প্রশ্ন
আস সালাই মুলাই কম আমি মোঃ কামরুজ্জামান খান পিতা মৃত হাজী গোলাম মাওলা থান বয়স ৩৫
গত ১মাস আগে আমার এক বন্ধুর সাথে আমারই এক বান্ধবীর বিয়ের ব্যবস্থা করি তবে কি কেউ কাউকে আগে থেকে চিন্তনা এবং আমি তাদের উকিল বাপ হই।
বিয়ের পড় তাদের মাঝে জগড়া সাবক্ষনিক লেগেই থাকে । আমার সেই বান্ধবী আমাকে বলে সে নাকি আত্ব হত্যা করবে। কারন আমার সেই বন্ধু জুয়া ণেশ এবং নারীর প্রতি একটু দুর্বল। ঘড় ভাংগনের পর্যায় ।আমি চাই ছিলাম একটি বিপথ গামী বৈক্তিকে যদি ভালো করা যায়। কিন্তু আমি তাদের মাঝে বিয়ে দিয়ে এখন আমি নিজেকে নিজে অনেক বড় অপরাধী মনে করি । আমার প্রশ্ন হলো আমি আমার সেই বান্ধীর কে বিয়ে করতে পারবো কি না। যেহেতু আমার সেই বান্ধবীকে আমি আমার সেই বন্ধুর ব্যাপারে সকল প্রকার তত্থ্য মিথ্যা দিয়েছিলাম।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
বিয়ে করা যায় তথা গায়রে মাহরাম কোন মেয়ে কোন ছেলের বান্ধবী হতে পারে না। এসব বন্ধু বান্ধবী বানিয়ে কথা বলা, একসাথে চলাফেরা করা বিধর্মীয়ানা কালচার। এসব থেকে মুক্ত থাকা প্রতিটি মুসলিমের জন্য আবশ্যক।
যদি উক্ত মেয়েটির স্বামী তাকে তালাক দেয়, তাহলে মেয়েটি উদ্দত শেষে আপনি তাকে বিয়ে করতে পারেন।
কিন্তু আপনার কথিত বন্ধু কর্তৃক তার স্ত্রী তালাকপ্রাপ্তা হওয়া এবং তার ইদ্দত পালন শেষ হবার আগে তাকে কিছুতেই বিয়ে করতে পারবেন না। তালাকপ্রাপ্তা হবার পর এবং ইদ্দত [তিন হায়েজ অতিক্রম হওয়া] শেষ হবার পর তাকে বিয়ে করতে পারবেন।
উকীল বাপ বলতে ইসলামে কিছু নেই। এগুলো সামাজিক কুপ্রথা। এসব পরিত্যাগ করা উচিত। এসবের কোন ভিত্তি নেই। সুতরাং যে মেয়ের উকীল বাপ সেজেছে তাকে শরয়ী কোন বাঁধা না থাকলে বিয়ে করাতে কোন সমস্যা নেই।
وَالْمُطَلَّقَاتُ يَتَرَبَّصْنَ بِأَنفُسِهِنَّ ثَلَاثَةَ قُرُوءٍ ۚ [٢:٢٢٨
আর তালাকপ্রাপ্তা নারী নিজেকে অপেক্ষায় রাখবে তিন হায়েজ পর্যন্ত। {সূরা বাকারা-২২৮}
فى الفتاوى الهندية– لَا يَجُوزُ لِلرَّجُلِ أَنْ يَتَزَوَّجَ زَوْجَةَ غَيْرِهِ وَكَذَلِكَ الْمُعْتَدَّةُ، كَذَا فِي السِّرَاجِ الْوَهَّاجِ. (الفتاوى الهندية، كِتَابُ النِّكَاحِ وَفِيهِ أَحَدَ عَشَرَ بَابًا، الْبَابُ الثَّالِثُ فِي بَيَانِ الْمُحَرَّمَاتِ وَهِيَ تِسْعَةُ أَقْسَامٍ، الْقِسْمُ السَّادِسُ الْمُحَرَّمَاتُ الَّتِي يَتَعَلَّقُ بِهَا حَقُّ الْغَيْرِ-1/280، بدائع الصنائع، كتاب النكاح عدم جواز منكوحة الغير-2/547، زكريا، البحر الرائق، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-3/108)
وفى رد المحتار- اما نكاح منكوحة الغير ومعتدة لم يقل احد بجوازه فلم ينعقد اصلا (رد المحتار، كتاب النكاح، باب العدة، مطلب فى النكاح الفاسد والباطل-5/197، 4/274، قاضى خان على الهندية-1/366)
فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُ زِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন,চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
মুহাদ্দিস-জামিয়া উবাদা ইবনুল জাররাহ, ভাটারা ঢাকা।
ইমেইল– [email protected]