প্রচ্ছদ / আহলে হাদীস / মুজতাহিদ মুকাল্লিদ ও গায়রে মুকাল্লিদ বিষয়ে জরুরী জ্ঞাতব্যঃ [প্রথমাংশ]

মুজতাহিদ মুকাল্লিদ ও গায়রে মুকাল্লিদ বিষয়ে জরুরী জ্ঞাতব্যঃ [প্রথমাংশ]

লেখক– মুনাজিরে ইসলাম মাওলানা মুহাম্মদ আমীন সফদর ওকাড়বী রহঃ

অনুবাদঃ লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

প্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা! ইংল্যান্ড থেকে কিছু বন্ধুরা কতিপয় প্রশ্ন আমার কাছে পাঠিয়েছে। সেসবের জবাব উপস্থাপন করা হল। যেহেতু এসব প্রশ্নের সম্পর্ক মুজতাহিদ, তাকলীদ এবং গায়রে মুকাল্লিদদের সাথে তাই প্রথমে ইজতিহাদ,মুজতাহিদ, মুকাল্লিদ এবং গায়রে মুকাল্লিদ দ্বারা উদ্দেশ্য কি? তা বুঝে নেয়া দরকার।

ইজতিহাদী মাসআলা

হযরত মুয়াজ বিন জাবাল রাঃ কে যখন রাসূল সাঃ ইয়ামেন পাঠাচ্ছিলেন, তখন ইসলামী বিধানের ব্যাপারে কথা হল। রাসূল সাঃ জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি মাসআলার ফায়সালা কিভাবে করবে? হযরত মুয়াজ রাঃ জবাব দিলেনঃ কিতাবুল্লাহ দিয়ে। রাসূল সাঃ আবার জিজ্ঞেস করলেনঃ যদি কিতাবুল্লাহতে তুমি মাসআলাটি না পাও তাহলে কী করবে? তখন মুয়াজ রাঃ বললেনঃ সুন্নত অনুপাতে ফায়সালা করবো। রাসূল সাঃ বললেনঃ যদি সুন্নতের মাঝে উক্ত মাসআলা না পাও? হযরত মুয়াজ তখন বললেনঃ তাহলে আমি ইজতিহাদ করবো। রাসূল সাঃ তখন শুকরিয়া আদায় করলেন যিনি মুয়াজকে এমন জবাব দেয়ার তৌফিক দিয়েছেন যার দ্বারা আল্লাহর রাব্বুল আলামীনের রাসূল সাঃ খুশি হয়ে গেছেন। {আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯২, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-২০১২৬, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-১৬৮, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২০৬১, মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২২৯৮৯, তিরমিজী, হাদীস নং-১৩২৭}

ইবনুল কাইয়্যুম রহঃ এ হাদীসটিকে সহীহ বরং মশহুর বলেছেন।

এ হাদীস দ্বারা কয়েকটি বিষয় জানা যায়। যথা-

মুজতাহিদ ঐ সময় ইজতিহাদ করে, যখন মাসআলাটি কিতাবুল্লাহ ও সুন্নতে রাসূলের মাঝে না পাওয়া যায়। যদি মাসআলাটি কিতাবুল্লাহ বা সুন্নতে রাসূলের মাঝে পরিস্কারভাবে উদ্ধৃত হয়, তাহলে সেখানে মুজতাহিদ ইজতিহাদ করে না। এর দ্বারা বুঝা গেল যে, যারা একথা বলে যে, মুজতাহিদরা কুরআন ও হাদীসের বিপরীত ইজতিহাদ করে থাকে, তারা শুধুমাত্র এ হাদীসের অস্বিকারকারীই নয়, বরং সাহাবায়ে কেরামের ঐক্যমত্বের ও বিরোধী। সাধারণত ইজতিহাদী মাসআলা তিন প্রকার হয়ে থাকে। যথা-

ক) একদম কিছুই বলা হয়নি কিতাবুল্লাহ বা সুন্নতের মাঝে এরকম বিষয় হওয়া। যেমন অনবরত বাতকর্ম হওয়া, বা পেশাবের ফোটা অনবরত ঝরতে থাকা, বা নাক দিয়ে এমনভাবে রক্ত ঝরতে থাকা যে, চার রাকাত নামায পড়ারও কোন সুযোগ না পাওয়া যায়। কিংবা ভগন্দর রোগী হয়। এ চারটি মাসআলার হুকুম পরিস্কার ভাষায় কুরআন বা সুন্নতে পাওয়া যায় না। এ কারণে মুজতাহিদ এরকম অসুস্থ্যদের মুস্তাহাজা মহিলার উপর কিয়াস করেছেন। যে মুস্তাহাজার হুকুম হাদীসে বিদ্যমান আছে।

এরকম মাসআলা যা বাহ্যিকভাবে মানসূস তথা কুরআন বা হাদীসে বর্ণিত। কিন্তু নুসূস তথা ইবারতের মাঝে বিপরীতমুখীতা বিদ্যমান। আর এ বিপরীতমুখিতার সমাধানের ব্যাপারে আল্লাহ বা রাসূল সাঃ এর কোন সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় না। যেমন এক হাদীসে এসেছে যে, রাসূল সাঃ কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছেন। অন্য হাদীসে এসেছে যে, যিয়ারত করার অনুমতি আছে। এ দুটি হাদীসে বাহ্যিকভাবে বিপরীতমুখীতা রয়েছে। কিন্তু রাসূল সাঃ এ বিপরীতমুখীতার সমাধান করে নিজেই বলে দিয়েছেন যে, “আমি প্রথমে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করতাম এখন তোমরা কবর যিয়ারত কর”। রাসূল সাঃ এর এ বক্তব্যের দ্বারা উক্ত বিপরীতমুখীতার সমাধান হয়ে গেছে। তাই এক্ষেত্রে ইজতিহাদের আর কোন সুযোগ নেই।

কিন্তু অনেক মাসআলা এমন আছে। যেসব মাসআলায় বাহ্যিকভাবে বিপরীতমুখীতা রয়েছে। যার কোন সমাধান রাসূল সাঃ বলে যাননি। এ সকল ক্ষেত্রে মুজতাহিদের সিদ্ধান্তই গৃহিত হবে।

মুজতাহিদ শরীয়তের বিষয় গবেষণা করে মূলনীতি বের করেছেন যে, ইসলামের সূচনা লগ্নে অনেক বিষয় জায়েজ ছিল, পরবর্তীতে তা হারাম হয়ে গেছে। এর দ্বারা এ মূলনীতিও সামনে আসে যে, যদি দু’টি হাদীস এমন পাওয়া যায়, যার একটি কোন বিষয়কে জায়েজ সাব্যস্ত করছে, আর অপর হাদীসটি উক্ত বিষয়কে হারাম সাব্যস্ত করছে করছে। তাহলে জায়েজ সাব্যস্তকারী হাদীসকে প্রথমের, আর হারাম সাব্যস্তকারী হাদীসকে পরবর্তীর হিসেবে ধরা হবে। যেমন কে হাদীসে ইমামের পিছনে কিরাত পড়ার কথা এসেছে। অন্য হাদীসে কিরাত ছেড়ে দেয়ার কথা এসেছে। আর কিরাত ঠোঁট ও জিহবার নড়াকে বলাকে বলা হয়। আর চুপ থাখা বলা হয় ঠোঁট ও জিহবার থেমে থাকাকে। এক্ষেত্রে কিরাত পড়ার হাদীসকে প্রথম জমানার, আর কিরাত না পড়ার তথা চুপ থাকার হাদীসকে পরবর্তী সময়ের বলে সাব্যস্ত হবে। এমনিভাবে রুকু, সেজদা এমনকি প্রত্যেকটি তাকবীরের সাথে রফয়ে ইয়াদাইন করার কথা সম্বলিত হাদীসও হাদীসের কিতাবে বিদ্যমান আছে। আর প্রথম তাকবীরের পর আর রফয়ে ইয়াদাইন না করার হাদীসকে পরবর্তী সময়ের বলে সাব্যস্ত করা হবে। এমনিভাবে আমীন জোরে বলা হল নড়ন চড়ন। আর আমীন আস্তে বলা মানে হল নিশ্চুপ থাকা।

এর নামই ইজতিহাদ। মুজতাহিদ স্বীয় ইজতিহাদ দিয়ে শেষ সময়ের হাদীসকে জেনে নিয়েছেন। আর মুকাল্লিদরা মুজতাহিদের পথ প্রদর্শনে সেই সর্বশেষ হাদীসের উপর আমল করা শুরু করে দেয়।

ইজতিহাদের প্রয়োজন কখনো শরীয়তের সীমারেখার ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। কোন কাজটি ফরজ? যা না করলে নামায বাতিল হয়ে যাবে। কোন কাজটি ওয়াজিব? যা না করলে সেজদায়ে সাহু ইত্যাদি আবশ্যক হবে।

সহজ ভাষায় যে ব্যক্তি শরয়ী মূলনীতি বের করে নতুন আগত মাসআলার সমাধান কুরআন ও সুন্নাহ থেকে দিতে পারে তাকে মুজতাহিদ বলা হয়। কুরআনে কারীমে তাদের কখনো “আহলে ইস্তিম্বাত” কখনো “ফুক্বাহা” কখনো “আহলে জিকির” বলে উল্লেখ করেছে। আর তাদের আদেশ দেয়া হয়েছে যে, فاعتبروا يا اولى الأبصار তথা হে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন প্রাজ্ঞবৃন্দ! তোমরা কিয়াস কর।

এ কারণে মুজতাহিদদের উপর ইজতিহাদ করা ওয়াজিব।

মুকাল্লিদ

যে ব্যক্তি ইজতিহাদের যোগ্যতা রাখে না। তার উপর তাকলীদ করা ওয়াজিব। মানে হল, সে ফুক্বাহায়ে কেরামদের কাছে জিজ্ঞেস করে করে আমল করবে। সাহাবা রাঃ ও তাবেয়ীগণের মাঝে এ দুই প্রকারের লোকই ছিল।

হযরত শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দেসে দেহলবী রহঃ বলেনঃ সমস্ত সাহাবাগণ এক স্তরের ছিলেন না। তাদের মাঝে কতিপয় মুজতাহিদ ছিলেন। আর কতিপয় মুকাল্লিদ ছিলেন। কেননা, কুরআনে কারীমে কতিপয়কে “আহলে ইস্তিম্বাতত” তথা মুজতাহিদ সাব্যস্ত করা হয়েছে। আর অন্যদের তাদের কথা মানার হুকুম দেয়া হয়েছে। এর নামই তাকলীদ।

গায়রে মুকাল্লিদ

যে ব্যক্তি নিজে ইজতিহাদের যোগ্যতা রাখে না। সেই সাথে কোন মুজতাহিদের তাকলীদও করে না। এমন ব্যক্তিকে বলা হয় গায়রে মুকাল্লিদ। সাহাবায়ে কেরাম রাঃ, তাবেয়ীন, তাবে তাবেয়ীন এবং আয়িম্মায়ে মুহাদ্দিসীন রহঃ দের মাঝে একজন ব্যক্তিও গায়রে মুকাল্লিদ ছিলেন না। কিয়ামত পর্যন্ত এমন কোন পরিস্কার উদ্ধৃতি কোন সাহাবী বা তাবেয়ী কিংবা তাবে তাবেয়ী বা মুহাদ্দিসের ক্ষেত্রে উপস্থাপন করা যাবে না, যিনি ইজতিহাদের যোগ্যতাও রাখতেন না, আবার কারো তাকলীদও করতেন না বরং তিনি গায়রে মুকাল্লিদ ছিলেন। এমন এক ব্যক্তির নাম কিয়ামত পর্যন্ত কেউ উপস্থাপন করতে পারবে না স্পষ্ট ভাষায়।

এটাও স্মরণ রাখা দরকার যে, এ ফিরক্বাটি না মক্কায় সৃষ্টি হয়েছে, না মদীনায় সৃষ্টি হয়েছে। না আরবের অন্য কোন শহরে এর জন্ম হয়েছে। এ ফিরক্বাটি ইংরেজদের শাসনামলে সৃষ্টি হয়েছে। আর এখান থেকেই অন্যান্য রাষ্ট্রে তা ছড়িয়ে পড়েছে।

যখন ইজতিহাদ, মুজতাহিদ, মুকাল্লিদ ও গায়রে মুকাল্লিদের অর্থ আপনার ব্রেইনে বসে যাবে, তখন মাসআলাও বুঝে নিন। তাহলো, ইজতিহাদী বিষয়ে মুজতাহিদের উপর ইজতিহাদ করা ওয়াজিব। আর গায়রে মুজতাহিদের উপর তাকলীদ ওয়াজিব। আর গায়রে মুকাল্লিদদের শাস্তি দেয়া ওয়াজিব।

১নং প্রশ্ন

যে ব্যক্তি ইলম হিসেবে মুজতাহিদ নয়। আবার কোন মুজতাহিদের তাকলীদ ও করে না। আর সে হাদীসের কিতাবের অনুবাদ পড়াকে তাহক্বীক তথা গবেষণা মনে করে থাকে, ঐ ব্যক্তির জন্য তার এ অপূর্ণাঙ্গ তাহক্বীকের উপর আমল করা জায়েজ আছে? না তার জন্য জরুরী যে, সে হাদীসের ব্যাপারে অধিক পান্ডিত্ব অর্জনকারীর অনুসরণ করবে এবং তার উপর নির্ভর করবে? এ বিষয়টি দলীলের ভিত্তিতে জানাবেন। এ অনুসরণ করা উত্তম? না ইলমহীন তাহক্বীক করা উত্তম?

উত্তর

ইসলামের মাঝে আল্লাহর রাসূল  সাঃ এর পর তাহক্বীক এর একমাত্র হকদার মুজতাহিদদের। যা পবিত্র কুরআনের الذين يستنبطونه منهم তথা “যারা তোমাদের মাঝে ইস্তিম্বাত তথা উদ্ভাবনী ক্ষমতা রাখে” [সূরা নিসা-৮৩} আয়াত দ্বারা স্পষ্ট।

আর তাহক্বীকের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় লক্ষ্যণীয়। যথা-

দলীলটি সঠিক হতে হবে। যেমন হাদীস প্রমাণিত ও সহীহ হতে হবে।

এ হাদীস দ্বারা যেটি বুঝে আসছে, সেটিই রাসূল সাঃ এর উদ্দেশ্য হতে হবে। বুঝটি রাসূল সাঃ এর উদ্দেশ্যের বিপরীত না হতে হবে।

যদি এ দলীলের বিপরীত আরো কোন দলীল থাকে, তাহলে এ বিরোধকে নিরসন করা হবে।

মনে রাখতে হবে, মুহাদ্দিসীনে কেরাম সাঃ সারা জীবন প্রথম বিষয়টি তাহক্বীক করাতেই কাটিয়ে দিয়েছেন। রাসূল সাঃ এর উদ্দেশ্য বুঝা এবং হাদীসের মাঝে পারস্পরিক বাহ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তি করার ভার মুজতাহিদদের উপর ছেড়ে দিয়েছেন। অবশ্য মুজতাহিদীনগণের তাহক্বীক পূর্ণাঙ্গ হয়ে থাকে। তারা প্রমাণ, দালালত তথা কী বুঝাচ্ছে? এবং বিরোধ নিরসন তিনটি বিষয়েরই পূর্ণাঙ্গ তাহক্বীক করে থাকেন। এ কারণেই শেষ দু’টি বিষয়ে মুহাদ্দিসীনগণরাও মুজতাহিদের তাক্বলীদ করে থাকেন।

এ কারণেই মুহাদ্দিসীনদের তালিকা চার প্রকার কিতাবের মাঝে পাওয়া যায়। যথা

১-তাবাক্বাতে হানাফিয়্যাহ, ২-তাবাক্বাতে মালিকিয়্যাহ। ৩-তাবাকাতে শাফিয়িয়্যাহ। ৪-তাবাকাতে হানাবেলাহ। তাবাকাতে গায়রে মুকাল্লিদীন নামের কোন কিতাব মুহাদ্দিসীনদের ব্যাপারে আজ পর্যন্ত কোন গ্রহণযোগ্য ইতিহাসবীদ বা মুহাদ্দিস লিখেননি।

যখন সাহাবাগণ, তাবেয়ীগণ, মুহাদ্দিসীনগণ এবং মুফাসসিরীনগণ সবাই মুজতাহিদের তাহক্বীকের উপর নির্ভর করেছেন। যাদের অধিকাংশের মাতৃভাষাও ছিল আরবী। কিন্তু তারপরও মুজতাহিদের মুকাল্লিদ ছিলেন। তাহলে আজকালকার কোন ব্যক্তি যেমন প্রশ্নে উল্লেখ করা হয়েছে, তেমন কোন স্বল্প জ্ঞানও বুঝ, আর অল্প বিদ্যার উপর নির্ভর করা, আর এটাকে তাহক্বীকের নাম দেয়াটা কিছুতেই জায়েজ হতে পারে না। এটি সাহাবায়ে কেরাম থেকে নিয়ে আজ পর্যন্তের নিরবচ্ছিন্ন আমলের বিপরীত। সেই সাথে কুরআন ও হাদীসের বিপরীতও বটে। আল্লাহ তাআলা আদেশ দিয়েছেন যে, যদি তোমরা নিজেরা না জান, তাহলে জ্ঞানীদের থেকে জেনে আমল কর। রাসূল সাঃ মুয়াজ রাঃ কে এটা বলেন নি যে, ইয়ামেনের সবার ভাষা যেহেতু আরবী তাই তারা সবাই ইজতিহাদ করে নিবে। বরং সমস্ত ইয়ামেনবাসী হযরত মুয়াজ রাঃ এরই তাক্বলীদ করতো।

অযোগ্য ব্যক্তির কথাকে তাহক্বীক বলা রাসূল সাঃ এর বিরোধীতা করার শামিল। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যখন কোন অযোগ্যের কাছে কোন কাজ সোপর্দ করা হবে, তখন বুঝে নিও কিয়ামত বুঝি নেমে এল। {বুখারী}

এ অযোগ্য ব্যক্তিরাই আজকাল কিয়ামত আগমনের ফিতনা সয়লাব করছে। এ কারণে গায়রে মুজতাহিদকে ইজতিহাদী মাসআলায় মুজতাহিদের তাকলীদ করা ওয়াজিব।

২নং প্রশ্ন

যে ব্যক্তিরা হাদীস ও তাফসীরের অনুবাদ পড়ে কাদিয়ানী হয়ে গেছে, তাদের এ অপূর্ণাঙ্গ তাহক্বীকের কারণে কিয়ামতের দিন তাদের বিষয়টিকে কোন পৃষ্ঠপোষকতা করা হবে কি না? তাদের জন্য এরকম পর্যায়ের তাহক্বীকের উপর নির্ভর করে নিজেদের এ আক্বিদা বানানো জায়েজ হয়েছে কি না? নাকি তাদের কোন প্রাজ্ঞ আলেমের অনুসরণ করা জরুরী ছিল? এরকম স্বাধীনচেতা মনোভাব থেকে বাঁচা জরুরী ছিল?

উত্তর

প্রথমেই অতিক্রান্ত হয়েছে যে, অযোগ্য ব্যক্তির কথাকে তাহক্বীক বলা হয় না। বরং এটি এলহাদ তথা ধর্মদ্রোহীতা। অনুবাদ পড়ে স্বীয় আক্বিদাকে দ্বীনের আবশ্যকীয় যেকোন বিষয়ের বিপরীত বানিয়ে নিল, তাহলে উক্ত ব্যক্তি পাক্কা কাফের। যদি অনুবাদ পড়ে আহলে সুন্নতের কোন জরুরী বিষয় থেকেও ফিরে যায়, তাহলে উক্ত ব্যক্তি আহলে সুন্নত থেকে খারিজ হয়ে গেছে। আর অযোগ্য হওয়া সত্বেও অনুবাদ আর স্বীয় মতামতের দ্বারা মুজতাহিদের সাথে বিরোধ করাটা সুষ্পষ্ট হারাম। রাসূল সাঃ বাইয়াত করানোর সময় পাকাপোক্তভাবে এ অঙ্গিকার নিতেন যে, ان لا تنازع الا مر اهلها তথা কোন যোগ্য ব্যক্তির সাথে বিরোধ করবে না। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২৮৬৬, বুখারী, হাদীস নং-৬৬৪৭, মুসলিম, হাদীস নং-১৬}

তাই এ বিরোধ সুষ্পষ্ট হারাম কাজ। যারা বড়দের সাথে বিদ্রোহ করে কাদিয়ানী হয়ে গেছে, কিংবা নাস্তিক বা মুনকিরীনে হাদীস তথা হাদীস অস্বিকারকারী বা মুনকিরীনে ফিক্বহ তথা ফিক্বহ অস্বিকারকারী হয়ে গেছে তারা যেসব পর্যায়ের বিদ্রোহ করেছে, এর কোন পৃষ্ঠপোষকতা কিয়ামতের দিন করা হবে না। তাদের উপর আবশ্যক হল, বিপথগামী স্বাধীনচেতা মনোভাব ছেড়ে দিয়ে এমন কোন মুজতাহিদের তাকলীদ করে, যারা মুজতাহিদ হওয়া উম্মতের ঐক্যমত্বে প্রমাণিত। এবং যার মাযহাব তার স্বীয় এলাকায় ক্লাস পদ্ধতিতে এবং ফাতাওয়া দেয়ার পদ্ধতিতে এবং আমল করা হিসেবে নিরবচ্ছিন্নসূত্রে চলে আসছে।

তৃতীয় প্রশ্ন

যদি কোন ব্যক্তি প্রাজ্ঞতাপূর্ণ ইলম রাখে না। আবার নিজের অপূর্ণাঙ্গ ইলমের উপর নির্ভরও করে না। কোন প্রাজ্ঞ আলেমের অনুসরণ করে থাকে। আলেম দলীল দিলে উক্ত দলীলের উপর পর্যালোচনা করা বা তাহক্বীক করার মত তার কোন যোগ্যতা নেই। তাহলে উক্ত ব্যক্তির জন্য তাকলীদ করা জায়েজ আছে এ হিসেবে যে, সে দলীল ছাড়া মাসআলা জিজ্ঞেস করে আমল করে নিবে?

উত্তর

শুদু জায়েজ নয়। বরং তার উপর ওয়াজিব হল তাকলীদ করা। হাদীসের কিতাব মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, কিতাবুল আসার, তাহজীবুল আসার এর মাঝে সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীগনের হাজারো ফাতাওয়া রয়েছে। যেখানে মুজতাহিদ মুফতী স্বীয় ফাতাওয়ার সাথে কোন আয়াত বা হাদীস দলীল হিসেবে পেশ করেননি। শুধুমাত্র মাসআলাটির হুকুম উল্লেখ করেছেন। আর সে সময়কার কোটি মানুষ দলীলহীন সেসব ফাতাওয়ার উপর আমল করতেন। এরই নাম তাকলীদ। যা খাইরুল কুরুন তথা নবীজী সাঃ এর বলা শ্রেষ্ঠ যুগে মুতাওয়াতির সূত্রে প্রমানিত। শুধু তাই  নয়, তাদের মাঝে লাখো মানুষ এমন ছিলেন, যাদের মাতৃভাষা ছিল আরবী। কিন্তু তারপরও তারা মুকাল্লিদ ছিলেন। এমনিভাবে চার ইমামগণ সাধারণ মানুষের জন্য যে ফিক্বহ ও ফাতাওয়ার কিতাব সংকলিত করেছেন, তার মাঝে লাখো মাসআলায় তারা দলীল হিসেবে কোন আয়াত বা হাদীস উপস্থাপন করেননি। বরং ফাতাওয়াগুলো দলীলহীনভাবে সংকলিত করেছেন। আর এসব ফাতাওয়ার উপর শতাব্দীর পর শতাব্দী হাজারো মুহাদ্দিসীন, মুফাসসিরীন, হাজারো ইসলামী রাষ্ট্র, হাজারো আওলিয়া, এবং কোটি সাধারণ মুসলমান দলীল জিজ্ঞেস করা ছাড়াই আমল করে আসছেন। আর এ তাক্বলীদও উম্মতের মাঝে আমল হিসেবে এবং ফাতাওয়া হিসেবে মুতাওয়াতির তথা নিরবচ্ছিন্ন সূত্র পরম্পরায় চলে এসেছে। বিশ্বব্যাপী বড় বড় ব্যাঘ্র পুরুষেরা এ সিলসিলার সাথে সন্নিবেশিত। তাই কোন আবোল তাবোল ব্যক্তি এসেই এ সুদৃঢ় বন্ধন ছিড়ে ফেলতে পারবে না।

৪ নং প্রশ্ন

আজকাল যে সাধারণ লোক নিজেদের আহলে হাদীস বলে দাবী করে থাকে, তারা কোন হাদীসের তাহক্বীক বা পর্যালোচনা করা যোগ্যতা রাখে না। শুধু তাদের মৌলবীদের বলার দ্বারা কোন হাদীসকে গ্রহণ করে বা ছেড়ে দিয়ে থাকে। এরকম লোকেরা যদি বলে যে, “আমরা আমাদের মৌলবীদের অনুসরণ করি না। কুরআন ও হাদীসের উপর তাহক্বীকের সাথে আমল করে থাকি”। তাহলে তারা কি মিথ্যা বলছে না? তাদের মিথ্যা বলার কারণে কি হাশরের ময়দানে বিচারকের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে না? তাদের এ মিথ্যাচার কোন পর্যায়ের?

উত্তর

আহলে হাদীস শব্দটি কুরআন হাদীসের কোথাও নেই। তবে অন্যন্য কিতাবের মাঝে আহলে হাদীস মুহাদ্দিসীনদের বলা হয়। যারা সনদের উপর মুজতাহিদের মত পর্যালোচনা করতে সক্ষম। যার মাঝে মুহাদ্দিসের শর্ত নেই, তাকে আহলে হাদীস বলা কিছুতেই জায়েজ নয়।  যেমন মির্যা কাদিয়ানীর মাঝে ইমাম মাহদী আঃ এর কোন শর্ত নেই। নেই ঈসা আঃ এর কোন শর্তও। নেই মুজাদ্দিদ হওয়ার কোন শর্তও। সেই সাথে মুসলমান হওয়ার কোন শর্তও তার মাঝে বিদ্যমান নেই। তাই তার ক্ষেত্রে এসবের কোন একটি শব্দ ব্যবহার করা হারাম।

এরা সুনিশ্চিতভাবে তাদের মৌলবীদের তাকলীদ করে থাকে। যেসব মৌলবী ইজতিহাদ বিষয়ে অজ্ঞ, শুধু তাই নয়, ওরাতো ইজতিহাদের সংজ্ঞা বিষয়েও অজ্ঞ। এটা খুবই আশ্চর্যের বিষয় হল, তাদের মৌলবীরা মুজতাহিদের সংজ্ঞাও জানে না। কিন্তু এ ফিরক্বাটি নিজেদের মৌলবীদের শুধু নবী নয়, বরং খোদ রাসূল সাঃ হিসেবে মেনে থাকে [নাউজুবিল্লাহ]। এ কারণেই তাদের মৌলবীর কথা যদি কেউ না মানে, তাহলে তারা একথা বলে না য, তাদের মৌলবীর কথা ওমুক ব্যক্তি মানে না। বরং তারা বলে থাকে যে, লোকটি রাসূল সাঃ এর কথা মানছে না। তাহলে কি দাঁড়াল? তাদের মৌলবীর কথা না মানা মানে হল রাসূল সাঃ এর কথা না মানা। তাহলে তারা তাদের মৌলবীদের নবীজী সাঃ বানিয়ে দেয় নাউজুবিল্লাহ। শুধু তাই নয়, যদি তাদের মৌলবীদের কথা না মানে, তাহলে তারা বলে বেড়ায় যে, উক্ত ব্যক্তি মুহাম্মদী নয়। কেননা, লোকটি মুহাম্মদ সাঃ এর কথা মানে নি।

অথচ লোকটি মানেনি তাদের মৌলবীর কথা। কিন্তু ওরা প্রচার করবে নবীজী সাঃ এর কথা না মানার।

এর চেয়ে জঘন্য মিথ্যাচার আর কী হতে পারে? কিন্তু এরকম মিথ্যাচারই হল এ ফিরক্বার মূল প্রণোদনা। এরকম মিথ্যাচারের জন্য অবশ্যই কিয়ামতের দিন তাদের জবাব দিতে হবে।

৫ নং প্রশ্ন

আজকালকার আহলে হাদীস সাধারণ লোক যারা না মুহাক্কিক, না মুকাল্লিদ, তাদের জন্য বর্তমান সময়ের মৌলবীদের অনুসরণ করাটা উত্তম হবে না পূর্ববর্তী নেককারদের অনুসরণ করা উত্তম ও নিরাপদ হবে? উত্তম পন্থা কোনটি? যদি বর্তমান সময়ের মৌলবীর অনুসরণ করতে হয়, তাহলে ইংলেন্ডে আহলে হাদীসরা কোন মৌলবী সাহেবের অনুসরণ করবে? যাকে আহলে হাদীসদের ইমাম বলে সম্বোধন করা যাবে?

উত্তর

এরকম লোকদের জন্য শুধু উত্তম নয়, বরং আবশ্যক হল তারা এমন কোন মুজতাহিদের তাকলীদ করবে, যার মুজতাহিদ হওয়া উম্মতের ঐক্যমত্বে প্রমাণিত। এবং তার উসূল ও শাখাগত মাসায়েল সংকলিত ও সংরক্ষিত হওয়ার সাথে আমল হিসেবে মুতাওয়াতিরও। এরকম মুজতাহিদকে ছেড়ে এমন মৌলবীর অনুসরণ করা যার মুজতাহিদ না শরয়ী দলীলের দ্বারা প্রমানিত, না তার উসুল ও শাখাগত মাসায়েল সংকলিত না সেটি মুতাওয়াতির। তাহলে এমন ব্যক্তি উক্ত হাদীসের লক্ষ্যস্থল হচ্ছে যেখানে রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুর্খদের নিজের দ্বীনের পথপ্রদর্শক বানিয়ে নিবে, আর ইলম ছাড়া ফাতাওয়া দিবে তখন সে নিজেও গোমরাহ হবে, আর অন্যদেরও গোমরাহ করবে। [বুখারী}

বৃটিনে বর্তমানে সুহাইব সাহেবকে বর্তমান সময়ে এ প্রকারের ইমাম বানানো যেতে পারে।

৬ নং প্রশ্ন

কুরুনে সালাসা তথা উত্তম তিন যুগ যে যুগ উত্তম হওয়ার সংবাদ হাদীসে এসেছে, সে সময়ের মুসলমানদের মাঝে এমন কোন দল ছিল, যারা না আলেম ছিল, না মুকাল্লিদ ছিল, অথচ সেসব ব্যক্তিদের আহলে হাদীস বলা হতো?

যদি থেকে থাকে, তাহলে দুটি উদ্ধৃতি দেয়ার অনুরোধ রইল। যদি সে সময়ে এমন কোন মুসলমান না থেকে থাকে, যাদের নাম ছিল আহলে হাদীস, অথচ তারা না মুজতাহিদ ছিল, না মুকাল্লিদ ছিল। যদি গোটা ইসলামী স¤্রাজ্যে এই নামে কোন ফিরক্বা না থেকে থাকে, তাহলে বর্তমানে যে ফেরক্বাটি আমাদের সমাজে বিদ্যমান, সেটি একটি নতুন বেদআতি ফিরক্বা পরিগণিত হবে কি না?

উত্তর

খাইরুল কুরুনতো দূরে থাক, কোন ইসলামী স¤্রাজ্যে এর কোন নাম-গন্ধও ছিল না। এ ফিরক্বাটির প্রতিষ্ঠাতারা রানী ভিক্টোরিয়ার প্রতিনিধির কাছে যে সুপারিশ নামা পেশ করেছিল, তার শব্দ ছিল এমন-

“হিন্দুস্তানের গ্রেট স¤্রাট! আল্লাহ তাআলা আপনার স¤্রাজ্যে বরকত দান করুন! যথাবিহিত সম্মান পূর্বক নিবেদন হল, আমরা আহলে হাদীস দলের প্রতিটি সদস্য আপনাদের খেদমতে মনের গভীর থেকে মুবারকবাদ জানাচ্ছি। আপনার রাজত্বে ধর্মীয় স্বাধীনতার যে নেয়ামত রয়েছে, তার বিশেষ সুযোগ সুবিধা এ দলটি ভোগ করছে। এ বিশেষ বৈশিষ্টের কারণ হল এই যে, ধর্ম বিষয়ে স্বাধীনতা এ দলটির এ রাজত্বেই রয়েছে। বিপরীত হল অন্য ইসলামী দলগুলো। তাদের অন্য ইসলামে রাজত্বে স্বাধীনতা রয়েছে।

এ বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি সুনিশ্চিত বিশ্বাস যে, এ রাজত্বের স্থায়িত্ব ও শাসনের প্রতি এ দলের সবচে’ বেশি আনন্দ ও মনের গভীর থেকে অধিক মুবারকবাদ রয়েছে। {এশাআতুস সুন্নাহ-৯/২০৬}

বিস্তারিত জানতে “আহলে হাদীস ও ইংরেজ” নাম নামক কিতাবটি দ্রষ্টব্য।

ইংরেজ রাজত্বের আগে, না তাদের কুরআনের কোন অনুবাদ ছিল, না হাদীসের কোন অনুবাদ ছিল। না তাদের কোন মসজিদ বা মাদরাসা ছিল। না ছিল কোন কবরস্থান। তাদের বেদআতি হওয়ার মাঝে সামান্যতম কোন সন্দেহ নেই।

ইমাম তাহতাবী রহঃ বলেনঃ من كان خارجا من هذه المذاهب الأربعة فهو من اهل البدعة والنار তথা যে ব্যক্তি এ চার মাযহাব [হানাফী, শাফেয়ী, মালেকী, হাম্বলী] থেকে বেরিয়ে যাবে, সে বেদআতি এবং জাহান্নামী। {তাহতাবী আলাদ্দুর}

প্রশ্ন নং-৭

বর্তমান জমানার গায়রে মুকাল্লিদদের সাথে আমরা আহলে সুন্নতের মতভেদ কি মৌলিক বিষয়ে? না শাখাগত বিষয়ে?

আর অন্য মাযহাবের মুকাল্লিদের সাথে আমাদের মতভেদ কি মৌলিক বিষয়ে না শাখাগত বিষয়ে? এ দুইয়ের মাঝে পার্থক্য কি?

মুজতাহিদের ভুল, আর সাধারণ্যের ভুলের মাঝে পার্থক্য কি?

সাধারণ লোক স্বীয় মর্জি মাফিক কোন মাসআলা গ্রহণ করলে কি সে ক্ষমা পাবে?

উত্তর

গায়রে মুকাল্লিদ যারা সাহাবায়ে কেরামকে সত্যের মাপকাঠি মানে না। মুতলকানভাবে ইসলামী ফিক্বহকে অস্বিকার করে ও বিরোধিতা করে। আর মুজতাহিদগণকে দ্বীনকে বিভক্তকারী হিসেবে আখ্যায়িত করে, আর কারামতকে শিরক বলে থাকে, সেই সাথে ইজমাকে মানে না, তাদের সাথে আহলে সুন্নতের মতভেদ উসূলী তথা মৌলিক বিষয়ে। আর বাকি গায়রে মুকাল্লিদরা বিদআতিদের মত আহলে সুন্নত থেকে খারিজ।

চার ইমামগণ রহঃ এর মুকাল্লিদগণ মৌলিক বিষয়ে একমত। শুধুমাত্র শাখাগত বিষয়ে মতভেদ আছে। এ কারণেই এ চার মাযহাবই আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের অন্তর্ভূক্ত।

তাদের মাঝে এটাই পার্থক্য যে, চার মাযহাবের মুকাল্লিদগণ আহলে সুন্নতের অন্তর্ভূক্ত। আর গায়রে মুকাল্লিদরা আহলে সুন্নত থেকে খারিজ একটি দল। মুজতাহিদের ইজতিহাদ যদি সঠিক হয়, তাহলে দুইটি সওয়াব। আর যদি ভুল হয়, তাহলে একটি সওয়াব। [বুখারী, মুসলিম]

যদিও মুজতাহিদ মাসুম তথা নিষ্পাপ নয়, তবে তারা মাতঊন তথা অভিশাপযোগ্য ব্যক্তিও নয়। তারা সর্ববস্থায় মা’জুর তথা সওয়াব পান। এ কারণে মুকাল্লিদের ভাবনার কিছু নেই, যদি কখনো তার মুজতাহিদ থেকে ভুল হয়েও থাকে, তবুও তার উপর আমল সুনিশ্চিতভাবে গ্রহণীয়। সেই সাথে সুনিশ্চিতভাবে একটি সওয়াব পাওয়া যাবে। আর দ্বিতীয় সওয়াবটি আল্লাহ তাআলার রহমাতের দ্বারা আশা রাখা যায়। এর ঠিক উল্টো হল অযোগ্য সাধারণ [গায়রে মুকাল্লিদ] যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, তাহলে সে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছলেও গোনাহ হবে। সেই সাথে সে হবে গোনাহগার। তার আমল মকবুল তথা গ্রহণীয় হবে না। [নববী শরহে মুসলিম]

শেষ পর্ব

0Shares

আরও জানুন

বাউল সম্প্রদায় সম্পর্কে একথাগুলো কি আমরা জানি?

সংগৃহিত  আমরা জানি না লালন আসলে কে? লালন ছিলেন বাউল সম্প্রদায়ের গুরু।আমরা কি জানি কারা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *