প্রচ্ছদ / পর্দা/দুগ্ধপান/হুরমত / নারীদের ব্যবসা বাণিজ্য এবং মাহরাম রেখে দূরে বসবাস ও সহশিক্ষা

নারীদের ব্যবসা বাণিজ্য এবং মাহরাম রেখে দূরে বসবাস ও সহশিক্ষা

প্রশ্ন

নামঃ সাবেত বিন মুক্তার

দেশঃ বাংলাদেশ

প্রশ্নঃ আসসালামু আলাইকুম।

১) নারীদের ঘরের বাহিরে কাজ করার ব্যাপারে ইসলামের নির্দেশনা কি? পর্দার সাথে কোন কোন কর্মক্ষেত্রে নারীদের কাজ করার জন্য ইসলাম অনুমোদন দিয়েছে? অনেক মুসলিম নারীই খাদিজা(রাঃ) এর ব্যবসাকে দলীল হিসেবে উল্লেখ করেন। এর ব্যাখ্যা কি?

২) সহশিক্ষা ছাড়া এখন দুনিয়াবি জ্ঞান অর্জনের বিকল্প কোন রাস্তা নেই। কিন্তু একজন পুরুষকে ভবিষ্যতে তার পরিবার চালানোর জন্য, ইনকাম করার জন্য এইসব কলেজ ভার্সিটিতে পড়তেই হবে। কিন্তু নারী তো উপার্জনের জন্য আর বাধ্য নয়। স্বামী তার উপার্জনের মাধ্যমে স্ত্রীর ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। এখন নারীর জন্য সহশিক্ষায় গিয়ে শিক্ষিত হওয়ার ব্যাপারে ইসলামের বিধান কি?

৩) মাহরাম ছাড়া নারীদের সফর হারাম করেছেন রাসুলুল্লাহ(সঃ)। এখন শিক্ষার জন্য অনেকেই বাড়ি থেকে অনেক দূরে হোস্টেলে থাকে। এই থাকা কি তার জন্য হারাম হচ্ছে?

তিনটি প্রশ্নই পরিপূরক। তাই একসাথেই করে ফেললাম। আশা করি জানাবেন। জাযাকাল্লাহ।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

নারীদের জন্য পর্দার সাথে ও শরয়ী বিধান অনুসরণ করে ব্যবসা বাণিজ্য করা জায়েজ। কোন সমস্যা নেই।

পর্দার বিধান লঙ্ঘণ করে সহশিক্ষায় পড়া নারীদের জন্য বৈধ নয়। প্রয়োজনে নারীদের জন্য আলাদা কলেজ ও ভার্সিটিতে পড়াশোনা করতে পারে।

আর নারীদের জন্য মাহরাম ছাড়া সফরের দূরত্বে সফর করা বা থাকা কোনটিই বৈধ নয়।


عن أبي سعيد الخدري قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم لا يحل لإمرأة تؤمن بالله واليوم الآخر أن تسافر سفرا يكون ثلاثة أيام فصاعدا إلا ومعها أبوها أو ابنها أو زوجها أو أخوها أو ذو محرم منها

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ আল্লাহ তাআলা এবং কিয়ামত দিবসের উপর ঈমান রাখে এমন কোন মহিলার জন্য জায়েজ নয়, তিন দিন বা এর চেয়ে অধিক দিনের সফর করে অথচ তার সাথে তার পিতা, তার ছেলে, বা তার স্বামী বা তার ভাই কিংবা কোন মাহরাম না থাকে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪২৩}

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্ল াহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল- ahlehaqmedia2014@gmail.com

আরও জানুন

অগ্রীম বাসা ভাড়ার উপর বছর অতিক্রান্ত হলে যাকাত কে দিবে?

প্রশ্নঃ মুহতারাম, অমি প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা দেওয়ার শর্তে বাড়ি ভাড়া নেই। ভাড়া নেওয়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস