প্রচ্ছদ / জিহাদ ও কিতাল / বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা কি শহীদ?

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মারা যাওয়া ব্যক্তিরা কি শহীদ?

প্রশ্ন

আসসালামুয়ালাইকুম,

আমার নাম তারিক বিন আজিজ।

আমি নীলফামারী থেকে বলছি।

আমার প্রশ্ন হচ্ছে

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যারা নিহত হয়েছেন, তারা শহীদ কি না?

যদি শহীদ হয়ে থাকে, তাহলে দালিলিক ব্যাখ্যা দিলে খুবই ভালো হতো।

আশাকরি আমার প্রশ্নটির উত্তর দ্রুত দিবেন, ইনশাআল্লাহ।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

আল্লাহর দ্বীন রক্ষায় কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত অবস্থায় যারা মারা যায়, তারা হলেন প্রকৃত শহীদ। এছাড়া আরো কিছু ব্যক্তিদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুকুমী শহীদের মর্যাদায় আসীন করেছেন।

তাদের মাঝে একদল হলেন, যারা নিজ সম্পদ, নিজ পরিবার এবং নিজ প্রাণ রক্ষায় মারা যান, তারাও শহীদ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন হয়েছে ‘নিজেদের অধিকার’ রক্ষায়। কোটার নামে সাধারণ চাকুরীপ্রার্থীদের যোগ্যতাবলে চাকুরী করার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে যে জুলুমানা কোটা পদ্ধতি ছিল, সেটা বাতিল করে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকুরীর অধিকার পাবার জন্য মূলত এ আন্দোলন হয়েছে।

সুতরাং এটাকে নিজ সম্পদ রক্ষার উপর কিয়াস করে বলা যায় যে, যেসব মুসলমান এ অধিকার আদায় করতে গিয়ে অন্যায়ভাবে গুলিবিদ্ধ হয়ে বা অন্য কোনভাবে জালিম কর্তৃক মারা গেছেন তারা হুকমী শহীদের মর্যাদা পাবেন আশা করি। বাকি আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন।


عن سعيد بن زيد عن النبى -صلى الله عليه وسلم- قال : « من قتل دون ماله فهو شهيد ومن قتل دون أهله أو دون دمه أو دون دينه فهو شهيد

হযরত সাঈদ বিন যায়েদ থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন-“যে ব্যক্তি নিজ সম্পত্তি রক্ষায় নিহত হয় সে শহীদ। যে ব্যক্তি নিজ পরিবার রক্ষায় নিহত হয় সেও শহীদ। অথবা প্রাণ রক্ষায় কিংবা দ্বীন রক্ষায় নিহত হয় সেও শহীদ। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৪৭৭৪, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৬৫২)

أن جابر بن عتيك أخبره :أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال الشهداء سبعةسوى القتل في سبيل الله المطعون شهيد والغرق شهيد وصاحب ذات الجنب شهيد والمبطون شهيد والحرق شهيد والذي يموت تحت الهدم شهيد والمرأة تموت بجمع شهيد

হযরত জাবের বিন আতীক রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন-আল্লাহর পথে মৃত্যুবরণ করা ছাড়াও সাত প্রকার শহীদ রয়েছে। ১-মহামারীতে মৃত্যুবরণকারী শহীদ। ২-পানিতে নিমজ্জিত শহীদ। ৩-শয্যাশায়ী অবস্থায় মৃত শহীদ। ৪-পেটের রোগ মৃত্যুবরণকারী শহীদ। ৫-আগ্নিদগ্ধ ব্যক্তি শহীদ। ৬-যে ব্যক্তি ধ্বংসাবশেষের নিচে পড়ে মারা যায় সেও শহীদ। ৭-সন্তান প্রসব করতে মারা যাওয়া নারীও শহীদ। {মুয়াত্তা মালিক, হাদিস নং-৫৫৪, ৮০২, আল মু’জামুল কাবীর, হাদিস নং-১৭৮০, সহীহ কুনুজু সুন্নাতিন নাবাবিয়্যাহ, হাদিস নং-২৩}

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।

পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।

শাইখুল হাদীস: জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, সনমানিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com 

আরও জানুন

স্ত্রী সহবাসে আগ্রহী না হলে করণীয় কী?

প্রশ্ন আসসালামু আলাইকুম, আমি ঢাকা থেকে হাসান বলসি। আমার বিবাহের বয়স ২ বসর হতে চলল। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *