লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
নেককার লোকেরা করে মারা যাবে
عَنْ مِرْدَاسٍ الأَسْلَمِيِّ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَذْهَبُ الصَّالِحُونَ الأَوَّلُ فَالأَوَّلُ وَيَبْقَى حُفَالَةٌ كَحُفَالَةِ الشَّعِيرِ أَوْ التَّمْرِ لاَ يُبَالِيهِمْ اللهُ بَالَةً قَالَ أَبُو عَبْد اللهِ يُقَالُ حُفَالَةٌ وَحُثَالَةٌ
মিরদাস আসলামী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,নেক্কার ব্যক্তিরা একে একে চলে যাবেন। আর অবশিষ্টরা যব ও খেজুরের অব্যবহার্য অংশের মত পড়ে থাকবে। আল্লাহ্ এদের প্রতি গ্রাহ্যও করবেন না। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলার কাছে তাদের কোন মূল্য থাকবে না। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬৪৩৪]
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ لَتُنْتَقَوُنَّ كَمَا يُنْتَقَى التَّمْرُ مِنْ أَغْفَالِهِ فَلْيَذْهَبَنَّ خِيَارُكُمْ وَلَيَبْقَيَنَّ شِرَارُكُمْ فَمُوتُوا إِنِ اسْتَطَعْتُمْ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের বাছাই করা হবে, যেভাবে ভালো খেজুর মন্দ খেজুর থেকে আলাদা করা হয়। তোমাদের মধ্যকার নেককার লোকগুলো বিদায় নিবে এবং মন্দ লোকগুলো অবশিষ্ট থাকবে। অতএব সম্ভব হলে তোমরাও মরে যাও। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৪০৩৮]
عَنْ مِرْدَاسٍ الْأَسْلَمِيِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَذْهَبُ الصَّالِحُونَ أَسْلَافًا وَيَبْقَى حُثَالَةٌ كَحُثَالَةِ الشَّعِيرِ
মিরদাস আল আসলামী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “পূর্ববর্তী নেককার ব্যক্তিরা একে একে চলে যাবেন। আর যবের খোসা (সদৃশ লোকেরা) অবশিষ্ট থাকবে। [সুনানে দারামী, হাদীস নং-২৭৫৭]
عبد الله بن عَمرو، فسمعتُه يحدِّث عن رسول الله صلى الله عليه وسلم أنه قال: «مِنِ اقْتِرَابِ السَّاعَةِ: أَنْ يُرْفَعَ الأَشْرَارُ، ويُوضَعَ الأَخْيَارُ، ويُفْتَحَ القَوْلُ، ويُحْبَسَ العَمَلُ، ويُقْرَأَ في القَوْمِ المَثْنَاةُ» ، قيل: وما المثناة؟ قال: «مَا كُتِبَ سِوَى كِتَابِ اللهِ
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন। কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে খারাপ লোকেরা উচ্চাসনে আসীন করা ও উত্তম লোকেরা অপদস্ত করা হবে। কথার ভাণ্ডার খুলে যাবে। কিন্তু আমল বন্ধ করে দেয়া হবে। অর্থাৎ শুধুই কথাই বলা হবে, কিন্তু আমল করবে না কেউ। লোকদের মাঝে ‘মাছনাত’ পঠিত হবে। বলা হল, ‘মাছনাত’ কী? তিনি বললেন, কুরআন ছাড়া যা কিছু লেখা হয়েছে। [আলমু’জামুল কাবীর লিততাবারানী, হাদীস নং-১৪৫৫৯, সুনানে দারামী, হাদীস নং-৪৯৩]
কুফরী শক্তি মুসলমানদের উপর চেপে বসবে
عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يُوشِكُ الْأُمَمُ أَنْ تَدَاعَى عَلَيْكُمْ كَمَا تَدَاعَى الْأَكَلَةُ إِلَى قَصْعَتِهَا»، فَقَالَ قَائِلٌ: وَمِنْ قِلَّةٍ نَحْنُ يَوْمَئِذٍ؟ قَالَ: «بَلْ أَنْتُمْ يَوْمَئِذٍ كَثِيرٌ، وَلَكِنَّكُمْ غُثَاءٌ كَغُثَاءِ السَّيْلِ، وَلَيَنْزَعَنَّ اللَّهُ مِنْ صُدُورِ عَدُوِّكُمُ الْمَهَابَةَ مِنْكُمْ، وَلَيَقْذِفَنَّ اللَّهُ فِي قُلُوبِكُمُ الْوَهْنَ»، فَقَالَ قَائِلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَمَا الْوَهْنُ؟ قَالَ: «حُبُّ الدُّنْيَا، وَكَرَاهِيَةُ الْمَوْتِ
ছাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অদূর ভবিষ্যতে অন্য জাতির লোকেরা তোমাদের উপর বিজয়ী হবে, যেমন খাদ্য গ্রহণকারী বড় পাত্রের দিকে আসে। তখন জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করেঃ আমাদের সংখ্যা কি কম হবে? তিনি বলেনঃ না, বরং সে সময় তোমরা সংখ্যায় অধিক হবে। কিন্তু তোমাদের অবস্থা হবে সমুদ্রের ফেনার মত। আল্লাহ্ তোমাদের শত্রুদের অন্তর হতে তোমাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি দূর করে দেবেন এবং তোমাদের হৃদয়ে অলসতার সৃষ্টি করে দেবেন। তখন জনৈক সাহাবী বলেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! অলসতার সৃষ্টি কেন হবে? তিনি বলেনঃ দুনিয়ার মহব্বত ও মুত্যু ভয়ের জন্য। [সুনানে আবূ দাউদ, হাদীস নং-৪২৯৭, ইফাবা-৪২৪৭]
সারা বিশ্বে মুসলমানদের উপর কুফরী শক্তির সামরিক ও অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক আগ্রাসন সচেতন প্রতিটি মুসলিমই প্রত্যক্ষ করছেন। ফিলিস্তিন, কাশ্মির যেমন সরাসরি কুফরী শক্তির করায়ত্বে। তেমনি বাকি রাষ্ট্রগুলো মানসিকভাবে দাসত্ব মেনে নিয়েছে কুফরী শক্তির। কিয়ামতের এ আলামতও পূর্ণতায় পৌঁছার খুব বেশি বাকি নেই মনে হয়।
ভূমিকম্প বেড়ে যাবে
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يُقْبَضَ العِلْمُ، وَتَكْثُرَ الزَّلاَزِلُ، وَيَتَقَارَبَ الزَّمَانُ، وَتَظْهَرَ الفِتَنُ، وَيَكْثُرَ الهَرْجُ – وَهُوَ القَتْلُ القَتْلُ – حَتَّى يَكْثُرَ فِيكُمُ المَالُ فَيَفِيضَ
আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ক্বিয়ামাত (কিয়ামত) কায়িম হবে না, যে পর্যন্ত না ইলম উঠিয়ে নেয়া হবে, অধিক পরিমাণে ভূমিকম্প হবে, সময় সংকুচিত হয়ে আসবে, ফিতনা প্রকাশ পাবে এবং হারজ বৃদ্ধি পাবে। হারজ হলো খুন-খারাবী। তোমাদের ধন-সম্পদ এত বৃদ্ধি পাবে যে, উপচে পড়বে। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১০৩৬]
سَلَمَةَ بْنَ نُفَيْلٍ السَّكُونِيَّ، قَالَ: “كُنَّا جُلُوسًا عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يُوحَى إِلَيْهِ، فَقَالَ: إِنِّي غَيْرُ لَابِثٍ فِيكُمْ، وَلَسْتُمْ لَابِثِينَ بَعْدِي إِلَّا قَلِيلًا، وستأتوني أفنادا، يفني بعضكم بضعا، وَبَيْنَ يَدَيِ السَّاعَةِ مَوْتَانٌ شَدِيدٌ، وَبَعْدَهُ سَنَوَاتُ الزلازل
সালামাহ বিন নুফাইল রাঃ বর্ণনা করেন। আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে বসা ছিলাম। এমতাবস্থায় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর অহী নাজিল হয়। নবীজী ইরশাদ করেন, আমি তোমাদের বেশিদিন থাকবো না। আর তোমরাও আমার পর খুব কম দিনই বেঁচে থাকবে। তারপর আমার কাছে দলে দলে আগমন করবে। তোমরা একে অপরকে হত্যা করবে। কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে অনেক বেশি মৃত্যু হবে। তারপর কয়েক বছর খুব ভূমিকম্প হবে। [সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৬৭৭৭, সুনানে দারামী, হাদীস নং-৫৬]
ভূমিকম্পে গত পৌনে চার বছরে ৪৭ বার কেঁপেছে বাংলাদেশ। ২০১৮ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে এ সংখ্যা বেড়েছে। ছোট ও মাঝারি মাত্রার এসব ভূমিকম্পের উৎসস্থলের ২০টি ছিল দেশের ভেতর, বাকি ২৭টি ছিল সীমান্ত এলাকাসহ আশপাশের দেশগুলো। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশে বড় রকমের ভূমিকম্পের আশঙ্কা রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বারবার ভূমিকম্প হওয়ার অর্থ ফল্ট লাইনগুলো সক্রিয় আছে।
আর ফল্ট লাইন সক্রিয় থাকায় বড় ধরনের ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। [দৈনিক প্রথম আলো, ১৫/১০/২০২১]
ভূমিকম্পের এ ধারাবাহিক আস্ফালন কিয়ামতের নিকটবর্তী হবার প্রকিষ্ঠ আলামত।
বজ্রপাত বৃদ্ধি পাবে
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” تَكْثُرُ الصَّوَاعِقُ عِنْدَ اقْتِرَابِ السَّاعَةِ، حَتَّى يَأْتِيَ الرَّجُلُ الْقَوْمَ، فَيَقُولَ: مَنْ صَعِقَ قِبَلَكُمْ الْغَدَاةَ؟ فَيَقُولُونَ: صَعِقَ فُلَانٌ وَفُلَانٌ
হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে বজ্রপাত বৃদ্ধি পাবে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়াবে যে, কেউ কওমের লোকদের কাছে এসে বলবে, গতকাল এ কওমের কে কে বজ্রাহত হয়েছে? তখন লোকেরা জবাবে বলবে, ওমুক ওমুক বজ্রাহত হয়েছে। [মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১১৬২০, মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন, হাদীস নং-৮৩৭৩]
২০১৩ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে বজ্রপাতে মারা গেছে ১৮৭৮ জন [বিবিসি বাংলা, ১০/৮/২০২১]
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ২০১১ সাল থেকে ২০২০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে মৃত্যু বরণ করেছেন ২ হাজার ১৬৪ জন মানুষ। এক্ষেত্রে ২০১১ সালে ১৭৯ জন, ২০১১ সালে ২০১ জন, ২০১৩ সালে ১৮৫ জন, ২০১৪ সালে ১৭০ জন, ২০১৫ সালে ১৬০ জন, ২০১৬ সালে ২০৫ জন, ২০১৭ সালে ৩০১ জন, ২০১৮ সালে ৩৫৯ জন, ২০১৯ সালে ১৬৮ জন ও ২০২০ সালে মৃত্যুবরণ করেছেন ২৩৬ জন। অর্থাৎ প্রতি বছর গড়ে ২১৬ জনের বেশি মানুষ প্রাকৃতিক এ দুর্যোগে মৃত্যুবরণ করেছে। [বাংলা নিউজ ২৪, ৮/৬/২০২১]
২০১৬ সাল। ওই বছর প্রায় ৪৩ লাখ বজ্রপাত হয়। মারা যান প্রায় ২৬৩ জন মানুষ। [দৈনিক প্রথম আলো, ৫/৬/২০২১]
বজ্রপাত ও বজ্রপাতের এ মৃত্যুর মিছিল নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাড়ে চৌদ্দশত বছর আগে বলা হাদীস শতভাগ বাস্তবতায় পরিণত করছে।
সময় সংকীর্ণ হয়ে আসবে
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَتَقَارَبَ الزَّمَانُ فَتَكُونُ السَّنَةُ كَالشَّهْرِ وَالشَّهْرُ كَالْجُمُعَةِ وَتَكُونُ الْجُمُعَةُ كَالْيَوْمِ وَيَكُونُ الْيَوْمُ كَالسَّاعَةِ وَتَكُونُ السَّاعَةُ كَالضَّرْمَةِ بِالنَّارِ
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যামানা পরস্পর নিকটবর্তী (সংকীর্ণ) না হওয়া পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না। তখন একবছর হবে একমাসের মতো, একমাস হবে এক সপ্তাহের মতো, এক সপ্তাহ হবে একদিনের মতো, একদিন হবে এক ঘণ্টার মত এবং এক ঘণ্টা হবে প্রজ্বলিত আগুনের একটি স্ফুলিংগের মতো। [সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২৩৩২]
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَتَقَارَبَ الزَّمَانُ، فَتَكُونَ السَّنَةُ كَالشَّهْرِ، وَيَكُونَ الشَّهْرُ كَالْجُمُعَةِ، وَتَكُونَ الْجُمُعَةُ كَالْيَوْمِ، وَيَكُونَ الْيَوْمُ كَالسَّاعَةِ، وَتَكُونَ السَّاعَةُ كَاحْتِرَاقِ السَّعَفَةِ الْخُوصَةُ
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কিয়ামত ততক্ষণ পর্যন্ত হবে না, যতক্ষণ না সময় সংকীর্ণ হয়ে আসবে। তখন বছর মাসের মত হয়ে যাবে। মাস সপ্তাহের মত এবং সপ্তাহ দিনের মত। আর দিন ঘন্টার মত। আর ঘন্টা একটি খেজুরের শুকনা পাতা আগুনে পুড়ে নিঃশেষ হবার সময়ের মত হয়ে যাবে। [মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১০৯৪৩]
সময়ের বরকত কিভাবে চলে গেছে। তা একটু গভীর মনযোগ দিলে প্রতিটি বোধসম্পন্ন ব্যক্তিই অনুধাবন করতে পারবেন।
খুনাখুনি বেড়ে যাবে
بن عمر، قال: قال رسولُ الله صلى الله عليه وسلم: «إِنَّ مِنْ عَلاَمَاتِ البَلاَءِ وأَشْرَاطِ السَّاعَةِ: أَنْ تَعْزُبَ العُقُولُ، وتَنْقُصَ الأَحْلاَمُ، ويَكْثُرَ القَتْلُ، وتُرْفَعَ عَلاَمَاتُ الخَيْرِ، وتَظْهَرَ الفِتَنُ
হযরত ইবনে উমর রাঃ বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয় কিয়ামত বিপদের আলামত হলো, আকলবুদ্ধি গায়েব হওয়া এবং বোধবু্দ্ধি লোপ পাওয়া খুনাখুনি বৃদ্ধি পাওয়া কল্যাণের নিদর্শনাবলী উঠিয়ে নেয়া হবে। এবং ফিতনা ছড়িয়ে পড়বে। [আলমু’জামুল কাবীর লিততবারানী, হাদীস নং-১৪১১১]
سَلَمَةَ بْنَ نُفَيْلٍ السَّكُونِيَّ، قَالَ: “كُنَّا جُلُوسًا عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يُوحَى إِلَيْهِ، فَقَالَ: إِنِّي غَيْرُ لَابِثٍ فِيكُمْ، وَلَسْتُمْ لَابِثِينَ بَعْدِي إِلَّا قَلِيلًا، وستأتوني أفنادا، يفني بعضكم بضعا، وَبَيْنَ يَدَيِ السَّاعَةِ مَوْتَانٌ شَدِيدٌ، وَبَعْدَهُ سَنَوَاتُ الزلازل
সালামাহ বিন নুফাইল রাঃ বর্ণনা করেন। আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে বসা ছিলাম। এমতাবস্থায় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর অহী নাজিল হয়। নবীজী ইরশাদ করেন, আমি তোমাদের বেশিদিন থাকবো না। আর তোমরাও আমার পর খুব কম দিনই বেঁচে থাকবে। তারপর আমার কাছে দলে দলে আগমন করবে। তোমরা একে অপরকে হত্যা করবে। কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে অনেক বেশি মৃত্যু হবে। তারপর কয়েক বছর খুব ভূমিকম্প হবে। [সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৬৭৭৭, সুনানে দারামী, হাদীস নং-৫৬]
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يُقْبَضَ العِلْمُ، وَتَكْثُرَ الزَّلاَزِلُ، وَيَتَقَارَبَ الزَّمَانُ، وَتَظْهَرَ الفِتَنُ، وَيَكْثُرَ الهَرْجُ – وَهُوَ القَتْلُ القَتْلُ – حَتَّى يَكْثُرَ فِيكُمُ المَالُ فَيَفِيضَ
আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ক্বিয়ামাত (কিয়ামত) কায়িম হবে না, যে পর্যন্ত না ইলম উঠিয়ে নেয়া হবে, অধিক পরিমাণে ভূমিকম্প হবে, সময় সংকুচিত হয়ে আসবে, ফিতনা প্রকাশ পাবে এবং হারজ বৃদ্ধি পাবে। হারজ হলো খুন-খারাবী। তোমাদের ধন-সম্পদ এত বৃদ্ধি পাবে যে, উপচে পড়বে। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১০৩৬]
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ تَذْهَبُ الدُّنْيَا حَتَّى يَأْتِيَ عَلَى النَّاسِ يَوْمٌ لاَ يَدْرِي الْقَاتِلُ فِيمَ قَتَلَ وَلاَ الْمَقْتُولُ فِيمَ قُتِلَ ” . فَقِيلَ كَيْفَ يَكُونُ ذَلِكَ قَالَ ” الْهَرْجُ . الْقَاتِلُ وَالْمَقْتُولُ فِي النَّارِ ” . وَفِي رِوَايَةِ ابْنِ أَبَانَ قَالَ هُوَ يَزِيدُ بْنُ كَيْسَانَ عَنْ أَبِي إِسْمَاعِيلَ . لَمْ يَذْكُرِ الأَسْلَمِيَّ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সেই সত্তার শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ, দুনিয়া খতম হবে না যে পর্যন্ত না মানুষের নিকট আসে এমন এক যুগ, যখন হত্যাকারী জানবে না যে, কি কারণে সে হত্যা করেছে এবং নিহত ব্যক্তিও জানবে না যে, কি কারণে সে নিহত হয়েছে। প্রশ্ন করা হল, এমন যুলুম কিভাবে হবে? তিনি বললেনঃ সে যুগটা হবে খুনাখুনির যুগ। এরূপ যুগের হত্যকারী ও নিহত উভয় ব্যক্তিই জাহান্নামী হবে। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৯০৮, ইফাবা-৭০৪০]
মাশা-আল্লাহ চমৎকার বিশ্লেষণ, চালিয়ে যান, ভাই মুহতারাম।
আমি সাওরাইদ কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে Follow করছি।