প্রচ্ছদ / অপরাধ ও গোনাহ / মনে মনে পাপ-চিন্তা হলেই কি গোনাহ লিখা হয়?

মনে মনে পাপ-চিন্তা হলেই কি গোনাহ লিখা হয়?

প্রশ্ন

মোঃআল-আমিন, মোমেনশাহী
বিষয়ঃ ওয়াসওয়াসা জাতিও সমস্যা
আসসালামুয়ালায়কুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ।
যদি কারো অন্তরে এমন ধরনের কোন কল্পনা বা খেয়াল আসে যা অত্তান্ত খারাপ(শারিআতের দিক থেকে খুবই ঘৃণিত ও অবশ্য বর্জনীয়) , কিন্তু এটা তার অনিচ্ছাতে এসে যায়। সে চাই না এমন ধরনের খেয়াল তার হৃদয়পটে আসুক বরং আসলে সে অস্থির ও ব্যাকুল হয়ে যায়। আন্তর সংকীর্ণ হয়ে যায়, ভারাক্রান্ত হৃদয়ে তার প্রহরগুলি অতিবাহিত হয়; কোন কিছুতে তার ভাল লাগে না। আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাওয়া না পাওয়ার বিষয়ে আসা ও হতাশায় ভুগে। সে চাই পরিপূর্ণ ঈমানি জীবন-যাপন করতে এবং আখিরাতে মুক্তি পেয়ে সফলকামদের অন্তর্ভুক্ত হতে।
আমার জানার বিষয় হল,মুমিনের অন্তরে এমন ধরনের খেয়াল আসা কি স্বাভাবিক বিষয় ?এমন ধরনের কল্পনার বিষয়ে শরিয়তের বিধান কি ?
আর যদি এমন কল্পনা বা খেয়াল নবী কিংবা আল্লাহ সম্পর্কে হয়  তবে কি হুকুম? তার মুক্তির কোন পথ খোলা আছে কি?
দয়া করে সমাধান ও পরামর্শ দিয়ে কৃতার্থ করবেন।
ওয়াসসালাম।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

শুধুমাত্র খারাপ চিন্তা মাথায় আসার দ্বারাই কোন পাপ লিখা হয় না। বাকি এরকম চিন্তা আসার সাথে সাথেই ইস্তিগফার পড়া উচিত। সেই সাথে মন থেকে উক্ত খারাপ কাজটি দূর করে ফেলতে হবে। কুফরীর চিন্তা করার দ্বারাই কুফরী হয়ে যায় না। যদি না তা কার্যে তথা কথায় ও ঘোষণায় তা প্রতিফলিত না করা হয়।

তাই এসব চিন্তা আসার সাথে সাথেই ইস্তিগফার করে নিবে। আর মন থেকে এসব বাজে চিন্তা দূর করে ফেলতে হবে। সম্ভব হলে কোন আল্লাহওয়ালা সুন্নতের পাবন্দ বুযুর্গের সাথে সপ্তাহে বা মাসে হলেও একদিন দেখা করা, নিজের হালাত শুনানোর দ্বারাও অনেক সময় এসব বাজে চিন্তা থেকে নিজেকে আত্মরক্ষা করা যায়।

আল্লাহ তাআলা আপনার দ্বীন ও আমলকে হিফাযত করুন। আমীন।

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فِيمَا يَرْوِي عَنْ رَبِّهِ عَزَّ وَجَلَّ قَالَ: قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ كَتَبَ الحَسَنَاتِ وَالسَّيِّئَاتِ ثُمَّ بَيَّنَ ذَلِكَ، فَمَنْ هَمَّ بِحَسَنَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللَّهُ لَهُ عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً، فَإِنْ هُوَ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللَّهُ لَهُ عِنْدَهُ عَشْرَ حَسَنَاتٍ إِلَى سَبْعِ مِائَةِ ضِعْفٍ إِلَى أَضْعَافٍ كَثِيرَةٍ، وَمَنْ هَمَّ بِسَيِّئَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللَّهُ لَهُ عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً، فَإِنْ هُوَ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللَّهُ لَهُ سَيِّئَةً وَاحِدَةً»

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ আল্লাহ তাআলার শানে বলতেছিলেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা পূণ্য ও পাপ লিপিবদ্ধ করেন। তারপর এর ব্যাখ্যা করেন, সুতরাং কোন ব্যক্তি যদি ভাল পূণ্যময় কাজের ইচ্ছে সংকল্প করে, কিন্তু কাজটি করতে না পারে, তাহলে আল্লাহ তাআলা তার জন্য একটি পূর্ণ নেকী লিপিবদ্ধ করেন।আর যদি সংকল্প করা কাজটি সম্পাদন করে ফেলে, তাহলে তাকে দশ থেকে সাতশত পরিমাণ বা এর চেয়ে বেশি নেকী বৃদ্ধি করে লিপিবদ্ধ করেন। আর যে ব্যক্তি কোন পাপ কাজের সংকল্প করে, কিন্তু পাপ কাজটি না করে, তাহলেও আল্লাহ তাআলা তার জন্য একটি পূর্ণ নেকী দান করেন। আর যদি সংকল্প করা কাজটি সম্পাদিত করে ফেলে, তাহলে তার জন্য একটি গোনাহ লিখা হয়। [বুখারী, হাদীস নং-৬৪৯১]

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- [email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *