প্রচ্ছদ / প্রশ্নোত্তর / নিসাবের মালিক হবার সাথে সাথেই যাকাত আদায় আবশ্যক হয়ে যায়?

নিসাবের মালিক হবার সাথে সাথেই যাকাত আদায় আবশ্যক হয়ে যায়?

প্রশ্ন

From: নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
বিষয়ঃ যাকাত ফরজ হওয়ার পরে বিলম্ব হলে কি করণীয়।
প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম,

আমি ২০১৫ সালের নভেম্বর মাস থেকে একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছি এবং স্যালারী একাউন্টে বেতনের ভালো একটি অংশ জমাচ্ছি। যাকাতের ব্যাপারে আমার জ্ঞান ছিল যে প্রতি বছর রমাদান মাসেই শুধু যাকাত আদায় করতে হয়। এই কারণে ২০১৬ সালের জুন-জুলাই মাসে যখন রমাদান আসে তখন ও আমার এক বছর মেয়াদী স্থির সম্পদ হয়নাই যে কারণে আমি যাকাত দেইনি (হয়ত নিসাব পরিমাণ হয়েছিল , কিন্তু এক বছর পুরা হয়নি যেহেতু নভেম্বর মাসের জবের আগে আমার কোন ইঙ্কাম ছিলনা)। এরপর ২০১৬ সালের ই নভেম্বর মাসে হয়ত আমার উপর যাকাত ফরজ হওয়ার মত সঞ্চয় হয়েছিল কিন্তু জ্ঞান না থাকার কারণে আমি যাকাতের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। এখন ২০১৭ সালের রমাদানে আমি যাকাত দেওয়ার জন্য হিসাব নিকাশ শুরু করেছি , তাই আমার প্রশ্ন আমি এখন গতবারের (২০১৬ সালের নভেম্বর পর্যন্ত) যাকাত সহ কিভাবে দিব ? উল্লেখ্য, আমি বর্তমানে আমার একাউন্টের মোট জমানো টাকার উপর ২.৫% হারে যাকাতের চিন্তা ভাবনা করছি । এটাই কি যথেষ্ট হবে গতবারের টা সহ আদায়ের ক্ষেত্রে? আমার অন্য কোন একাউণ্ট বা সঞ্চিত সম্পদ নেই ।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

যাকাত আবশ্যক হয় নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবার পর।

আর সেটি আদায় আবশ্যক হয় চাঁদের হিসেবে এক বছর পূর্ণ হবার পর। রমজান মাস যাকাত আদায়ের মাস নির্দিষ্ট করা ভুল। তবে রমজান যেহেতু বরকতের মাস। হাদীসের আলোকে এ মাসের পূণ্যের কাজের বিনিময় সত্তর গুণ বৃদ্ধি করে দেয়া হয় মর্মে বর্ণিত হওয়ায় অধিক সওয়াব পাবার আশায় অনেকেই এ মাসে যাকাত আদায় করে থাকেন। এ মানসিকতা খারাপ নয়।

আপনার উপরোক্ত বিবরণ অনুপাতে আপনার উপর যাকাত ফরজ হয়েছিল গত ২০১৬ ইং এর জুন বা জুলাই মাসে। সতর্কতামূলক ধরে নেই জুন মাস।

আর তখন আরবী মাস ছিল শাবান বা রমজান মাস ১৪৩৭ হিজরী।

সেই হিসেবে আপনার যাকাত আদায় আবশ্যক হয়েছে এ বছর ১৪৩৮ হিজরীর শাবান/রমজান মাসে।

সুতরাং এখন আপনার হাতে যে পরিমাণ অর্থ আছে আবশ্যকীয় প্রয়োজন অতিরিক্ত যে টাকা জমা আছে, তা নিসাব পরিমাণ হয়ে থাকলে এর ৪০ভাগের এক ভাগ যাকাত হিসেবে আদায় করে দিবেন।

অর্থাৎ লাখে আড়াই হাজার টাকা।

যেহেতু ২০১৬ সালে আপনার কাছে নিসাব পরিমাণ টাকা এসেছিল, কিন্তু বছর অতিক্রান্ত হয়নি। তাই গত বছরের যাকাত আদায় করা আপনার উপর আবশ্যক হয়নি। এ বছর যাকাত আদায় করতে হবে।

সুতরাং উপরোক্ত বিবরণ অনুপাতে আপনার যাকাত আদায়ে বিলম্ব হয়েছে বলে সাব্যস্ত হয়নি। তাই চিন্তার কিছু নেই। এ বছর হিসেব করে যাকাত আদায় করে দিলেই হবে।

(وَسَبَبُهُ) أَيْ سَبَبُ افْتِرَاضِهَا (مِلْكُ نِصَابٍ حَوْلِيٍّ) (رد المحتار، كتاب الزكاة-3/174، زكريا)

فى البحر الرائق- ( قوله يجب في مائتي درهم وعشرين مثقالا ربع العشر ) ، وهو خمسة دراهم في المائتين ، ونصف مثقال في العشرين ، والعشر بالضم أحد الأجزاء العشرة وإنما وجب ربع العشر لحديث مسلم (البحر الرائق، كتاب الزكاة، باب زكاة المال- 2/393، المحيط البرهانى-2/156، رد المحتار كراجى، باب زكاة المال-2/295، بدائع-2/106، الفتاوى الهندية-1/179، تاتارخانية-3/155)

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com

আরও জানুন

কেমোথেরাপি দিলে রোযা ভেঙ্গে যাবে?

প্রশ্ন আসসালামু আলাইকুম মুহতারাম,, ক্যান্সারের কেমো দিলে কি রোজা ভঙ্গ হবে? উত্তর وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস