প্রচ্ছদ / আহলে হাদীস / ওয়াসওয়াসাঃ কুরআন ও হাদীস থেকে ইমাম আবূ হানীফা রহঃ কে অনুসরণের দলীল দিন

ওয়াসওয়াসাঃ কুরআন ও হাদীস থেকে ইমাম আবূ হানীফা রহঃ কে অনুসরণের দলীল দিন

প্রশ্ন

কুরআন ও হাদীস থেকে ইমাম আবূ হানীফা রহঃ কে অনুসরণের দলীল দিন। কুরআন ও হাদীস ছাড়া আর কোন কিছুই দলীল হতে পারে না।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

 

যদি তাই হয়, তাহলে আমাদের প্রশ্ন হল-

কুরআন ও হাদীস থেকে বুখারী মুসলিম, সিহাহ সিত্তার অনুসরণের উপর দলীল পেশ করুন।

বুখারীকে অন্য কিতাবের উপর প্রাধান্য দেয়ার দলীল পেশ করুন।

মুহাদ্দিসীনে কেরামের বানানো সহীহ, জঈফ, হাসান, মারফূ, মাকতু, মুরসাল, মুদাল্লিস ইত্যাদি পারিভাষিক শব্দ এবং তা মানার দলীল কুরআন ও হাদীস থেকে প্রদান করুন।

 

যদি তারা বলে যে, সিহাহ সিত্তার সংকলকগণতো নিজের পক্ষ থেকে কোন কিছু লেখেননি। তাই হাদীস মানার কথাতো হাদীসে এসেছে, তাই আমরা সিহাহ সিত্তাসহ হাদীসের কিতাবকে মানি।

তখন আমাদের জবাব হল, ঠিক একই কথা কেন ইমাম আবূ হানীফা রহঃ সহ চার ইমামের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য করছেন না? তারাওতো নিজের পক্ষ থেকে কোন কিছু সংযোজন করেননি। বরং কুরআন সুন্নাহ এবং সাহাবায়ে কেরাম রাঃ এর আমল এবং খোদাপ্রদত্ব ও অনুমোদিত ইজতিহাদী যোগ্যতায় ইজমা ও কিয়াসের আলোকে মাসআলা একত্রিত করেছেন। তাহলে তাদের আবিস্কৃত ফিক্বহ মানতে সমস্যা কোথায়? আমরাতো ব্যক্তি আবূ হানীফা রহঃ কে নয়,  বরং কুরআন ও সুন্নাহ এবং ইজমা কিয়াস ভিত্তিক দলীল নির্ভর ফিক্বহে মানি। হাদীস সংকলকের কথা গ্রহণযোগ্য হলে, মুজতাহিদ ফিক্বহ সংকলকের কথা কেন গ্রহণযোগ্য নয়?

একটি অবান্তর প্রশ্ন ও জবাব

চার মাযহাবের একটি মানা আবশ্যক কে করেছে? না কুরআনে একথা আছে, না হাদীসে আছে। তাই এ নির্ধারণ না-জায়েজ।

উত্তর

যদি তাই হয়, তাহলে কুরআনে কারীমে ৭কিরাতে নাজিল হয়েছিল। এক কিরাতে এখন সারা পৃথিবীতে পড়া হয়। এক কিরাতে কুরআন পড়াকে নির্ধারিত করা কুরআন  বা হাদীসের কোথায় আছে? তাহলে কথিত আহলে হাদীসরা কি ৭কিরাতে কুরআন পড়ে না এক কিরাতে? এক কিরাতে কুরআন পড়ার দ্বারা কি দ্বীনকে সীমাবদ্ধ করে ফেলা হয়নি? তাহলে এ নির্ধারণের হুকুম কি হবে?

শুধুমাত্র ছয় কিতাবকে সিহাহ বলে সিহাহ সিত্তা নামকরণ করা হয়েছে। সবাই এ ছয় কিতাবকে সিহাহ সিত্তা নামেই ডেকে থাকে। এবং অন্যান্য কিতাবের উপর এ ছয় কিতাবের হাদীসকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। প্রশ্ন হল, এ ছয় কিতাব ছাড়া কি সিহাহের আর কোন কিতাব নেই?

সহীহ ইবনে খুজাইমা, সহীই ইবনে হিব্বান, মুস্তাদরাক আলাস সাহিহাইনসহ আরো অসংখ্য হাদীসের কিতাব রয়েছে যাতে সহীহ হাদীস রয়েছে। কিন্তু সেসব কিতাবকে কেন সিহাহ বলে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি? ছয় কিতাবকে সিহাহ বলে ডাকার হুকুম আল্লাহ দিয়েছেন? না রাসূল সাঃ দিয়েছেন?

তাহলে এ ছয় কিতাবকে সিহাহ সিত্তাহ বলে ডাকা কি বিদআত?

সহজ কথায়, ৭ কিরাতকে এক কিরাতে সীমাবদ্ধ করার যে হুকুম, ছয় কিতাবকে সিহাহ সিত্তা বলার যে হুকুম, চার মাযহাব মানার একই হুকুম। আগের দু’টি বিষয় যদি জায়েজ ও মাননীয় হয়, তাহলে চার মাযহাব অনুসরণও মাননীয়। আর যদি আগের দু’টি না-জায়েজ হয়, তাহলে চার মাযহাব মানাও নাজায়েজ হবে।

যদি কথিত আহলে হাদীসদের সাহস থাকে, তাহলে আগের দু’টি বিষয়কে নাজায়েজ ও বিদআত বলে ফাতওয়া প্রকাশ করুক। তারপর চার মাযহাবকে না-জায়েজ ও বিদআত বলার ফাতওয়া প্রদান করুক।

আল্লাহ তাআলা আমাদের বিভ্রান্তকারীদের প্রতারণা থেকে সাধারণ মুসলমানদের ঈমান ও আমলকে হিফাযত করুন। আমীন।

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- [email protected]

[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

No comments

  1. Md. Abu Sufian Chowdhury

    Nice answer, i agree with it.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *