প্রচ্ছদ / আকিদা-বিশ্বাস / ট্যারো কার্ডের মাধ্যমে ভবিষ্যৎবাণী জানার হুকুম কী?

ট্যারো কার্ডের মাধ্যমে ভবিষ্যৎবাণী জানার হুকুম কী?

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম
বর্তমানে এক ধরনের কার্ডের মাধ্যমে ভবিষৎবাণী করা হচ্ছে।
এই কার্ডের নাম টেরোট কার্ড।
এটা কি হারাম না শির্ক?

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

ভবিষ্যতের সংবাদ প্রকৃতভাবে একমাত্র আল্লাহ তাআলাই জানেন। ‌আল্লাহ তাআলা ভবিষ্যতের সংবাদ যা কিছু ওহীর মাধ্যমে নবীকে জানিয়েছেন এছাড়া নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামেও ভবিষ্যতের সংবাদ বা গায়েবের সংবাদ জানতেন না। যতটুকু আল্লাহ জানিয়েছেন কেবল ততটুকুই জানতেন।

সুতরাং গায়েবের সংবাদ বা ভবিষ্যতের বিষয় প্রকৃত অর্থে কেবল আল্লাহ তাআলাই জানেন।

সুতরাং কারো ক্ষেত্রে যদি এমন বিশ্বাস করা হয় যে, তিনি ভবিষ্যতের সংবাদ জানেন, তাহলে এটি যেমন কুফরী, তেমনি আল্লাহর সিফাতের সাথে শিরকের অন্তর্ভুক্ত।

তাই ‘টেরোট’ কার্ডের মাধ্যমে ভবিষ্যত জানা যায়, বিশ্বাস করা কুফরী হবার সাথে সাথে শিরকেরও অন্তর্ভুক্ত হবে। তাই এহেন ভ্রান্ত বিশ্বাস থেকে বিরত থাকা প্রতিটি ঈমানদের জন্য আবশ্যক।

 

وَعِندَهُ مَفَاتِحُ الْغَيْبِ لَا يَعْلَمُهَا إِلَّا هُوَ ۚ وَيَعْلَمُ مَا فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ ۚ وَمَا تَسْقُطُ مِن وَرَقَةٍ إِلَّا يَعْلَمُهَا وَلَا حَبَّةٍ فِي ظُلُمَاتِ الْأَرْضِ وَلَا رَطْبٍ وَلَا يَابِسٍ إِلَّا فِي كِتَابٍ مُّبِينٍ [٦:٥٩]

তাঁর কাছেই অদৃশ্য জগতের চাবি রয়েছে। এ গুলো তিনি ব্যতীত কেউ জানে না। স্থলে ও জলে যা আছে, তিনিই জানেন। কোন পাতা ঝরে না; কিন্তু তিনি তা জানেন। কোন শস্য কণা মৃত্তিকার অন্ধকার অংশে পতিত হয় না এবং কোন আর্দ্র ও শুস্ক দ্রব্য পতিত হয় না; কিন্তু তা সব প্রকাশ্য গ্রন্থে রয়েছে। [সূরা আনআম-৫৯]

قُل لَّا أَقُولُ لَكُمْ عِندِي خَزَائِنُ اللَّهِ وَلَا أَعْلَمُ الْغَيْبَ وَلَا أَقُولُ لَكُمْ إِنِّي مَلَكٌ ۖ إِنْ أَتَّبِعُ إِلَّا مَا يُوحَىٰ إِلَيَّ ۚ قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الْأَعْمَىٰ وَالْبَصِيرُ ۚ أَفَلَا تَتَفَكَّرُونَ [٦:٥٠]

আপনি বলুনঃ আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে। তাছাড়া আমি অদৃশ্য বিষয় অবগতও নই। আমি এমন বলি না যে, আমি ফেরেশতা। আমি তো শুধু ঐ ওহীর অনুসরণ করি, যা আমার কাছে আসে। আপনি বলে দিনঃ অন্ধ ও চক্ষুমান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা কর না? [সূরা আনআম-৫০]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: مَنْ أَتَى كَاهِنًا قَالَ مُوسَى فِي حَدِيثِهِ فَصَدَّقَهُ بِمَا يَقُولُ ثُمَّ اتَّفَقَا أَوْ أَتَى امْرَأَةً قَالَ مُسَدَّدٌ: امْرَأَتَهُ حَائِضًا أَوْ أَتَى امْرَأَةً قَالَ مُسَدَّدٌ: امْرَأَتَهُ فِي دُبُرِهَا فَقَدْ بَرِئَ مِمَّا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি কোন গণকের নিকট যায়; রাবী মূসা বলেনঃ আর সে ব্যক্তি তার কথায় বিশ্বাস করে; অথবা সে তাঁর স্ত্রীর নিকট গমন করে। রাবী মুসাদ্দাদ (রহঃ) বলেনঃ অথবা সে তার স্ত্রীর পশ্চাদদ্বারে সংগম করে; সে যেন আল্লাহ তা’আলা কর্তৃক মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর নাযিলকৃত দীন হতে মুক্ত (অর্থাৎ গুমরাহ) হলো। [সুনানে আবূ দাউদ, হাদীস নং-৩৯০৪, ইফাবা-৩৮৬৪]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ مَنْ أَتَى حَائِضًا أَوِ امْرَأَةً فِي دُبُرِهَا أَوْ كَاهِنًا فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন কেউ হায়য বিশিষ্ট মহিলার সাথে সঙ্গম করলে বা স্ত্রীর পশ্চাৎদ্বার দিয়ে মিলিত হলে বা গণকের কাছে গেলে সে যেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি অবতীর্ণ বিষয়সমূহের সাথে কুফরী করল। [জামে তিরমিজী, হাদীস নং, ইফাবা-১৩৫, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৬৩৯]

عَنْ صَفِيَّةَ، عَنْ بَعْضِ، أَزْوَاجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ مَنْ أَتَى عَرَّافًا فَسَأَلَهُ عَنْ شَىْءٍ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلاَةٌ أَرْبَعِينَ لَيْلَةً

হযরত সাফীয়্যাহ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন স্ত্রীর সুত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আররাফ (গণকের) কাছে গেল এবং তাকে কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসা করল, চল্লিশ রাত তার কোন সালাত কবুল করা হয় না। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৬২৭]

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।

ইমেইল[email protected] 

 

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *