প্রশ্ন
আসসসালামু আলাইকুম,
আমার প্রশ্ন হলো-
কোন ব্যক্তি একজন ব্যক্তিকে এমন পাপ কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলো যা জিজ্ঞাসিত ব্যক্তি গোপনে করে কিন্তু কেউ জানেনা। এখন যে ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলো তাকে সঠিক জবাব দিলে সে পাপ কাজ সম্পর্কে জেনে যাবে নাইলে মিথ্যা বলতে হবে। এক্ষেত্রে করণীয় কি?
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبكاته
بسم الله الرحمن الرحيم
কয়েকটি কারণে অন্যের দোষ বলা জায়েজ আছে। যথা-
১- জুলুম থেকে নিচে বাঁচতে, অন্যকে বাঁচাতে। এমন ব্যক্তির কাছে গীবত করতে পারবে, যে একে প্রতিহত করতে পারবে।
২- খারাপ কাজ বন্ধ করার জন্য সাহায্য চাইতে এমন ব্যক্তির কাছে গীবত করতে পারবে যে তা বন্ধ করার ক্ষমতা রাখে।
৩- বিষয়টি সম্পর্কে শরয়ী সমাধান জানতে গীবত করে মূল বিষয় উপস্থাপন করা জায়েজ আছে। যেমন বলা যে, আমাকে অমুক ব্যক্তি আমার উপর জুলুম করেছে, তাই আমারও কি তাকে আঘাত করা জায়েজ আছে? ইত্যাদি
৪- সাধারণ মুসলমানদের দ্বীনী ও দুনিয়াবী ধোঁকা ও খারাবী থেকে বাঁচাতে গীবত করা জায়েজ। যেমন সাক্ষ্য সম্পর্কে, হাদীস, আসার ও ইতিহাস বর্ণনাকারী সম্পর্কে, লেখক, বক্তা ইত্যাদি সম্পর্কে দোষ জনসম্মুখে বলে দেয়া, যেন তার ধোঁকা ও মিথ্যাচার থেকে মানুষ বাঁচতে পারে। উদাহরণতঃ মতিউর রহমান মাদানী, তাউসীফুর রহমান এমন ভ্রান্ত মানসিকতা ও মিথ্যাচারকারী ব্যক্তিদের দোষ মানুষের কাছে বলা সাধারণ মুসলমানদের ঈমান আমল হিফাযতের জন্য জায়েজ।
৫- প্রাকাশ্যে যদি কেউ শরীয়তগর্হিত করে, তাহলে তার খারাবী বর্ণনা করা এমন ব্যক্তির কাছে যারা এর দ্বারা বিভ্রান্ত হওয়া থেকে বাঁচতে পারে। যেমন কেউ প্রকাশ্যে মদ খায়, তাহলে মানুষের সামনে তার সরাসরি বদনাম করা জায়েজ আছে। যেন এমন খারাপ কাজ করতে ভবিষ্যতে কেউ সাহস না করে।
৬- কারো পরিচয় প্রকাশ করতে। যেমন কেউ কানা। তার পরিচয় দেয়া দরকার। কিন্তু নাম কেউ চিনতেছে না। কিন্তু কানা বলতেই সবাই চিনে ফেলে। তখন কানা বলা বাহ্যিক দৃষ্টিতে গীবত হলেও এটা বলা জায়েজ আছে। এতে গীবতের গোনাহ হবে না। {তাফসীরে রুহুল মাআনী- ১৪/২৪২, সূরা হুজরাত-১২}
যদি এসবের কোন কারণই বিদ্যমান না থাকে, তাহলে প্রশ্নটি এড়িয়ে যাওয়াই বাঞ্ছনীয়।
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।