প্রচ্ছদ / আধুনিক মাসায়েল / গাড়ি কিনতে আশি হাজার টাকা ঋণ দিয়ে এক লাখ টাকা উসুলের জায়েজ কোন পদ্ধতি আছে কি?

গাড়ি কিনতে আশি হাজার টাকা ঋণ দিয়ে এক লাখ টাকা উসুলের জায়েজ কোন পদ্ধতি আছে কি?

প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি একটি গাড়ি কিনবেন, যার মূল্য প্রায় ২৮,০০,০০০/= [আটাশ লাখ টাকা]। আমি চাচ্ছি সেখানে ৮০,০০০/= [আশি হাজার টাকা] দিব এবং তার কাছে বলব আমাকে ১,০০,০০০/= [এক লাখ টাকা] দিবে সর্বমোট। এটা কি বৈধ হবে? বৈধ না হলে, কি রকম বৈধ হতে পারে?
বিঃদ্রঃ আরবি ইবারত উল্লেখ করে দলিল দিলে ভাল হয়।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

নাহ, এভাবে লেনদেন করলে তা বৈধ হবে না। তা ঋণের উপর সুদ হয়ে যাবে। যা সুষ্পষ্ট হারাম।

তবে এর একটি জায়েজ সুরত আছে। যেমন-

প্রথমে উভয়ে মিলে শরীকানা হিসেবে গাড়িটি কিনবে। এটাকে ফিক্বহের পরিভাষায় বলবে শিরকাতুল মিলক। মালিকানায় শরীকানা।

এরপর স্বীয় অংশকে অপরজনের কাছে মুরাবাহা হিসেবে বেশি দামে বিক্রি করে দেবে।

উদাহরণঃ

আপনার মঈন খান। আপনি যাকে গাড়ি ক্রয় বাবদ টাকা দিতে চাচ্ছেন কথার কথা তার নাম আব্দুল্লাহ। গাড়ির মূল্য আটাশ লাখ টাকা। এর মাঝে আপনি দিলেন আশি হাজার টাকা। আর আব্দুল্লাহ দিল সাতাশ লাখ বিশ হাজার টাকা। এ সর্বমোট আটাশ লাখ টাকা দিয়ে শেয়ারে আপনারা গাড়িটি কিনবেন। এর মাঝে গাড়িটির প্রায় এক পার্সেন্ট মালিক আপনি।

ক্রয় করার পর আপনার উক্ত মালিকানার অংশটি আব্দুল্লাহ সাহেবের কাছে এক লাখ টাকায় বাকিতে বিক্রি করে দিবেন।

উপরোক্ত নিয়মে প্রথমে শরীকানায় ক্রয়। তারপর বাকিতে বেশি দামে বিক্রি করে দেয়া। এভাবে করলে আপনাদের লেনদেন শরয়ী কোন বিধিনিষেধের আওতাধীন হবে না।

তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন, দ্বিতীয়বারের বাকিতে বিক্রির বিষয়টি প্রথমেই চুক্তিপত্র করা যাবে না। শুধুই একটি ওয়াদা হিসেবে থাকবে। যদি প্রথমেই চুক্তি করা হয়, তাহলে এভাবে লেনদেনটিও বৈধ হবে না আরেকটি কারণে। সেটি হল, এক চুক্তিতে আরেক চুক্তি অন্তর্ভূক্ত করা বৈধ নয়। তাই প্রথমে শরীকানা হিসেবে ক্রয় করবে। তারপর পূর্বের চুক্তি নয়,ওয়াদা হিসেবে বাকিতে স্বীয় অংশ বেশি দামে বিক্রি করে দিবে। এভাবে করলে ইনশাআল্লাহ জায়েজ হবে।

(قَوْلُهُ: شَرِكَةُ الْمِلْكِ أَنْ يَمْلِكَ اثْنَانِ عَيْنًا إرْثًا أَوْ شِرَاءً)

وفيه ايضا: أَنَّ الشَّرِكَةَ إذَا كَانَتْ بَيْنَهُمَا مِنْ الِابْتِدَاءِ بِأَنْ اشْتَرَيَا حِنْطَةً أَوْ وَرِثَاهَا كَانَتْ كُلُّ حَبَّةٍ مُشْتَرَكَةً بَيْنَهُمَا فَبَيْعُ كُلٍّ مِنْهُمَا نَصِيبَهُ شَائِعًا جَائِزٌ مِنْ الشَّرِيكِ وَالْأَجْنَبِيِّ (البحر الرائق، كتاب الشركة، شركة الملك-5/180)

الْمَادَّةُ (88 0 1) لِأَحَدِ الشَّرِيكَيْنِ إنْ شَاءَ بَيْعُ حِصَّتِهِ إلَى شَرِيكِهِ إنْ شَاءَ بَاعَهَا لِآخَرَ (مجلة الاحكام العدلية، رقم القاعدة-1088

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com

আরও জানুন

কেমোথেরাপি দিলে রোযা ভেঙ্গে যাবে?

প্রশ্ন আসসালামু আলাইকুম মুহতারাম,, ক্যান্সারের কেমো দিলে কি রোজা ভঙ্গ হবে? উত্তর وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস