প্রচ্ছদ / নির্বাচিত / হাদীস সংরক্ষণে নবীজী সাঃ কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেননি? হাদীস লিখতে কেন নিষেধ করা হয়েছিল?

হাদীস সংরক্ষণে নবীজী সাঃ কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেননি? হাদীস লিখতে কেন নিষেধ করা হয়েছিল?

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

বর্তমান যুগে কতিপয় জেনারেল শিক্ষিত ব্যক্তিদের মাঝে মুনকিরীনে হাদীস তথা হাদীস অস্বিকারকারী দলের আবির্ভাব হয়েছে। তাদের পড়াশোনার কমতি কিংবা ইসলাম ধর্মকে সাধারণ মানুষের সামনে বিতর্কিত করতে ইসলামের অপরিহার্য অংশ হাদীসে নববীকে অস্বিকার করে থাকে।

সেই অস্বিকারের নোংরা মনোবৃত্তিকে প্রমাণ করতে আবার হাদীসেরই সহায়তা নিয়ে বলে যে, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামগণকে তাঁর হাদীস লিখতে নিষেধ করেছেন।

আরো বলে যে, আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআন সংরক্ষণে উদ্যোগ নিলেও হাদীস সংরক্ষণে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেননি।

এসব কথা বলে উম্মতকে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী থেকে দূরে রাখার ঘৃণ্য চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে।

আমরা এ দু’টি মিথ্যা অপবাদের হাকীকত আজকের লেখায় পরিস্কার হবার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।

হাদীস লিখতে নিষেধ করার অর্থ কী?

কুরআনে কারীমের সাথে মিশে যাবার আশংকায় আমভাবে প্রথম প্রথম নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীস লিখতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু হাদীস মুখস্ত করতে ও বর্ণনা করতে কখনোই নিষেধ করেননি।

যেমন হাদীস লিখতে নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কিত হাদীসটিতেই পরিস্কার আসছে যে,

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ لاَ تَكْتُبُوا عَنِّي وَمَنْ كَتَبَ عَنِّي غَيْرَ الْقُرْآنِ فَلْيَمْحُهُ وَحَدِّثُوا عَنِّي وَلاَ حَرَجَ وَمَنْ كَذَبَ عَلَىَّ  قَالَ هَمَّامٌ أَحْسِبُهُ قَالَ – مُتَعَمِّدًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমার বাণী তোমরা লিপিবদ্ধ করো না। কুরআন ব্যাতিত কেউ যদি আমার বাণী লিপিবদ্ধ করে থাকে তবে যেন তা মুছে ফেলে। আমার হাদীস বর্ণনা কর, এতে কোন অসুবিধা নেই। যে ব্যাক্তি আমার উপর মিথ্যারোপ করবে- হাম্মাম (রহঃ) বলেন, আমার মনে হয় তিনি বলেছেন, ইচ্ছাকৃতভাবে; তবে সে যেন জাহান্নামে তাঁর ঠিকানা বানিয়ে নেয়। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৩০০৪, ইফাবা-৭২৩৮]

এখানে হাদীসে ‘লিখতে’ নিষেধ করা হলেও ‘হাদীস’ মৌখিক বর্ণনা করতে নিষেধ করা হয়নি। তাহলে এ হাদীস পেশ করে ‘হাদীস সংকলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে’ বলা পরিস্কার নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর মিথ্যারোপ করা। আর নবীজীর উপর মিথ্যারোপকারী জাহান্নামে নিজের ঠিকানা বানালো বলে উক্ত হাদীসেই বলা হয়েছে।

এছাড়া আরো একাধিক হাদীসে মৌখিকভাবে হাদীস মুখস্ত করতে ও তা অন্যদের কাছে পৌঁছে দিতে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেন।

যেমন

عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: نَضَّرَ اللَّهُ امْرَأً سَمِعَ مِنَّا حَدِيثًا، فَحَفِظَهُ حَتَّى يُبَلِّغَهُ، فَرُبَّ حَامِلِ فِقْهٍ إِلَى مَنْ هُوَ أَفْقَهُ مِنْهُ، وَرُبَّ حَامِلِ فِقْهٍ لَيْسَ بِفَقِيهٍ صحيح

যায়িদ ইবনু সাবিত (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি আমার নিকট থেকে হাদীস শুনে তা মুখস্থ রাখলো এবং অন্যের নিকটও তা পৌঁছে দিলো, আল্লাহ তাকে চিরউজ্জ্বল করে রাখবেন। জ্ঞানের অনেক বাহক তার চেয়ে অধিক সমঝদার লোকের নিকট তার বহন নিয়ে যায়; যদিও জ্ঞানের বহু বাহক নিজেরা জ্ঞানী নয়। [সুনানে আবূ দাউদ, হাদীস নং-৩৬৬০]

عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ نَضَّرَ اللَّهُ امْرَأً سَمِعَ مِنَّا شَيْئًا فَبَلَّغَهُ كَمَا سَمِعَ فَرُبَّ مُبَلَّغٍ أَوْعَى مِنْ سَامِعٍ

আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ “-কে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহ তা’আলা সেই ব্যক্তিকে আলোকোজ্জ্বল করুন, যে আমার কোন কথা শুনেছে এবং যেভাবে শুনেছে সেভাবেই অন্যের নিকট তা (জ্ঞান) পৌঁছে দিয়েছে। এমন অনেক ব্যক্তি আছে যার নিকট ইলম পৌছানো হয় তিনি শ্রোতার চেয়ে বেশি হৃদয়ঙ্গমকারী হয়ে থাকেন। [সুনানে আবূ দাউদ, হাদীস নং-২৬৫৭]

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏ “‏ نَضَّرَ اللَّهُ عَبْدًا سَمِعَ مَقَالَتِي فَوَعَاهَا ثُمَّ بَلَّغَهَا عَنِّي فَرُبَّ حَامِلِ فِقْهٍ غَيْرِ فَقِيهٍ وَرُبَّ حَامِلِ فِقْهٍ إِلَى مَنْ هُوَ أَفْقَهُ مِنْهُ ‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ সেই বান্দাকে সৌন্দর্যমন্ডিত করুন যে আমার বক্তব্য শুনে তা স্মৃতিতে ধারণ করেছে, অতঃপর আমার পক্ষ থেকে তা (অন্যদের নিকট) প্রচার করেছে। কতক জ্ঞানের বাহক নিজেরাই জ্ঞানী নয় এবং কতক জ্ঞানের বাহক যাদের নিকট তা পৌঁছে দেয় তারা তাদের চেয়ে অধিক সমঝদার হতে পারে। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২৩৬]

عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَامَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ بِالْخَيْفِ مِنْ مِنًى فَقَالَ ‏ “‏ نَضَّرَ اللَّهُ امْرَأً سَمِعَ مَقَالَتِي فَبَلَّغَهَا

মুহাম্মাদ ইবনে জুবায়ের ইবনে মুতইম (রহঃ) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিনার মসজিদুল খায়ফ-এ দাঁড়িয়ে বলেনঃ আল্লাহ তা‘আলা সেই ব্যক্তিকে সজীব ও আলোকোজ্জ্বল করে রাখুন যে আমার কথা শোনে, অতঃপর তা (অন্যদের নিকট) পৌঁছে দেয়। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৩০৫৬]

এখানে লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো: মুনকিরীনে হাদীসরা ‘হাদীস অস্বিকার করে থাকে’। তাহলে তারা ‘হাদীস লেখা নিষেধ’ সম্পর্কিত হাদীস পেশ করে হাদীস সংকলন নিষেধের প্রমাণ পেশ করা এটা তাদের দ্বিচারিতা ছাড়া আর কী?

এ হাদীস মানার অর্থই হলো তারা হাদীস মানেন। না মানলে দলীল দেয় কিভাবে? তাহলে এক হাদীস মেনে বাকি হাদীস অস্বিকার করা ভণ্ডামী ছাড়া আর কী?

আর যদি এ হাদীসকে ‘হাদীস’ না মানে, তাহলে ‘হাদীস লিখতে নিষেধ হওয়া’ মর্মে কুরআনের কোন আয়াত দেখানো তাদের দায়িত্ব। যেহেতু তাদের কাছে দলীল ও হুজ্জত কেবল কুরআন। যদি কুরআন থেকে ‘হাদীস লেখা নিষেধ’ দেখাতে না পারে, তাহলে হাদীস অস্বিকার করে আবার হাদীস দিয়ে ‘হাদীস লেখা নিষেধ’ প্রমাণ করা প্রতারণা বৈ আর কী?

প্রথম প্রথম কেন হাদীস লিখতে নিষেধ করা হয়েছিল?

ইমাম খাত্তাবী রহঃ লিখেছেন:

إنما نهى أن يكتب الحديث مع القرآن في صحيفة واحدة لئلا يختلط به ويشتبه على القارىء فأما أن يكون نفس الكتاب محظوراً وتقييد العلم بالخط منهياً عنه فلا

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাতায় কুরআনের সাথে হাদীস লিখতে নিষেধ করেছেন। যেন কুরআন ও হাদীস মিশ্রিত হয়ে না যায়। যার ফলে কোন পাঠকের জন্য যেন তা বিভ্রান্তিকর না হয়।

হাদীস লেখা ও ইলম কলমবদ্ধ করার যে বিষয়টি রয়েছে, এটি মৌলিকভাবে কখনোই নিষিদ্ধ ছিল না। [মাআলিমুস সুনান-৪/১৮৪]

প্রথম প্রথম বা কতিপয় সাহাবীকে কুরআনের সাথে হাদীস লিখতে নিষেধ করলেও অনেক সাহাবাগণকে হাদীস লিখে রাখতে নির্দেশনাও দিয়েছেন।

যেমন

عَنْ ‌أَبِي هُرَيْرَةَ : أَنَّ خُزَاعَةَ قَتَلُوا رَجُلًا مِنْ بَنِي لَيْثٍ عَامَ فَتْحِ مَكَّةَ بِقَتِيلٍ مِنْهُمْ قَتَلُوهُ، فَأُخْبِرَ بِذَلِكَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَرَكِبَ رَاحِلَتَهُ، فَخَطَبَ فَقَالَ: إِنَّ اللهَ حَبَسَ عَنْ مَكَّةَ الْقَتْلَ، أَوِ الْفِيلَ، شَكَّ أَبُو عَبْدِ اللهِ: وَسَلَّطَ عَلَيْهِمْ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالْمُؤْمِنِينَ، أَلَا وَإِنَّهَا لَمْ تَحِلَّ لِأَحَدٍ قَبْلِي، وَلَمْ تَحِلَّ لِأَحَدٍ بَعْدِي، أَلَا وَإِنَّهَا حَلَّتْ لِي سَاعَةً مِنْ نَهَارٍ، أَلَا وَإِنَّهَا سَاعَتِي هَذِهِ حَرَامٌ، لَا يُخْتَلَى شَوْكُهَا، وَلَا يُعْضَدُ شَجَرُهَا، وَلَا تُلْتَقَطُ سَاقِطَتُهَا إِلَّا لِمُنْشِدٍ، فَمَنْ قُتِلَ فَهُوَ بِخَيْرِ النَّظَرَيْنِ، إِمَّا أَنْ يُعْقَلَ، وَإِمَّا أَنْ يُقَادَ أَهْلُ الْقَتِيلِ. فَجَاءَ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْيَمَنِ فَقَالَ: اكْتُبْ لِي يَا رَسُولَ اللهِ. فَقَالَ: ‌اكْتُبُوا ‌لِأَبِي فُلَانٍ. فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ قُرَيْشٍ: إِلَّا الْإِذْخِرَ يَا رَسُولَ اللهِ؛ فَإِنَّا نَجْعَلُهُ فِي بُيُوتِنَا وَقُبُورِنَا. فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِلَّا الْإِذْخِرَ، إِلَّا الْإِذْخِرَ

قَالَ أَبُو عَبْدِ اللهِ: يُقَالُ: يُقَادُ بِالْقَافِ، فَقِيلَ لِأَبِي عَبْدِ اللهِ: أَيُّ شَيْءٍ كَتَبَ لَهُ؟ قَالَ: كَتَبَ لَهُ هَذِهِ الْخُطْبَةَ

আবূ নু‘আয়ম ফাযল ইবনু দুকায়ন (রহঃ) …. আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, মক্কা বিজয়ের কালে খুযা‘আ গোত্র লায়স গোত্রের এক ব্যাক্তিকে হত্যা করল। এ হত্যা ছিল তাদের এক নিহত ব্যাক্তির প্রতিশোধ স্বরূপ, যাকে ইতিপূর্বে লায়স গোত্রের লোক হত্যা করেছিল। তারপর এ খবর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পোঁছল। তিনি তাঁর উটের উপর আরোহণ করে খুতবা দিলেন, তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা‘আলা মক্কা থেকে ‘হত্যা’- কে (অথবা বর্ণনাকারী বললেন) ‘হাতী’-কে রোধ করেছেন। ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘হত্যা’ বলেছেন না ‘হাতী’ বলেছেন এ ব্যাপারে বর্ণনাকারী আবূ নু‘আয়ম সন্দেহ পোষণ করেন। অন্যেরা শুধু ‘হাতী’ শব্দ উল্লেখ করেছেন। অবশ্য মক্কাবাসীদের উপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং মু’মিনগনকে (যুদ্ধের মাধ্যমে) বিজয়ী করা হয়েছে। জেনে রাখ, আমার পূর্বে কারো জন্য মক্কা (নগরীতে লড়াই করা) হালাল করা হয়নি এবং আমার পরও কারো জন্য হালাল হবে না।

জেনে রাখ, তাও আমার জন্য দিনের কিছু সময় মাত্র হালাল করা হয়েছিল। আরো জেনে রাখ, আমার এই কথা বলার মুহূর্তে আবার তা হারাম হয়ে গেছে। সেখানকার কোন কাঁটা ও কোন গাছপালা কাটা যাবে না এবং সেখানে পড়ে থাকে কোন বস্তু কুড়িয়ে নেওয়া যাবেনা। তবে ঘোষণা করার জন্য নিতে পারবে। আর যদি কেউ নিহত হয়, তবে তার আপনজনের জন্য দুটি ব্যবস্থার যে কোন একটির অধিকার রয়েছে। হয় তার ‘দিয়াত নিবে নয় ‘কিসাস’ গ্রহণ করবে। এরপর ইয়ামানবাসী এক ব্যাক্তি এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! (এ কথাগুলো) আমাকে লিখে দিন। তিনি (সাহাবীদের) বললেনঃ তোমরা তাকে (আবূ শাহকে) লিখে দাও। তারপর একজন কুরায়শী [আব্বাস (রাঃ)] বললেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! গাছপালা কাটার নিষেধাজ্ঞা হতে ইযখির বাদ রাখুন। কারণ তা আমরা আমাদের ঘরে ও কবরে ব্যবহার করি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘ইযখির ছাড়া, ইযখির ছাড়া।

আবূ আব্দুল্লাহকে জিজ্ঞাসা করা হলো: কোন জিনিস তাকে লিখে দিতে বলা হয়েছি? জবাবে তিনি বলেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়াসাল্লামের বক্তৃতাটি। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১১২, ইফাবা-১১৩]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ كَانَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ يَجْلِسُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَيَسْمَعُ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الْحَدِيثَ فَيُعْجِبُهُ وَلاَ يَحْفَظُهُ فَشَكَا ذَلِكَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أَسْمَعُ مِنْكَ الْحَدِيثَ فَيُعْجِبُنِي وَلاَ أَحْفَظُهُ ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ اسْتَعِنْ بِيَمِينِكَ ‏”‏ ‏.‏ وَأَوْمَأَ بِيَدِهِ لِلْخَطِّ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক আনসারী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মজলিসে বসতেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট থেকে হাদীস শুনতেন। হাদীসগুলো তাঁর খুব ভাল লাগত কিন্তু তিনি তা মনে রাখতে পারতেন না। পরে এই বিষয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তিনি তাঁর অবস্থা বর্ণনা করে বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমি তো আপনার নিকট থেকে হাদীস শুনি, যা আমার কাছে খুব ভাল লাগে কিন্তু তা আমি মনে রাখতে পারি না। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তোমার ডান হাতের সাহায্য নাও। এ কথা বলার সময় তিনি তাঁর হাত দিয়ে লেখার ইঙ্গিত করলেন। [জামে তিরমিজী, হাদীস নং-২৬৬৬]

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ: قَالَتْ لِي قُرَيْشٌ: تَكْتُبُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَإِنَّمَا هُوَ بَشَرٌ يَغْضَبُ كَمَا يَغْضَبُ الْبَشَرُ، فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ قُرَيْشًا، تَقُولُ: تَكْتُبُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَإِنَّمَا هُوَ بَشَرٌ يَغْضَبُ كَمَا يَغْضَبُ الْبَشَرُ، قَالَ: فَأَوْمَأَ إِلَى شَفَتَيْهِ، فَقَالَ: وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ ‌مَا ‌يَخْرُجُ ‌مِمَّا ‌بَيْنَهُمَا إِلَّا حَقٌّ فَاكْتُبْ

আব্দুল্লাহ বিন আমর রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে কুরাইশরা বললো যে, তুমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথাগুলো লিখে রাখো। অথচ তিনিতো মানুষ। অন্য মানুষদের মতোই কখনো কখনো রাগাম্বিত হোন। তখন আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আসলাম। বললাম: হে আল্লাহর রাসূল! কুরাইশরা বলে যে, তুমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সব কথা লিখে রাখো, অথচ তিনিতো মানুষ, তাই কখনো কখনো অন্য মানুষদের মতোই রেগে যান। তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় দু’টি ঠোটের দিকে ইশারা করে বললেন, ঐ সত্ত্বার কসম! যার হাতে আমার প্রাণ! এ দু’টির মাঝ থেকে একমাত্র হক ছাড়া অন্য কিছু বের হয় না। সুতরাং তুমি নির্বিঘ্নে লিখে রাখো। [মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন, হাদীস নং-৩৫৭]

عَنْ رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ، قَالَ: خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: تَحَدَّثُوا وَلْيَتَبَوَّأْ مَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مَقْعَدَهُ مِنْ جَهَنَّمَ ، قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّا نَسْمَعُ مِنْكَ أَشْيَاءَ فَنَكْتُبُهَا، فَقَالَ: ‌اكْتُبُوا ‌وَلَا ‌حَرَجَ

হযরত রাফে বিন খাদীজ রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে আসলেন। এসে বললেন, তোমরা হাদীস বর্ণনা কর। যারা আমার নামে মিথ্যা বলবে, তাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা আপনার কাছ থেকে কিছু বিষয় শুনি। তারপর তা লিখে রাখি। তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, লিখে রাখো। কোন সমস্যা নেই। [আলমু’জামুল কাবীর লিততাবরানী, হাদীস নং-৪৪১০, মাযমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস নং-৬৭৭]

সাহবায়ে কেরামগণ হাদীস লিখে রাখতেন:

أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ مَا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم أَحَدٌ أَكْثَرَ حَدِيثًا عَنْهُ مِنِّي، إِلاَّ مَا كَانَ مِنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو فَإِنَّهُ كَانَ يَكْتُبُ وَلاَ أَكْتُبُ‏

আবূ হুরাইরাহ রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম –এর সাহাবীগণের মধ্যে ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আমর রাঃ ব্যতীত আর কারো নিকট আমার চেয়ে অধিক হাদীস নেই। কারণ তিনি লিখতেন, আর আমি লিখতাম না। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১১৩, ইফাবা-১১৪]

আমরা ইতোপূর্বের হাদীসের মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর রাঃ কে হাদীস লিখে রাখার অনুমতি প্রদান করেছেন। সে কারণে তার কাছে হাদীসের একটি বিশাল ভাণ্ডার ছিল। এ বিষয়ে হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ মন্তব্য করছেন যে, আমি লিখতাম না বলে, আমার কাছে কম ছিল। কিন্তু আব্দুল্লাহ বিন আমর লিখতো বলে তার কাছে হাদীস বেশি ছিল।

أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّا نَسْمَعُ مِنْكَ أَحَادِيثَ أَفَتَأْذَنُ لِي فَأَكْتُبَهَا؟ قَالَ: نَعَمْ قَالَ: فَكَانَ أَوَّلُ مَا كَتَبَ بِهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى ‌أَهْلِ ‌مَكَّةَ ‌كِتَابًا

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস রাঃ বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা আপনার কাছ থেকে হাদীস শুনি। আপনি কি আমাদের তা লিখে রাখার অনুমতি প্রদান করেন? নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হ্যাঁ। সুতরাং তাতে প্রথম লেখা সেটা ছিল, যা নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কাবাসীর প্রতি লিখে ছিলেন। [মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, বর্ণনা নং-১৪২২২]

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস রাঃ এর উক্ত হাদীসের কিতাব বিষয়ে ইমামুল মুফাসসিরীন কিবারে তাবেয়ী হযরত মুজাহিদ রহঃ [মৃত্যু ১০০ হিজরী] বলেন:

عَنْ مُجَاهِدٍ قَالَ: رَأَيْتُ عِنْدَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو صَحِيفَةً فَسَأَلْتُهُ عَنْهَا فَقَالَ: هَذِهِ الصَّادِقَةُ فِيهَا مَا سَمِعْتُ مِنَ رَسُولِ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – ‌لَيْسَ ‌بَيْنِي ‌وبينه ‌أَحَدٌ  

হযরত মুজাহিদ রহঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আব্দুল্লাহ বিন আমর রাঃ এর কাছে একটি কিতাব দেখতে পেলাম। আমি এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসা করলাম। তখন তিনি বললেন যে, এটা ঐ ‘সাদেকা গ্রন্থ’ যাতে তা আছে যা আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছ থেকে সরাসরি শুনেছি। [তবক্বাতুল কুবরা লিইবনে সা’দ-৭/৩৪৩, তারীখে দিমাশক লিইবনে আসাকীর, মৃত্যু ৫৭১,-৩/২৬২, উসদুল গাবাহ ফী মা’রিফাতিস সাহাবাহ লিইবনুল আছীর, মৃত্যু ৬৩০, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ৩৪৫, রাবী নং-৩০৯২]

উক্ত হাদীসের কিতাবটি হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর রাঃ এর কাছে বছরের পর বছর ছিল। আব্দুল্লাহ বিন আমর রাঃ এর নাতির ছেলে আমর বিন শুয়াইব রহঃ উক্ত গ্রন্থটি পড়াতেন। হাদীসের কিতাবে উক্ত সনদে যে হাদীস বর্ণিত হয়েছে তা এই সনদে عمرو بن شعيب عن ابيه عن جده সূত্রে যত হাদীস বর্ণিত, তা উক্ত কিতাব থেকেই গৃহিত।

عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَتَبَ كِتَابَ الصَّدَقَةِ فَلَمْ يُخْرِجْهُ إِلَى عُمَّالِهِ حَتَّى قُبِضَ فَقَرَنَهُ بِسَيْفِهِ فَلَمَّا قُبِضَ عَمِلَ بِهِ أَبُو بَكْرٍ حَتَّى قُبِضَ وَعُمَرُ حَتَّى قُبِضَ

সালিম তদীয় পিতা ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাদাকা-যাকাত সম্পর্কিত একটি পত্র তৈরী করেন এবং সেটি তলোয়ারের সাথে মিলিয়ে সংরক্ষিত করে রাখেন। ইন্তেকাল পর্যন্ত আর তিনি তা বের করে আনেননি। যাকাত সংগ্রহকারী কর্মকর্তাদের জন্য সেটি প্রেরণ করতে পারেননি। তাঁর ইন্তেকালের পর আবূ বকর (রাঃ) ও তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত এবং উমার (রাঃ) ও তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত এতদ্ অনুসারে আমল করেছেন। [জামে তিরমিজী, হাদীস নং-৬২১, ইফাবা-৬১৯, সুনানে আবূ দাউদ, হাদীস নং-১৫৬৮]

عَنْ ‌أَبِي بَكْرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ ، عَنْ ‌أَبِيهِ ، عَنْ ‌جَدِّهِ «أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ‌كَتَبَ ‌إِلَى ‌أَهْلِ ‌الْيَمَنِ كِتَابًا فِيهِ الْفَرَائِضُ وَالسُّنَنُ وَالدِّيَاتُ، وَبَعَثَ بِهِ مَعَ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ، فَقُرِئَتْ عَلَى أَهْلِ الْيَمَنِ

আবু বকর ইবন মুহাম্মাদ ইবন আমর ইবন হাযম (রহঃ) তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইয়ামানবাসীদেরকে এক চিঠি লেখেন, যাতে ফরয, সুন্নাত এবং দিয়াত সম্বন্ধে লিখছিলেন। আর তিনি তা আমর ইবন হাযমের মাধ্যমে পাঠান। ইয়ামানবাসীদেরকে তা পড়ে শোনানো হয়। [সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৪৮৫৩]

এ নুসখাটির হাদীস সুনানে নাসায়ী, মুসনাদে আহমাদ, ইমাম আবূ দাউদের কিতাবুল মারাসীল, সুনানে দারামী, মুসনাদে আবূ ইয়ালা মুসিলী, মুয়াত্তা মালেক এবং মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইনে বর্ণিত আছে। মুস্তাদরাকের কিতাবুয যাকাতে উক্ত নুসখা থেকে ৬৩টি হাদীস নকল করা হয়েছে। এমনিভাবে সুনানে দারা কুতনী, সুনানে বায়হাকী ইত্যাদি গ্রন্থের বিভিন্ন শিরোনামের অধ্যায়ে উক্ত নুসখাটির হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

এছাড়া সহীফায়ে আলী মুরতাজা রাঃ, হযরত আমর বিন আস রাঃ এর সহীফায়ে সাদেক্বাহ, সহীফায়ে জাবের রাঃ, সহীফায়ে ছামুরা বিন জুনদুব রাঃ, কিতাবে মুয়াজ বিন জাবাল রাঃ, কিতাবে আব্দুল্লাহ বিন উমর রাঃ, কিতাবে ইবনে আব্বাস রাঃ, কিতাব সা’দ বিন উবাদাহ রাঃ সহ অনেক সাহাবীগণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শ্রবণ করা হাদীসসমূহ কিতাব আকারে, কেউবা ছোট্ট পুস্তিকা আকারে লিপিবদ্ধ করেছেন।

সেখান থেকেই পরবর্তী মুহাদ্দিসগণ হাদীস গ্রহণ করেছেন। এছাড়া মুখস্তের মাধ্যমেও হাদীস সংরক্ষণ করা হয়েছিল।

সুতরাং একথা বলা যে, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় হাদীস সংরক্ষণে কোন প্রচেষ্টা করেননি। কিংবা সাহাবীগণ হাদীস সংরক্ষণ করেননি, এটা সম্পূর্ণই অজ্ঞতা কিংবা পরিস্কার মিথ্যাচার।

আরও জানুন

মুসলমানদের জন্য হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসবে গমণ এবং মুবারকবাদ দেয়ার হুকুম কী?

প্রশ্ন মুসলমানদের জন্য হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসবে গমণ এবং মুবারকবাদ দেয়ার হুকুম কী? উত্তর بسم الله …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *