প্রশ্ন:
From: Mh Hasan
Subject: মহিলাদের কোন কোন পুরুষ ব্যক্তির সাথে দেখা করা জায়েজ
Country : Bangladesh
Mobile :
Message Body:
আমার বড় বোনের বয়ষ ২২ বছর।
এখন সে কোরআন শুদ্দ করে পরা শিখতে চায় এবং এই জন্য সে বাসাতে হুজুর টিউটর রেখে পরতে চায়। এটি কতো টা জায়েজ এবং তার পরদা কেমন হউয়া উচিত?
জবাব:
بسم الله الرحمن الرحيم
আপনার বড় বোনের উপর পূর্ণ শরয়ী পর্দা পালন করা আবশ্যক। তাই তিনি বেগানা পুরুষের সামনে যেতে পারবেন না। সে হিসেবে দ্বীন শিখার জন্যও পর্দার বিধান লঙ্ঘন করা যাবে না। শরয়ী পর্দা মেনেই দ্বীন শিখতে হবে।
সুতরাং প্রথমেই চেষ্টা করুন কুরআন সহীহ শুদ্ধভাবে জানেন এমন কোন মহিলা শিক্ষিকা রেখে তাকে কুরআন শিখানোর ব্যবস্থা করা।
এটা সম্ভব না হলে একজন বয়স্ক বিবাহিত [সন্তানের জনক হলে উত্তম] শিক্ষককে পড়াতে সুযোগ দিন। যিনি আপনার বোনকে পর্দার আড়াল থেকে পড়াবেন।
এটাও সম্ভব না হলে যেকোন একজন শিক্ষককে যিনি কুরআনে কারীম সহীহ শুদ্ধভাবে পড়াতে জানেন এমন একজনকে পড়াতে অনুমতি দিন। যিনি পর্দার আড়াল থেকে পড়াবেন। আর পড়ানোর সময় আশপাশে অভিবাবক কেউ থাকলে উত্তম হবে।
قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ذَلِكَ أَزْكَى لَهُمْ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ (30) وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ الخ
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে-“মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের চক্ষুকে অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। এটাই তাদের জন্য পবিত্রতম পন্থা। তারা যা করে নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত। আর মুমিন নারীদের বলুন তারা যেন তাদের চক্ষুকে অবনত রাখে ও তাদের লজ্জাস্থানকে হিফাযত করে। {সূরা নূর-৩০,৩১}
يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে বিনম্র হয়ে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে পৌরষত্ব আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে। {সূরা আহযাব-৩২}
عن عقبة بن عامر أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال ( إياكم والدخول على النساء ) . فقال رجل من الأنصار يا رسول الله أفرأيت الحمو ؟ قال ( الحمو الموت
হযরত ওকবা বিন আমের রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“তোমরা মহিলাদের নিকট [একাকি] প্রবেশ করা থেকে বিরত থাক। আনসারদের মধ্যে এক ব্যক্তি বলল-‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! দেবরের ব্যাপারে কি নির্দেশ?’ তিনি বললেন-‘দেবরতো মৃত্যুতুল্য’”। {সহীহ বুখারী, হাদিস নং-৪৯৩৪, সহীহ মুসলিম, হাদিস নং-৫৮০৩, আল মুজামুল কাবীর, হাদীস নং-৭৩৬, সুনানে বায়হাকী, হাদীস নং-১৩২৯৬, সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-১১৭১, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৬৪২, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৯২১৬, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৫৮৮, মুসনাদে আবি আওয়ানা, হাদীস নং-৪০৩২, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৭৩৯৬, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৭৯৫৪}
عن ابن عمر قال : خطبنا عمر بالجابية الخ ألا لا يخلون رجل بامرأة إلا كان ثالثهما الشيطان
হযরত ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-যখনই কোন পুরুষ পর নারীর সাথে নির্জনে দেখা করে তখনই শয়তান সেখানে তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে উপস্থিত হয়। {সুনানে তিরমিযী, হাদিস নং-২১৬৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং-৫৫৮৬}
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।