প্রচ্ছদ / আহলে হাদীস / দরূদ বিষয়ে সালাফী আলেম বিলাল ফিলিপস সাহেবের একটি ভ্রান্ত ফাতওয়ার পোষ্টমর্টেম

দরূদ বিষয়ে সালাফী আলেম বিলাল ফিলিপস সাহেবের একটি ভ্রান্ত ফাতওয়ার পোষ্টমর্টেম

প্রশ্ন

আস সালামুলাইকুম মুফতী সাহেব

আমি একজন সালাফি আলিম জনাব আবু আমীনাহ বিলাল ফিলিপ্স এর লেকচারে শুনতে পারলাম যে আমরা যেভাবে নামাযে তাশাহুদ পড়ি তা নাকি শিরক । আমরা যেভাবে বলি আস সালামুলাইকা ইয়া আইয়ুহান নাবিয়্যু (হে নবি আপনার প্রতি সালাম) এতে নাকি আমরা রাসুল এর ইবাদাত করছি। সারা জীবন নামায পড়ার পর এখন যদি জানতে পারি আমরা ইবাদাত এর বদলে শিরক করেছি, তাই খুব পেরেশানির মধ্যে আছি । এই ব্যাপারে কোরান সুন্নাহ এর আলোকে জানালে খুব উপকার হয়।

বিনীত

মুহাম্মদ মহিউদ্দিন চিশতী।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

ভিডিওটি দেখে নিন [৭.৫২]

লেকচারটিতে জনাব আবু আমীনাহ বিলাল ফিলিপ্স সাহেব তাওহীদের উপর  চমৎকার আলোচনা করেছেন। দূর থেকে রাসূল সাঃ কে ইয়া রাসূলাল্লাহ বলে সম্বোধন করা শিরক মর্মে বক্তব্য দিয়েছেন। এতে আমাদের কোন দ্বিমত নেই। 

কিন্তু তিনি নিজের ইচ্ছেমত ব্যখ্যা করতে গিয়ে তার উপরোক্ত ভিডিও লেকচারের ৭ মিনিট ৫২ সেকেন্ড থেকে রাসূল সাঃ থেকে বর্ণিত, অসংখ্য সাহাবায়ে কেরাম থেকে বর্ণিত এবং নবীযুগ থেকে আমলীভাবে চলে আসা তাশাহুদ পড়ার মুতাওয়তির একটি পদ্ধতির ব্যাপারে তিনি যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তা পরিস্কার ধৃষ্টতা।

এ কারণেই আমরা গায়রে মুকাল্লিদিয়্যাত মতবাদকে বিপদজনক এবং ভয়াবহ ফিতনা বলে থাকি। কারণ কোন বিজ্ঞ মুজতাহিদ ব্যক্তির অনুসরণ ছাড়া দ্বীন বুঝার  এ স্বাধীনচেতা মনোভাবের কারণে নিজের মনে যা আসে, যা বুঝে আসে সেটাকেই দ্বীন মনে করার একটি ভয়ংকর প্রবণতা তৈরী হয়। যা পদস্খলনের যথেষ্ট।

সতর্কবাণী

দ্বীনী বিষয় খুবই উঁচু মার্গের। তাই যার তার কাছ থেকে দ্বীনী বিষয় গ্রহণ কিছুতেই উচিত নয়। ভিডিও মুফতী। টিভি মুফতী ইত্যাদি থেকে দ্বীন শিখতে গেলে তা আর দ্বীন থাকবে না। হয়ে যাবে জগাখিচুরী। এ কারণেই হযরত মুহাম্মদ বিন সীরীন রহঃ বলেছেন-

عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، قَالَ: «إِنَّ هَذَا الْعِلْمَ دِينٌ، فَانْظُرُوا عَمَّنْ تَأْخُذُونَ دِينَكُمْ»

হযরত মুহাম্মদ বিন সীরীন রহঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয় এটি দ্বীনী ইলম। তাই তুমি নির্দিষ্ট করে নাও, তোমার দ্বীন কার কাছ থেকে গ্রহণ করবে? {মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস নং-২৭৩, সুনানে দারেমী, হাদীস নং- ৪৩৩, মুসন্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৬৬৩৬, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-২৯২৭৪, মুকাদ্দিমায়ে সহীহ মুসলিম}

দ্বীনী বিষয় গ্রহণ করার আগে দেখে নিতে হবে লোকটি কে? কি তার পরিচয়? তার কী পড়াশোনা আছে? সে কি দ্বীনী বিষয় বলার যোগ্যতা রাখে?

আফসোস! আমরা শারীরিক অসুস্থ্যতার জন্য ডাক্তারের কাছে গেলে দেখে নেই, যার কাছে গেলাম সে ডাক্তার কি না? তার ডিগ্রি আছে কি না? সে এমবিবিএস কি না? তিনি এফসিপিএস কি না? তিনি ডাক্তারী বিষয়ে পিএইচডি করেছেন কি না? ডাক্তারী বিষয় শিখার পর তিনি বিজ্ঞ কোন ডাক্তারের কাছে থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন কি না? উক্ত ডাক্তারের বিষয়ে মানুষ কি বলে? অন্যান্য ডাক্তাররা উক্ত ডাক্তারকে ডাক্তার হিসেবে স্বীকৃতি দেয় কি না?

এই সব কিছুই আমরা দুনিয়াবী, শারীরিক অসুস্থ্যতার চিকিৎসা-সমাধানের জন্য জেনে নেই। তারপর ঐ ডাক্তারের প্রেশক্রিপশন গ্রহণ করি। কিন্তু বড়ই আফসোসের বিষয় হল, দ্বীনী বিষয়ের মত এত স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমরা এসব যাচাইয়ের কোন প্রয়োজন অনুভব করি না। যাকে তাকে শায়েখ বানিয়ে দেই। লাল নীল জামা পড়ে, প্যান্ট টাই পড়ে, ভিডিও সামনে বসে, টিভি সেটের সামনে বসে যাচ্ছে তাই বলে যাচ্ছে, আমরা এসবই দ্বীন মনে করে গোগ্রাসে গিলে নিচ্ছি। দ্বীন মনে করে আত্মতৃপ্ত হচ্ছি।

একবারও জানার চেষ্টা করি না। লোকটি আলেম কি না? লোকটিকে বিজ্ঞ আলেম হিসেবে বিজ্ঞ উলামাগণ স্বীকৃতি দেন কি না? লোকটি দ্বীন সম্পর্কে সত্যিই অভিজ্ঞ কি না? এরকম গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা বলার মত যোগ্যতা লোকটি মাঝে আছে কি না?

দুনিয়াবী বিষয়ের ডাক্তারের সব খোঁজ নিলেও দ্বীনী ডাক্তার তথা সমাধানদাতার ব্যাপারে খোঁজ খবর না নিয়েই আমরা লুফে নেই লোকটির জাহালতপূর্ণ গবেষণা।

দ্বীনী বিষয় যার তার কাছ থেকে নেয়া উচিত নয়। অনভিজ্ঞ ও অস্বীকৃত কোন ব্যক্তির দ্বীনী বিষয়ের ফাতওয়ার উপর নির্ভর করা মানে হল নিজের পায়ে নিজেই কুঠারাঘাতের মত অপরিণামদর্শী আচরণ। তাই আপনার উক্ত কথিত শায়েখের বক্তৃতা শুনাই ঠিক হয়নি। কার বক্তব্য শুনবেন? এসব বিষয় আপনার নিকটস্থ হক্কানী আলেম উলামা থেকে জেনে শুনুন। নতুবা বিভ্রান্ত হওয়া স্বাভাবিক।

আল্লাহ তাআলা এসব ফিতনা থেকে মুসলিম জাতিকে হিফাযত করুন।

প্রশ্নটির জবাব

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে রাসূল সাঃ কে নিরংকুশ অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হচ্ছে-

قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللَّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ ۗ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ [٣:٣١

বলুন,যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস,তাহলে আমাকে অনুসরণ কর,যাতে আল্লাহ ও তোমাদিগকে ভালবাসেন এবং তোমাদিগকে তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু। {সূলা আলে ইমরান-৩১}

আল্লাহ তাআলা আরো ইরশাদ করেন-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ

হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর অনুসরণ কর এবং রাসূলের অনুসরণ কর এবং তোমাদের মাঝে বিজ্ঞ ব্যক্তিদের অনুসরণ কর। {সূরা নিসা-৫৯}

একদিকে রাসূল সাঃ যা বলেন, যা করেন, তার অনুসরণের নির্দেশ যেমন আল্লাহ তাআলা দিয়েছেন, সেই সাথে রাসূল সাঃ এর মুখ নিঃসৃত বাণীকে আল্লাহর নির্দেশিত বলে ঘোষণা দিয়ে ইরশাদ করেন-

وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوَى (3) إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْيٌ يُوحَى (4

তিনি [রাসূল সাঃ] নিজের পক্ষ কিছুই বলেন না, বরং তিনি তাই বলেন, যা তার কাছে ওহী হিসেবে অবতীর্ণ হয়। {সূরা নাজম-৩-৪}

উপরোক্ত আয়াতে কারীমা ছাড়াও অসংখ্য আয়াত দ্বারা আল্লাহ তাআলা রাসূল সাঃ কে অনুসরণ করতে বলেছেন। সেই সাথে রাসূল সাঃ যা নির্দেশ তা সবই আল্লাহর পক্ষ থেকেই হয়ে থাকে, আল্লাহর নির্দেশেই হয়ে থাকে সেটিও আল্লাহ তাআলা স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন পবিত্র কুরআনে।

সুতরাং নবীজী সাঃ যা করতে বলেছেন তা সবই আল্লাহ নির্দেশিত। আর শিরকের সম্পর্ক আল্লাহর সাথে। আল্লাহর সাথে শিরক করতে আল্লাহ তাআলা নিষেধ করেছেন। আর যে কথা আল্লাহর নির্দেশনায় রাসূল সাঃ শিখিয়েছেন, সেই কথার মাঝে শিরক খোঁজা, বা সেই কথাকে শিরক বলা আহমকী ও দ্বীন সম্পর্কে চূড়ান্ত অজ্ঞতা ছাড়া আর কী হতে পারে?

এবার দেখে নেই আমরা যে দরূদটি পড়ছি সেটি আমরা কোত্থেকে পেলাম?

তাশাহুদে আসসালামু আলাইকা আইয়্যুহান্নাবিয়্যুবলতে রাসূল সাঃ এর নির্দেশ

قَالَ عَبْدُ اللَّهِ: كُنَّا إِذَا صَلَّيْنَا خَلْفَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قُلْنَا: السَّلاَمُ عَلَى جِبْرِيلَ وَمِيكَائِيلَ السَّلاَمُ عَلَى فُلاَنٍ وَفُلاَنٍ، فَالْتَفَتَ إِلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: ” إِنَّ اللَّهَ هُوَ السَّلاَمُ، فَإِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ، فَلْيَقُلْ: التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ، فَإِنَّكُمْ إِذَا قُلْتُمُوهَا أَصَابَتْ كُلَّ عَبْدٍ لِلَّهِ صَالِحٍ فِي السَّمَاءِ وَالأَرْضِ، أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ “

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রাঃ বলেনঃ আমরা যখন নবীজী সাঃ এর পিছনে সালাত আদায় করতাম, তখন আমরা বলতাম আসসালামু আলা জিবরীল ওয়া মিকাঈল এবং আসসালামু আলা ফুলান ওয়া ফুলান। তখন রাসূল সাঃ আমাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, আল্লাহ তাআলা নিজেইতো সালাম। তাই যখন তোমরা কেউ সালাত আদায় করবে, তখন সে যেন বলে, আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াসসালাওয়াতু ওয়াত তায়্যিবাতু আসসালামু আলাইকা আইয়্যুহান নাবিয়্যু ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু, আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালেহীন। কেননা, যখন তোমরা এ বলবে তখন আসমান ও জমীনের আল্লাহর সকল নেক বান্দার কাছে পৌঁছে যাবে। এর সঙ্গে আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়ারাসূলুহু। {বুখারী, হাদীস নং-৮৩১, ৭৯৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪০২}

যেহেতু সহীহ হাদীসে উক্ত শব্দে দরূদের কথা এসেছে, যা রাসূল সাঃ আমাদের পড়তে আদেশ দিয়েছেন। আর যেহেতু আল্লাহর নির্দেশেই রাসূল সাঃ দ্বীনী বিষয় বলে থাকেন, তাই উক্ত কথিত বক্তার কথা মেনে নিলে আসসালামু আলাইকা আইয়্যুহান নাবিয়্যুবলার দ্বারা যে শিরক হচ্ছে সেই [কথিত] শিরকের নির্দেশ আল্লাহ দিয়েছেন আর সেই [কথিত] শিরক করতে আল্লাহর নবী আদেশ দিয়েছেন।

যে শিরক আল্লাহ করতে বলেন, যে শিরকের শিক্ষা নবীজী সাঃ আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, সেই শিরক করতে আমাদের কোন আপত্তি নেই। আল্লাহর ও রাসূলের নির্দেশ মানার নাম কোন মুসলিমের কাছে শিরক নয়। শিরক যদি হয়ে তাহলে সেটি হতে পারে কোন বিধর্মীর কাছে। আমাদের কাছে আল্লাহ ও রাসূল সাঃ এর নির্দেশ মানার নাম শিরক মুক্ত থাকা। নির্দেশ অমান্য করার নাম ধর্মদ্রোহীতা। 

তাই আমরা আল্লাহর নবীর নির্দেশ মেনে [কথিত] শিরকী কাজটি করতে রাজি। যেহেতু পরিস্কার ভাষায় তা করতে আল্লাহর নবী নির্দেশ দিয়েছেন। সাহাবাগণকে শিক্ষা দিয়েছেন।

 

তাশাহুদে আসসালামু আলাইকা আইয়্যুহান্নাবিয়্যুবলতে সাহাবায়ে কেরাম রাঃ এর নির্দেশ

হযরত উমর রাঃ এভাবে দরূদ পড়তে নির্দেশ দিতেন। {ম্য়ুাত্তা মালিক, হাদীস নং-৩০০}

হযরত আয়শা রাঃ এভাবে দরূদ পড়তে নির্দেশ দিতেন। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৩০২}

হযরত ইবনে মাসঈদ রাঃ এভাবে দরূদ পড়তে নির্দেশ দিতেন। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৩৫৬২}

হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকেও এভাবে দরূদ প্রমাণিত। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪০৩}

হযরত আবু মূসা আশআরী রাঃ থেকেও এভাবে দরূদ প্রমাণিত। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪০৪}

হযরত জাবের রাঃ থেকেও এভাবে দরূদ পড়া প্রমাণিত। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৯৮৯}

হযরত আবূ বকর রাঃ লোকদের এভাবে দরূদ পড়তে নির্দেশ দিতেন। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৯৯০}

হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাঃ লোকদের এভাবে দরূদ পড়তে শিক্ষা দিতেন। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৯৯১}

হযরত আলকামা রাঃ লোকদের এভাবে দরূদ পড়তে শিক্ষা দিতেন। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৯৯৫}

হযরত ইবনে উমর রাঃ এভাবে দরূদ পড়তেন। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৯৯৭}

তবেয়ীগণও এভাবে দরূদ পড়তেন। যেমন হযরত ইবরাহীম নাখয়ী রহঃ এভাবে দরূদ পড়তে শিখাতেন। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৯৯৬}

সুতরাং এ জানা গেল যে, এভাবে দরূদ পড়তে রাসূল সাঃ নির্দেশ দিয়েছেন। এভাবে দরূদ সাহাবায়ে কেরাম রাঃ পড়তেন এবং লোকদের পড়তে নির্দেশ দিতেন। সেই সাথে তাবেয়ীগণও এভাবে দরূদ পড়তেন। আর নবীজী সাঃ এর জমানা থেকে আজ পর্যন্ত গোটা পৃথিবীর মুসলিমরা নামাযে এভাবেই দরূদ পড়ে আসছে।

যদি এভাবে দরূদ পড়া শিরক হয়ে থাকে, তাহলে বলতে হবে সেই শিরকের শিক্ষাদাতা রাসূল সাঃ। সেই শিরকের উপর আমলকারী সাহাবায়ে কেরাম রাঃ থেকে নিয়ে তাবেয়ী, তাবেয়ীগণ থেকে নিয়ে সমস্ত উম্মাতে মুসলিমা।

নবীজী সাঃ থেকে নিয়ে সাহাবাগণ ও সমস্ত উম্মতে মুসলিমা যেটিকে আমলযোগ্য সাব্যস্ত করেছেন। সেটিকে শিরক বলা শিরক সম্পর্কে অজ্ঞতা ছাড়া কিছু নয়।

একটি প্রশ্ন

যদি এভাবে তাশাহুদে এভাবে দরূদ পড়া শিরক হয়ে থাকে, তাহলে উক্ত কথিত শায়েখের কাছে আমাদের প্রশ্ন, রাসূল সাঃ, সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীগণ এবং আজ পর্যন্ত সমস্ত উম্মতে মুসলিমা যে এভাবে তাশাহুদে দরূদ পড়ে আসছেন তাদের সকলের হুকুম কি? তারা সবাই কি শিরক করেছেন?

আল্লাহ তাআলা আমাদের এসব অজ্ঞ গবেষকদের অজ্ঞতাসূলভ গবেষণা থেকে মুসলিম উম্মাহকে হিফাযত করুন। আমীন।


والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- ahlehaqmedia2014@gmail.com

lutforfarazi@yahoo.com

আরও জানুন

আট ভরি স্বর্নের উপর কতটুকু যাকাত আবশ্যক?

প্রশ্ন আচ্ছালামুয়ালাইকুম। মুহতারাম আমার একটা প্রশ্ন স্বর্ণের কত ভরি হলে যাকাত দিতে হবে। আর আমার …

No comments

  1. মোহাম্মদ শোয়াইব

    বিলাল ফিলিপ সাহেবের বক্তব্যের লিংক টা দেওয়া উচিত ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস