প্রচ্ছদ / আকিদা-বিশ্বাস / আটরশী ও মাইজভান্ডার দরবারের আসল রূপ!

আটরশী ও মাইজভান্ডার দরবারের আসল রূপ!

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

আমাদের বাংলাদেশে ভ্রান্ত আকীদাপন্থী নামধারী পীরদের মাঝে আটরশী ও মাইজভান্ডারীর দু’টি দরবার খুবই প্রসিদ্ধ। হিন্দুদের ধর্মগুরু ও তাদের মন্দিদের কার্যক্রমের অনুরূপ পরিচালিত হয় এসব দরবারগুলো।

হিন্দুদের মূর্তিপূজার মতই এসব দরবারে কবরপূজা হয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা তাদের মূর্তিদের ঘিরে যতগুলো রুসুম রেওয়াজ পরিচালনা করে হুবহু একই পদ্ধতির রুসুম রেওয়াজ এসব দরবারে পরিচালিত হয়।

যেমন

বর্তমান মূর্তিপূজকরা প্রধানত মূর্তিপূজায় ৪টি কাজ করে থাকেঃ

১. বছরে দু’বার মূর্তিকে কেন্দ্র করে বড় আকারের অনুষ্ঠান করে।

যথা- (ক) কালিপূজা (খ) দূর্গা পূজা।

ছোট আকারের পূজা আরো অনেক হয়। কিন্তু সারাদেশব্যাপী ধুমধামের সাথে এ দু’টি পূজা পালন করে থাকে।

এসময় তারা মূর্তিকে ঘিরে যা করে তারা সারাংশ হলঃ

২. মূর্তির সামনে প্রদিপ জ্বালায়।

৩. মূর্তির নামে মান্নত করে ও পশু বলি দেয়।

৪. মূর্তির সামনে মাথা নত করে ও সেজদা করে।

 

কবর বা মাযার পূজারীরা যা করে কবরকে কেন্দ্র করেঃ

১. বছরে দু’বার বড় আকারে উরস ও ফাতেহা মাহফিল নামে অনুষ্ঠান করে পীর বা বুযুর্গদের কবরকে ঘিরে।

২. কবরের সামনে মোমবাতি প্রজ্জ্বলিত করে নিয়মিত।

৩. কবরে শায়িত বুযুর্গের নামে মান্নত ও কুরবানী করে।

৪. কবরকে সামনে নিয়ে দুআ করে, ক্ষেত্র বিশেষে মাথানত ও সেজদাও করে।

বিজ্ঞ পাঠকের কাছে আমার জিজ্ঞাসা-মূর্তিপূজকদের মূর্তিপূজায় যে কর্মাদী করে আর আমাদের দেশের মাজারও কবরপূজারীরা যা করে এর মাঝে কি কোন পার্থক্য আছে?

এবার আসুন দেখি কবর পূজারীদের কর্মকান্ড কুরআন ও হাদিসের মানদন্ডেঃ

স্বীয় কবরকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠান করাকে নিষিদ্ধ করে আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

عن أبى هريرة قال قال رسول الله -صلى الله عليه وسلم- « لا تجعلوا بيوتكم قبورا ولا تجعلوا قبرى عيدا وصلوا على فإن صلاتكم تبلغنى حيث كنتم (سنن ابى داود-كتاب المناسك، باب زيارة القبور، رقم الحديث-2044)

 “তোমরা স্বীয় ঘরকে কবর বানিয়োনা। (অর্থাৎ কবরের ন্যায় ইবাদত-নামায, তেলাওয়াত ও যিকির ইত্যাদি বিহীন করনা।) এবং আমার কবরে উৎসব করোনা।(অর্থাৎ বার্ষিক, মাসিক বা সাপ্তাহিক কোন আসরের আয়োজন করনা। তবে হ্যাঁ আমার উপর দুরূদ পাঠ কর। নিশ্চয় তোমরা যেখানেই থাক না কেন তোমাদের দরূদ আমার নিকট পৌঁছে থাকে।(আল্লাহ তায়ালার ফেরেশতারা পৌঁছিয়ে দেন।)” (সুনানে আবু দাউদ: হাদিস নং-২০৪৪)

এখানে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ রওযা মুবারকে উৎসব (উরস) পালন করতে বারণ করেছেন। তাহলে অন্য কে আর এমন আছে যার কবরে তা বৈধ হবে?

হাদীসের বিখ্যাত ব্যাখ্যাকার আল্লামা মুনাভী রহঃ এই হাদীসের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন-

قال المناوي ويؤخذ منه أن اجتماع العامة في بعض أضرحة الأولياء في يوم أو شهر مخصوص من السنة ويقولون هذا يوم مولد الشيخ ويأكلون ويشربون وربما يرقصون فيه منهي عنه شرعا وعلى ولي الشرع ردعهم على ذلك وإنكاره عليهم وإبطاله (عون المعبود-كتاب المناسك باب زيارة القبور-6/23)

 “এ হাদিস থেকে বুঝা যায় যে, সাধারণ মানুষ যারা বছরের কোন নির্দিষ্ট মাসে বা দিনে (উরসের নামে) ওলীদের মাযারে একত্রিত হয় এবং বলে-আজ পীর সাহেবের জন্ম বার্ষিকী (মৃত্যু বার্ষিকী), সেখানে তারা পানাহারেরও আয়োজন করে, আবার নাচ গানেরও ব্যবস্থা করে থাকে, এ সবগুলিই শরীয়ত পরিপন্থী ও গর্হিত কাজ। এ সব কাজ প্রশাসনের প্রতিরোধ করা জরুরী। (আউনুল মা’বুদ-৬/২৩)

কবরের সামনে বাতি প্রজ্জ্বলন করাকে হারাম সাব্যস্ত করে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

عن ابن عباس قال : لعن رسول الله صلى الله عليه و سلم زائرات القبور والمتخذين عليها المساجد والسرج (سنن الترمذى- أبواب الصلاة عن رسول الله صلى الله عليه و سلم ، باب ما جاء في كراهية أن يتخذ على القبر مسجدا-2/136)

 “হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত যে, আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিশম্পাত করেছেন (বেপর্দা) কবর যিয়ারতকারীনী মহিলাদের উপর, এবং সেসব লোকদের উপর যারা কবরকে মসজিদ বানায় (কবরকে সেজদা করে) এবং সেখানে বাতি প্রজ্জ্বলিত করে। (জামি তিরমীযী-২/১৩৬)

উক্ত হাদিসে সুষ্পষ্ট কবরে বাতি প্রজ্জ্বলনকারীর উপর অভিশম্পাত করেছেন আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

আল্লাহ ছাড়া কারো নামে মান্নত বা কুরবানী করা যায়না। কারণ মান্নত ও কুরবানী হচ্ছে ইবাদত। আর ইবাদত আল্লাহ ছাড়া কারা জন্য করা জায়েজ নয়। মহান রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন-

قُلْ إِنَّ صَلاَتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ (162) لاَ شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَاْ أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ (163) (سورة الأنعام-162-163)

 “আপনি বলুনঃ আমার নামায, আমার কুরবানী এবং আমার জীবন ও আমার মরণ বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই। তাঁর কোন অংশিদার নেই। আমি তা-ই করতে আদিষ্ট হয়েছি এবং আমিই প্রথম আনুগত্যশীল। (সূরা আনআম-১৬২-১৬৩)

সূরা কাউসারে মহান রাব্বুর আলামীন বলেন- فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ (2) অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কুরবানী করুন। (সূরা কাউসার-২)

সুতরাং পীরের নামে ও মাযারের নামে মান্নত করা কি শিরকী কাজ ছাড়া আর কী হতে পারে?

আল্লাহ ছাড়া কাউকে সেজদা করা সুষ্পষ্ট হারাম। কুরআনের অসংখ্য আয়াত ও হাদীসে নববী দ্বারা যা দিবালোকের ন্যয় পরিস্কার। একথা মনে হয় অন্ধ পীর ও মাজারপূজারী ছাড়া সকল মুসলমানরাই জানে।

কুরআন ও হাদীসের উল্লেখিত বিবরণ মোতাবিক কবর ও মূর্তিপূজার সাযুজ্যতার মাধ্যমে আমরা সহজেই অনুমান করে নিতে পারি আমাদের দেশের আটরশী, মাইজভান্ডারীসহ মাযারপূজারী ও কবরপূজারীরা কি পরিমাণ শিরকী কর্মকান্ডে লিপ্ত।

আরবের মুশরিকদের শিরক কি ছিল?

মহান রাব্বুর আলামীন বলেন-

قُلْ مَن يَرْزُقُكُم مِّنَ السَّمَاء وَالأَرْضِ أَمَّن يَمْلِكُ السَّمْعَ والأَبْصَارَ وَمَن يُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ وَيُخْرِجُ الْمَيَّتَ مِنَ الْحَيِّ وَمَن يُدَبِّرُ الأَمْرَ فَسَيَقُولُونَ اللَّهُ فَقُلْ أَفَلاَ تَتَّقُونَ (سورة يونس-31)

 “হে পয়গম্বর! আপনি মুশকদেরকে জিজ্ঞেস করুন যে, বল তো কে তোমাদেরকে আসমান জমিন থেকে রুযী কে দেন? এবং কে তোমাদের কান ও চোখের মালিক? তাছাড়া কে জীবিতকে মৃতের ভেতর থেকে বের করেন এবং কে মৃতকে জীবিতের মধ্য থেকে বের করেন? কে করেন কর্মসম্পাদনের ব্যবস্থাপনা? তারা পরিস্কার বলবে যে, মহান আল্লাহ। বল এরপরও কি তোমরা ভয় করবে না? (সূরা ইউনুস-৩১)

আল্লাহ তায়ালাই মূল ক্ষমতার অধিকারী একথা আরবের মুশরিকরাও বিশ্বাস করতো, তারপরও তারা কাফের কেন?

এই সূরার প্রথমাংশে মহান রাব্বুল আলামীন এ প্রশ্নের জবাব দিয়ে দিয়েছেন। ইরশাদ হচ্ছে-

وَيَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ مَا لاَ يَضُرُّهُمْ وَلاَ يَنفَعُهُمْ وَيَقُولُونَ هَؤُلاء شُفَعَاؤُنَا عِندَ اللَّهِ قُلْ أَتُنَبِّئُونَ اللَّهَ بِمَا لاَ يَعْلَمُ فِي السَّمَاوَاتِ وَلاَ فِي الأَرْضِ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى عَمَّا يُشْرِكُونَ (18)

আর তার (মুশরেকরা) আল্লাহ ভিন্ন এমন কতিপয়ের ইবাদত করে, যারা তাদের কোন অপকারও করতে পারেনা এবং তাদের কোন উপকারও করতে পারেনা, ও তারা বলে-এরা হল আল্লাহ তায়ালার কাছে আমাদের সুপারিশকারী। (হে রাসূল!) আপনি বলে দিন, তোমরা কি আল্লাহ তায়ালাকে এমন বিষয়ের সংবাদ দিচ্ছ যা আছে বলে তিনি (নিজেও) জানেন না, না আসমানে না জমিনে! তিনি তাদের শিরকী কার্যকলাপ হতে পবিত্র ও অনেক ঊর্দ্ধে। (সূরা ইউনুস-১৮)

আরবের মুশরিকরা আল্লাহকে ¯্রষ্টা স্বীকার করতো। আরবের মুশরিকরা কাবার হিফাযত করতো। কাবা তওয়াফ করতো। মেহমানদারী করতো। কিন্তু এরপরও তারা কফির। তারা মুশরিক।

কেন?

কারণ তারা আল্লাহর সাথে সাথে মূর্তির কাছে সন্তান চাইতো। মূর্তির জন্য মান্নত করতো। মূর্তির নামে কুরবানী করতো।

এসব কারণে তারা মুশরিক। ধিকৃত।

প্রশ্ন হল, একই কাজ মাইজভান্ডারী, আটরশীর মাজারের মুরীদেরা করার পরও তারা খাঁটি মুসলিম থাকে কী করে? তারা কেন মুশরিক নয়?

আটরশী ও মাইজভান্ডারীদের আরো কিছু কুফরী আকীদা

আটরশী ও মাইজভান্ডারীদের মাঝে উপরোক্ত শিরকী কাজ ছাড়াও আরো অনেক ইসলাম ও কুরআন হাদীস বিরোধী আকীদা বিদ্যমান।

কয়েকটি নিচে উদ্ধৃত করা হলঃ

ইসলাম আসার পর ইসলাম ছাড়াও অন্য যেকোন ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে আমল করে মানুষ আখেরাতে মুক্তি পেতে পারে। [মাইজভান্ডারী সিলসিলার দ্বিতীয় পীর সায়্যিদ দিলাওয়ার হুসাইন (মৃত্যু ১৯৮২ ইং) রচিত “বেলায়েতে মুতলাকা” গ্রন্থের ৮৯-৯১, ১২৯ পৃষ্ঠা দৃষ্টব্য]

ঠিক একই বক্তব্য রয়েছে আটরশীর পীরের।

বিশ্ব জাকের মঞ্জিল, ২৫ই ফেব্রুয়ারী ১৯৮৪ ইং এর প্রকাশিত সংবাদঃ পীর সাহেব বলেন, “হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ ও খৃষ্টানগণ নিজ নিজ ধর্মের আলোকেই সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য অর্জনের চেষ্টা করতে পারে”।

অথচ আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেনঃ

إِنَّ الدِّينَ عِندَ اللَّهِ الْإِسْلَامُ ۗ [٣:١٩]

নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম। [সূরা আলে ইমরান-১৯]

وَقُل لِّلَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ وَالْأُمِّيِّينَ أَأَسْلَمْتُمْ ۚ فَإِنْ أَسْلَمُوا فَقَدِ اهْتَدَوا ۖ وَّإِن تَوَلَّوْا فَإِنَّمَا عَلَيْكَ الْبَلَاغُ ۗ وَاللَّهُ بَصِيرٌ بِالْعِبَادِ [٣:٢٠]

আর আহলে কিতাবদের এবং নিরক্ষরদের [আরব মুশরকেদের] বলে দাও যে, তোমরাও কি আতœসমর্পণ করেছ? তখন যদি তারা আতœসমর্পণ করে, তবে সরল পথ প্রাপ্ত হলো, আর যদি মুখ ঘুরিয়ে নেয়, তাহলে তোমার দায়িত্ব হলো শুধু পৌঁছে দেয়া। আর আল্লাহর দৃষ্টিতে রয়েছে সকল বান্দা। [সূরা আলে ইমরান-২০]

وَمَن يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَن يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ [٣:٨٥]

যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতিগ্রস্ত। [সূরা আলে ইমরান-৮৫]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: «وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ، لَا يَسْمَعُ بِي أَحَدٌ مِنْ هَذِهِ الْأُمَّةِ يَهُودِيٌّ، وَلَا نَصْرَانِيٌّ، ثُمَّ يَمُوتُ وَلَمْ يُؤْمِنْ بِالَّذِي أُرْسِلْتُ بِهِ، إِلَّا كَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّارِ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ঐ সত্তার কসম, যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ, এ উম্মতের ইয়াহুদী বা খৃষ্টান যে-ই আমার দাওয়াত পাে আর আমার আনীত দ্বীনের উপর ঈমান না এনে মৃত্যুবরণ করবে, সে হবে জাহান্নামী। [সহীহ মুসলিম-১/৮৬, হাদীস নং-২৪০]

এ হাদীসের ব্যাখ্যায় ইমাম নববী রহঃ লিখেনঃ

وانما ذكر اليهود والنصرى تنبيها على من سواهما، لأن اليهود والنصارى لهم كتاب، فإذا كان هذا شانهم مع أن لهم كتابا فغيرهم ممن لا كتاب لهم أولى (شرح مسلم-1/86)

 “ইয়াহুদ ও খৃষ্টানদের উল্লেখ এজন্যে করা হয়েছে যেন অন্যদের ব্যাপারে সতর্কারোপ হয়ে যায়। কেননা, ইয়াহুদ ও খৃষ্টানদের রয়েছে আসমানী কিতাব। তাদের নিকট আসমানী কিতাব থাকা সত্ত্বেও যখন অবস্থা এমন, তাহলে যাদের কিতাব নেই তাদের অবস্থাতো বলার অপেক্ষাই রাখে না”। [শরহে মুসলিম-১/৮৬]

মাইজভান্ডারীদের মতেঃ

ক) তরীকত শরীয়ত থেকে ভিন্ন একটি বিষয়।

খ) বিশেষ ব্যক্তিবর্গের জন্য শরীয়তের অনুসরণ করা জরুরী নয়।

গ) বিশেষ ব্যক্তিবর্গের জন্যে নামায, রোযা ও অন্যান্য ইবাদত পালন করা অপরিহার্য নয়।

ঘ) বিশেষ ব্যক্তিবর্গের শরীয়ত ও কুরআন-হাদীস এবং সাধারণ মানুষের শরীয়ত ও কুরআন-হাদীস থেকে ভিন্ন।

ঙ) সাধারণ মানুষের জন্যে শরীয়তে মুহাম্মদীর অনুসরণও আবশ্যক নয়, বরং নিজের ইচ্ছেমত যে কোন ধর্মের অনুসরণ করলেই আখেরাতে মুক্তি পাওয়া যাবে।

দেখুন- মাইজভান্ডারীর পীরের লেখা “বেলায়েতে মোতলাকা” গ্রন্থের ১৬, ১১৮, ১১৯-১২০ নং পৃষ্ঠা।

এমন সব কুফরী আকীদা আমলে ভরপুর এসব ভান্ডারী ও আটরশীদের দরবার। এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে হলে পড়–ন মাওলানা আব্দুল মালেক দামাত বারাকাতুহুর লেখা “তাসাওউফ তত্ত্ব ও বিশ্লেষণ” গ্রন্থটি।

আল্লাহ তাআলা আমাদের এসব ভ্রান্ত পীরদের ভন্ডামী থেকে আমাদের দেশের সরলপ্রাণ মুসলমানদের ঈমান ও আমলকে হিফাযত করুন। আমীন।

আরও জানুন

ট্যারো কার্ডের মাধ্যমে ভবিষ্যৎবাণী জানার হুকুম কী?

প্রশ্ন আসসালামু আলাইকুম বর্তমানে এক ধরনের কার্ডের মাধ্যমে ভবিষৎবাণী করা হচ্ছে। এই কার্ডের নাম টেরোট …

আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস