিক্ত আয় করেছেন সেই ভাই বিশেষ কোন অংশ পাবেন না সমানভাবে বন্টন হবে?
৩
লন্ডন প্রবাসী ভাইয়ের তার সন্তানের প্রাপ্ত বিনিফিট কে কর্জ ধরা হবে কি না?
৪
লন্ডন প্রবাসী ভাইয়ের সন্তানের প্রাপ্ত বেনিফিট কে যদি কর্জ ধরা না হয়, তাহলে এই পয়সার হিসাব কিভাবে হবে?
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
যেহেতু তিন ভাইয়ের পিতা ইন্তেকালের পর তিন ভাই একসাথে বসবাস করে আসছেন। কারো কামাই বেশি আর কারো কামাই কম। কিন্তু সবাই একসাথেই চলে আসছেন। তাই সবার আমদানী ও ঋণ সম্মিলিতই ধরা হবে।
এখন যেহেতু মতভেদ হয়ে গেছে। তাই তিনজনের পরিবার আলাদা হয়ে যাওয়াই ভাল হবে।
সেই হিসেবে যখন বন্টন করা হবে, তখন হিসেব করে প্রথমে সম্মিলিত ঋণ পরিশোধ করা হবে। এরপর বাকি যে সম্পদ থাকে, তা তিনভাবে বন্টন করে তিন পরিবারে হস্তান্তর করে দিতে হবে।
اجْتَمَعَا فِي دَارٍ وَاحِدَةٍ وَاكْتَسَبَا وَلَا يُعْلَمُ التَّفَاوُتُ فَهُوَ بَيْنَهُمَا بِالسَّوِيَّةِ [تَنْبِيهٌ] يُؤْخَذُ مِنْ هَذَا مَا أَفْتَى بِهِ فِي الْخَيْرِيَّةِ فِي زَوْجِ امْرَأَةٍ وَابْنِهَا اجْتَمَعَا فِي دَارٍ وَاحِدَةٍ وَأَخَذَ كُلٌّ مِنْهُمَا يَكْتَسِبُ عَلَى حِدَةٍ وَيَجْمَعَانِ كَسْبَهُمَا وَلَا يُعْلَمُ التَّفَاوُتُ وَلَا التَّسَاوِي وَلَا التَّمْيِيزُ.
فَأَجَابَ بِأَنَّهُ بَيْنَهُمَا سَوِيَّةً، وَكَذَا لَوْ اجْتَمَعَ إخْوَةٌ يَعْمَلُونَ فِي تَرِكَةِ أَبِيهِمْ وَنَمَا الْمَالُ فَهُوَ بَيْنَهُمْ سَوِيَّةً، وَلَوْ اخْتَلَفُوا فِي الْعَمَلِ وَالرَّأْيِ اهـ وَقَدَّمْنَا أَنَّ هَذَا لَيْسَ شَرِكَةَ مُفَاوَضَةٍ مَا لَمْ يُصَرِّحَا بِلَفْظِهَا أَوْ بِمُقْتَضَيَاتِهَا مَعَ اسْتِيفَاءِ شُرُوطِهَا، (رد المحتار، كتاب الشرط، مطلب اجتمعا فى دار واحدة واكتسبا ولا يعلم التفاوت فهو بينهما بالسوية-6/502، الفتاوى الهندية-2/329
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
ইমেইল– [email protected]