প্রচ্ছদ / ঈমান ও আমল / তারাবীর নামায শেষে পড়ার জন্য নির্দিষ্ট কোন দুআ আছে কি?

তারাবীর নামায শেষে পড়ার জন্য নির্দিষ্ট কোন দুআ আছে কি?

প্রশ্ন

মাননীয় মুফতি মহোদয়,

তারাবীর নামাজ শেষ হবার পরবর্তি মুনাজাতে প্রচলিত দুআটার আবশ্যকতার ব্যাপারে জানতে চাই দলিলসহ । কোনটা ঠিক হবে ,মুসল্লিদের সামনে বিষয়গুলোর তাহকিক পরিপূর্ণভাবে তুলে ধরা নাকি প্রচলন অনুযায়ী চালিয়ে যাওয়া ?

উল্লেখ্য আমি ইমাম ।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

প্রচলিত দুআ বলতে আপনি সম্ভবত

اللهم انا نسئلك الجنة ونعوذبك من النار يا خالق الجنة والنار برحمتك يا عزيز يا غفار يا كريم يا ستار يا رحيم يا جبار يا خالق يا بار. اللهم اجرنا من النار يا مجير يا مجير يا مجير برحمتك يا ارحم الرحمين.

 “আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়ানাঊজুবিকা মিনান নার, ইয়াখালিকাল জান্নাতা ওয়ান্নার, বিরাহমাতিকা ইয়া আজীজু ইয়া গাফ্ফার, ইয়া কারীমু ইয়া সাত্তার, ইয়া রাহীমু ইয়া জাব্বার, ইয়া খালিকু ইয়া বার্র, আল্লাহুম্মা আজীরনা মিনান নার, ইয়া মুজিরু, ইয়া মুজীরু ইয়া মুজীর। বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন”। দুআটি উদ্দেশ্য নিয়েছেন।

তারাবীর শেষে উপরোক্ত দুআটি পড়া কুরআন ও হাদীস বা ফিক্বহের কিতাব দ্বারা প্রমাণিত নয়।

এটি কেবলি প্রচলিত একটি দুআ।

যেহেতু নামায শেষে দুআ করার বিধান রয়েছে। তাই হয়তো কেউ উপরোক্ত সুন্দর দুআটি আবিস্কার করেছেন। যার কিছু অংশই দুআ হিসেবে হাদীসে এসেছে। বাকি পূর্ণ দুআটি হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়।

তাই এটিকে আবশ্যক মনে করা বা সুন্নত মনে করার কোন সুযোগ নেই।

যেকোন দুআ করা যায়। বাকি উপরোক্ত দুআটিও একটি দুআ হিসেবে করা যেতে পারে। যেহেতু এর অর্থ অনেক সুন্দর। তবে সতর্ক থাকতে হবে, যেন এটি কেউ সুন্নত বা জরুরী মনে করে না বসে। তাহলে এটি পড়া বিদআত হয়ে যাবে।

আমাদের দেশের অধিকাংশ মুসল্লিই দ্বীন সম্পর্কে অতটা জ্ঞানী নয়। তাই এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা না করে, উপরোক্ত দুআ সবসমসয় পড়ার ইলতিযাম করা যাবে না।

বরং কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত দুআগুলো করাই সবচে’ উত্তম। মাঝে মাঝে উপরোক্ত দুআও করা যেতে পারে। কিন্তু সব সময় উপরোক্ত দুআ পড়লে মানুষের মনে এ ধারণা জন্মে যাবে যে, এ দুআ বুঝি তারাবী শেষের দুআ।

তাই সব সময় উক্ত দুআ পড়া ঠিক হবে না। কেউ যদি এ ব্যাপারে প্রশ্ন করে, তখন বিষয়টি খোলাসা করে বলে দিতে হবে।

فَإِذَا فَرَغْتَ فَانْصَبْ (7) وَإِلَى رَبِّكَ فَارْغَبْ (8)

অতএব, যখন অবসর পান পরিশ্রম করুন। এবং আপনার পালনকর্তার প্রতি মনোনিবেশ করুন। [সূরা ইনশিরাহ-৭-৮]

  قال قتادة: فإذا فرغت من صلاتك فانصب إلى ربك فى الدعاء (احكام القرآن للجصاص، سورة الم نشرح-3/639)

عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا سَلَّمَ مِنَ الصَّلَاةِ، قَالَ: «اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ، وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ، وَمَا أَسْرَفْتُ وَمَا أَنْتَ أَعْلَمُ بِهِ مِنِّي، أَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَأَنْتَ الْمُؤَخِّرُ، لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ (سنن ابى داود، كتاب الصلاة، باب ما يقول الرجل إذا سلم-1/219، رقم-1509)

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা-জামিয়া ফারুকিয়া দক্ষিণ বনশ্রী ঢাকা।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com

আরও জানুন

অগ্রীম বাসা ভাড়ার উপর বছর অতিক্রান্ত হলে যাকাত কে দিবে?

প্রশ্নঃ মুহতারাম, অমি প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা দেওয়ার শর্তে বাড়ি ভাড়া নেই। ভাড়া নেওয়ার …

আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস