প্রচ্ছদ / দান-সদকা-হাদিয়া / আহলে হক মিডিয়া ত্রাণ তহবিলের বন্যা দুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ সম্পন্ন!

আহলে হক মিডিয়া ত্রাণ তহবিলের বন্যা দুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ সম্পন্ন!

 লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
২০ ই আগস্ট ২০১৭ ঈসাব্দ সন্ধ্যায় সিদ্ধান্ত হল “আহলে হক মিডিয়া ত্রাণ তহবিল” গঠন করে আমরাও যাবো বন্য দুর্গত এলাকায়। ঘোষণা এল।
বিষয়টি জানানো হল তালীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার এবং আহলে হক মিডিয়ার হিতাকাঙ্খীদের।
মাত্র ৫দিনে দেশ-বিদেশের হিতাকাঙ্খী দরদী ভাই-বোনদের মাধ্যমে সংগ্রহ হয় নগদ দুই লাখ টাকা।
আমরা গত ২৫ ই আগস্ট রাতে রওয়ানা হই কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীর উদ্দেশ্যে।
 
কুড়িগ্রাম শহর থেকে ভুরুঙ্গামারী পৌঁছতে চার স্থানে বিশালাকার ভাঙ্গা রাস্তা পাড় হতে হয় নৌকা ও কলাগাছের ভেলা দিয়ে।
চরম দুর্যোগে আক্রান্ত মানুষগুলোর ভারাক্রান্ত অসহায় চেহারা দেখে পাষাণের দিলেও দরদ উথলে উঠবে। কারো ঘর বাড়ি নদী ভাঙ্গনে পানির তলায়। কারোবা ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর। মেরামতের পয়সা নেই হাতে। ফসল নষ্ট হয়ে মাথায় হাত কৃষকের।
না, পর্যাপ্ত শব্দ নেই ব্যক্ত করার। কি শব্দে বললে, কিভাবে উপস্থাপন করলে বাস্তবতা উঠে আসবে এতোটা শব্দ-সম্ভার আমার ঝুলিতে নেই।
দেশ বিদেশের দরদী ভাই-বোনদের পাঠানো নগদ অর্থ বিতরণ শুরু করলাম ভুরুঙ্গামারীর ছিট পাইকার চর দারুল উলুম বাবুস সালাম মাদরাসায় আগত দুর্গত এলাকাবাসীকে দিয়ে।
সঙ্গী ছিলেন হবিগঞ্জের দারুল ইরশাদ ওয়াদ দাওয়া বহুলা মাদরাসার নাজিমে তালিমাত মাওলানা জাবের আলহুদা চোধুরী, জামিয়া ইকরার মুহতারাম শিক্ষক মাওলানা শফীকুল ইসলাম এবং তালীমুল ইসলাম নৈশ মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা আশরাফুল ইসলাম।
প্রথমে এলাকাবাসীর মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ শেষে বন্যা দুর্গত পরিবারের মাদরাসা ছাত্র ও শিক্ষকদের মাঝেও বিতরণ করা হয় নগদ অর্থ।
এরপর নৌকা ভাড়া করে আমরা ছুটে যায় দুর্গত বিভিন্ন এলাকায়। পাইকছড়া এলাকায় আমাদের নৌকা ভিরতেই হাটু-গলা পানিতে ছুটে আসে দুর্গত মানুষ। এ এক অবর্ণনীয় দৃশ্য। পানিতে দাঁড়িয়ে হাত বাড়ানো বিপদগ্রস্তের হাতে পৌছে দেই সাধ্যানুকূল সাহায্য।
যেখানে নৌকাটি দাঁড়িয়েছিল সেখানেই বাড়ি ছিল এক ব্যক্তির। ভয়াল বন্যা আর ভাঙ্গণে পানির অতলে তার বসবাসের নীড়।
কর্দমাক্ত মানুষটার হাতে চার হাজার টাকা তুলে দিতেই হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন। আমাদের চোখও হয় অশ্রুসজল। মাথায় হাত দিয়ে সান্ত্বনা দিলাম।
আবার যাত্রা। এবার আরেকটি এলাকা। ভাঙ্গনে বিধ্বস্ত এক এলাকায় থামলো আমাদের ইঞ্জিন চালিত নৌকা। ছুটে এল একদল নারী পুরুষ। সেখানেও কিছু অর্থ বিতরণ। অবশেষে আরেকটি এলাকায় পাড়ি জমাল আমাদের বহনকারী নৌকা। এখনো ভাঙ্গছে নদী। নৌকা দেখেই সাহায্যের আশায় ছুটে আসে দুর্গত মানুষ। দু’হাত ভরে দিতে মন চাইল। কিন্তু সামর্থ যে কম। নিয়ে যাওয়া শেষ টাকাটাও দেয়া শেষ হল।
কিন্তু মানুষের প্রয়োজন পূর্ণতো আর হল না।
এক রাশ বেদনা নিয়ে ফিরে চললাম ঢাকার দিকে।
 
যারা আমাদের ত্রাণ কার্যক্রমে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। সেইসব দেশ বিদেশের ভাইবোনদের জন্য হৃদয় নিংড়ানো দুআ। আল্লাহ তাআলা আপনাদের এ দানকে কবুল করুন। দুনিয়া ও আখেরাতে সফলকাম করে দিন। এভাবেই অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর বদৌলতে মহান মালিক হাশরের ময়দানের অসহায় হালাতে উত্তীর্ণ হবার তৌফিক দান করুন।
 
দু’টি আহবান!
সামনে কুরবানী ঈদ। ঈদ পরবর্তী আমরা অনেকেই প্রমোদ ভ্রমণে বের হই। ছুটে যাই কক্সবাজারসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকায়। নষ্ট করি অনেক অর্থ।
অনুরোধ আপনাদের প্রতি। এবার ঈদে ঘুরেফিরে পয়সা নষ্ট না করে, টাকাগুলো নিয়ে বন্যা দুর্গত এলাকায় সফর করুন। দৃষ্টিনন্দন স্থানে ঘুরে টাকা অপচয় করে যে আনন্দ পাবেন, এর চেয়ে হাজার গুণ বেশি আনন্দ পাবেন বিপর্যস্তের হাতে আপনার সাধ্যানুপাতে অর্থ পৌছে দিয়ে। পাবেন ঈদের প্রকৃত আনন্দ ইনশাআল্লাহ।
পীড়িত মানুষের ক্ষয়ক্ষতি অনেক। তাই সাধ্যানুপাতে সহযোগিতায় এগিয়ে আসি। নিজেরাই সাহায্য পৌঁছে দেই। কিংবা নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি বা সেবা সংস্থার মাধ্যমে সহযোগিতা পাঠাই।
আমাদের আর যাবার সুযোগ হয়তো হবে না। তাই আমাদের পূর্ব প্রকাশিত কোন অ্যাকাউন্টে আর কোন অর্থ কেউ ত্রাণ তহবিল হিসেবে প্রেরণ করবেন না।
 
বিঃদ্রঃ

সফরের বিস্তারিত ভিডিও দেখুন-

 

 ডাউনলোড লিংক ১

ডাউনলোড লিংক ২

জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।

আরও জানুন

ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত সুদী টাকা কি আত্মীয়দের ঈদ উপহার হিসেবে দেয়া যাবে?

প্রশ্ন নিজের 1-আপন বড় ভাই, 2-ভাবি, 3-ভাতিজা এবং 4- নিজের শোসুর, 5-শাসুরীকে , ব্যাংকের সুদের …

আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস