প্রচ্ছদ / ক্রয়-বিক্রয় / পেপসি সেভেন আপসহ অন্যান্য কোল্ড ড্রিংকস খাওয়া ও কাদিয়ানী পণ্য ক্রয়ের বিধান

পেপসি সেভেন আপসহ অন্যান্য কোল্ড ড্রিংকস খাওয়া ও কাদিয়ানী পণ্য ক্রয়ের বিধান

প্রশ্ন

নামঃ রাশেদ,মেরিন ইন্জিনিয়ার,

আসসালামুআলাইকুম ।

শ্রদ্ধেয় মুফতী সাহেব। আমার কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ছিল । যদি সময় করে একটু উত্তর দিতেন তবে খুব উপকার হতো আমাদের দেশে যে সকল কোমল পানীয় যথাঃ পেপসি, সেভেন আপ, স্প্রাইট, স্পীড, টাইগার, মজো, কেøমন পান করা জায়েজ আছে কি? অনেকে বলেনঃ প্রাণ কোম্পানি কাদিয়ানীদের,তাই ওদের পণ্য খাওয়া যাবে না,এটা কি সঠিক?

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

উল্লেখিত কোল্ড ড্রিংকস সম্পর্কে শরয়ী হুকুম বলতে হলে কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে সম্মক অবগতি প্রয়োজন। যথা-

 

১-উল্লেখিত কোল্ড ড্রিংকস কী দিয়ে তৈরী হয়?

২-তাতে কী বস্তু মিশানো হয়?

৩-যদি হারাম কিছু মিশ্রণ করা হয়, তাহলে তার পরিমাণ কতটুকু?

৪-যদি হারাম বস্তু মিশ্রণ করা হয়ে থাকে, তাহলে সেটির প্রসেসিংটা কী? তা কি আপন অবস্থায় বাকি থাকে? না পরিবর্তীত হয়ে যায়?

 

উল্লেখিত চারটি প্রশ্নের উত্তর ছাড়া আসলে উক্ত কোল্ড ড্রিংকসগুলোকে না-জায়েজ বলাটা অনুচিত হবে। তাই উক্ত বস্তুগুলো সম্পর্কে উল্লেখিত চারটি প্রশ্নের জবাবসহ আমাদের কাছে প্রশ্ন পাঠান, ইনশাআল্লাহ দ্রুত শরয়ী সমাধান জানাতে চেষ্টা করবো।

 

তবে একটি মূলনীতি বলে দিচ্ছি-

হারাম কোন বস্তু যেমন শুকর ইত্যাদিকে যদি এমনভাবে রিফাইন করা হয় যে, এসবের কোন মৌলিকত্ব বাকি না থাকে, তাহলেও উক্ত বস্তু ব্যবহার করা জায়েজ আছে। আর যদি সেসব হারাম বস্তুর মৌলিকত্ব বাকি থাকে, তাহলে উক্ত বস্তু যাতে মিশ্রিত করা হবে, তা ব্যবহার করা জায়েজ হবে না। {নিহায়াতুল মুহতাজ লির রামালি-৮/১২}

أما (الخمر) إذا خلله بعلاج بالملح أو بغيره يحل عندنا (الفتاوى الهندية،كتاب الأشربة وفيه بابان   الباب الأول في تفسير الأشربة والأعيان التي تتخذ منها الأشربة وأسماؤها وماهياتها وأحكامه-5/410

অনুবাদ-মদকে যখন লবন বা অন্য কিছু দ্বারা সির্কা বানিয়ে ফেলা হয়, তখন তা হালাল হয়ে যায়। {ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৪১০, মাজমাউল আনহুর-৪/২৫১, ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া-২৭/২১৮}

এ মূলনীতির উপর ভিত্তি করে বুঝে নিন উল্লেখিত কোল্ড ড্রিংকষের বিধান। যদি ওসব কোল্ড ড্রিংকসে যদি কোন হারাম বস্তু মিশ্রিত হয়, আর মিশ্রিত করার আগে তাকে এমনভাবে প্রসেসিং করে যে, হারাম বস্তুটির মৌলিকত্ব বাকি থাকে না, তাহলে তা ব্যবহার করা জায়েজ হবে, আর যদি মৌলিকত্ব বাকি থাকে তাহলে তা ব্যবহার করা জায়েজ হবে না।

তবে আমরা যতটুকু জেনেছি , এসব কোল্ড ড্রিংকসে নাপাক দ্রব্য ব্যবহার করা হয় না, সোডাজাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করা হয়, আর যদিও কোন নাপাক দ্রব্য ব্যবহার হয়ে থাকে, তাহলেও তা এমনভাবে রিফাইন হয়ে যায় এসবের কোন নামগন্ধও আর বাকি থাকে না, তাই এসব পণ্য ব্যবহারে শরয়ী কোন বাঁধা নেই। তবে এটি আমাদের অসম্পূর্ণ গবেষণা মন্তব্য।

সঠিক মন্তব্য তখনি করা যাবে, যখন উল্লেখিত চারটি প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে জানা যাবে।

কাদিয়ানীদের পণ্য ক্রয় প্রসঙ্গে

মির্যা গোলাম আহমাদ কাদিয়ানীর আক্বিদায় বিশ্বাসীরা সমস্ত মুসলমানদের ঐক্যমত্বে কাফের। সুতরাং কাদিয়ানী কাফেরদের পণ্য ক্রয়ের বিধান হল, যদি বাজারে এছাড়া আর কোন সমমানের পণ্য না থাকে, তাহলে অপারগ অবস্থায় তাদের জায়েজ পণ্য ক্রয় করা জায়েজ আছে। কিন্তু যদি সমমানের পণ্য বাজারে থাকে, তাহলে তাদের প্রোডাক্টকৃত পণ্য ক্রয় থেকে বিরত থাকা উচিত।

لَا بَأْسَ بِأَنْ يَكُونَ بَيْنَ الْمُسْلِمِ وَالذِّمِّيِّ مُعَامَلَةٌ إذَا كَانَ مِمَّا لَا بُدَّ مِنْهُ (الفتاوى الهندية، كتاب الكراهية، الباب الرابع عشر فى اهل الذمة والاحكام-5/348


والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- ahlehaqmedia2014@gmail.com

lutforfarazi@yahoo.com

আরও জানুন

ব্যাংক কর্তৃক সার্ভিস চার্জ হিসেবে কেটে রাখা সুদের টাকাও কি দান করে দিতে হবে?

প্রশ্ন আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ আমার ব্যাংক একাউন্ট এ গত ০১ জুলাই ব্যাংক থেকে ইন্টারেস্ট (সুদ ) …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *