প্রচ্ছদ / নামায/সালাত/ইমামত / নামাযের নিয়ত আরবীতে করার গুরুত্ব কতটুকু?

নামাযের নিয়ত আরবীতে করার গুরুত্ব কতটুকু?

প্রশ্ন

নিয়ত আরবীতে করার গুরুত্ব কত? দলীলসহ ব্যাখ্যা চাই।

প্রশ্নকর্তা- আহমাদ যুবায়ের।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

নিয়ত আরবীতে করার কোন গুরুত্বই নেই। তাই গুরুত্বের বিষয়টির দলীলসহ ব্যাখ্যা করার কিছু নেই।

নামাযের জন্য নিয়ত করা শর্ত। নিয়ত ছাড়া নামায হবে না। সেই নিয়ত মুখেই বলতে হবে, বা আরবীতেই করতে হবে এমন কোন শর্ত নেই।

মনে মনে নিয়ত করলেই নামায শুদ্ধ হয়ে যাবে। তবে মুখেও নিয়ত করা যায়।

কিন্তু নিয়ত ছাড়াই নামায পড়লে নামায হবে না। আর সাধারণ মানুষ মুখে নিয়ত না করার কথা বললে অনেক সময় বেখেয়ালে নিয়ত ছাড়াই নামায শুরু করে দেয়। এ কারণে অনেক উলামাগণ মুখে নিয়ত করতে বলেছেন। জরুরী হিসেবে নয়। বরং নিয়ত ছুটে যাওয়া থেকে বাঁচার জন্য।

কিন্তু আরবীতে নিয়ত করাকে জরুরী মনে করলে তা বিদআত হবে। কারণ, আরবীতেই নিয়ত করার কোন বাধ্যবাধকতা ফিক্বহের কিতাবে আসেনি।

عُمَرَ بْنَ الخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَلَى المِنْبَرِ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى، فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى دُنْيَا يُصِيبُهَا، أَوْ إِلَى امْرَأَةٍ يَنْكِحُهَا، فَهِجْرَتُهُ إِلَى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ» (صحيح البخارى، رقم-1)

وَقَدْ أَجْمَعَ الْعُلَمَاءُ عَلَى أَنَّهُ لَوْ نَوَى بِقَلْبِهِ وَلَمْ يَتَكَلَّمْ فَإِنَّهُ يَجُوزُ كَمَا حَكَاهُ غَيْرُ وَاحِدٍ

وفيه ايضا: وَقَدْ اخْتَلَفَ كَلَامُ الْمَشَايِخِ فِي التَّلَفُّظِ بِاللِّسَانِ فَذَكَرَهُ فِي مُنْيَةِ الْمُصَلِّي أَنَّهُ مُسْتَحَبٌّ وَهُوَ الْمُخْتَارُ وَصَحَّحَهُ فِي الْمُجْتَبَى وَفِي الْهِدَايَةِ وَالْكَافِي وَالتَّبْيِينِ أَنَّهُ يَحْسُنُ لِاجْتِمَاعِ عَزِيمَتِهِ وَفِي الِاخْتِيَارِ مَعْزِيًّا إلَى مُحَمَّدِ بْنِ الْحَسَنِ أَنَّهُ سُنَّةٌ وَهَكَذَا فِي الْمُحِيطِ وَالْبَدَائِعِ وَفِي الْقُنْيَةِ أَنَّهُ بِدْعَةٌ إلَّا أَنْ لَا يُمْكِنَهُ إقَامَتُهَا فِي الْقَلْبِ إلَّا بِإِجْرَائِهَا عَلَى اللِّسَانِ فَحِينَئِذٍ يُبَاحُ وَنُقِلَ عَنْ بَعْضِهِمْ أَنَّ السُّنَّةَ الِاقْتِصَارُ عَلَى نِيَّةِ الْقَلْبِ، فَإِنْ عَبَّرَ عَنْهُ بِلِسَانِهِ جَازَ وَنُقِلَ فِي شَرْحِ الْمُنْيَةِ عَنْ بَعْضِهِمْ الْكَرَاهَةُ وَظَاهِرُ مَا فِي فَتْحِ الْقَدِيرِ اخْتِيَارُ أَنَّهُ بِدْعَةٌ فَإِنَّهُ قَالَ: قَالَ بَعْضُ الْحُفَّاظِ: لَمْ يَثْبُتْ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – مِنْ طَرِيقٍ صَحِيحٍ وَلَا ضَعِيفٍ أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ عِنْدَ الِافْتِتَاحِ أُصَلِّي كَذَا وَلَا عَنْ أَحَدٍ مِنْ الصَّحَابَةِ وَالتَّابِعِينَ بَلْ الْمَنْقُولُ أَنَّهُ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – «كَانَ إذَا قَامَ إلَى الصَّلَاةِ كَبَّرَ» وَهَذِهِ بِدْعَةٌ. اهـ.

وَقَدْ يُفْهَمُ مِنْ قَوْلِ الْمُصَنِّفِ لِاجْتِمَاعِ عَزِيمَتِهِ أَنَّهُ لَا يَحْسُنُ لِغَيْرِ هَذَا الْقَصْدِ وَهَذَا لِأَنَّ الْإِنْسَانَ قَدْ يَغْلِبُ عَلَيْهِ تَفَرُّقُ خَاطِرِهِ فَإِذَا ذَكَرَ بِلِسَانِهِ كَانَ عَوْنًا عَلَى جَمْعِهِ، ثُمَّ رَأَيْته فِي التَّجْنِيسِ قَالَ وَالنِّيَّةُ بِالْقَلْبِ؛ لِأَنَّهُ عَمَلُهُ وَالتَّكَلُّمُ لَا مُعْتَبَرَ بِهِ وَمَنْ اخْتَارَهُ اخْتَارَهُ لِتَجْتَمِعَ عَزِيمَتُهُ. (البحر الرائق، كتاب الصلاة، باب شروط الصلاة-1/483-484

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com

আরও জানুন

আমানতের টাকায় মালিকের অনুমতি ছাড়া ব্যবসা করে লাভ করলে লাভের টাকা কে পাবে?

প্রশ্ন কারো কাছে এক লাখ টাকা আমানত রাখা হলো। কিন্তু আমানতের টাকা দিয়ে আমানত গ্রহণকারী …